নিয়ন্ত্রিত বোলিং, 'ডিপেন্ডেবল' মুশফিকে ফাইনালে বরিশাল
বিপিএল ২০২৪
কোয়ালিফায়ার ২ (টস - বরিশাল/বোলিং)
রংপুর রাইডার্স - ১৪৯/৭, ২০ ওভার (শামীম ৫৯*, নিশাম ২৮, সোহান ১৪, ফুলার ৩/২৫, সাইফউদ্দিন ২/২৭, মিরাজ ১/৯)
ফরচুন বরিশাল - ১৫২/৪, ১৮.৩ ওভার (মুশফিক ৪৭*, মেয়ার্স ২৮, মিলার ২২*, রনি ২/৩৭, ফারুকী ১/১৬, নবী ১/২০)
ফলাফল - বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী
পুরো আসর জুড়ে যেই রংপুরের দৌরাত্ম্য ছিল, সেই রংপুরের আর ফাইনালে যাওয়া হল না। দেশি অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নিয়ে সাজানো বরিশাল হাসল শেষ হাসি। খাদের কিনারায় চলে যাওয়া বরিশালের হয়ে অভিজ্ঞরা যেভাবে নিজেদের মেলে ধরেছিলেন, তারই পরিক্রমায় আজ জ্বলে উঠলেন মুশফিক; এর আগে জ্বলে উঠেছিল বোলিং ইউনিট। বরিশালের সামনে আজ তাই যেন একেবারেই অচেনা রংপুর।
রংপুরের বেঁধে দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্যে বরিশালের শুরুটাও অবশ্য আশানুরূপ হয়নি একেবারেই। আসরে দুর্দান্ত খেলা আবু হায়দার রনি শুরুতেই ফিরিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও ওপেন করতে নামা মেহেদী হাসান মিরাজকে। ৪র্থ ওভারে এক রানের মধ্যেই দুজনকে ফেরালেও এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে ইনিংস সামলে ফেলেন মুশফিকুর রহিম। নিয়মিত আঘা হেনে বরিশালের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করলেও সফলতার মুখ দেখেনি রংপুর। সৌম্য, কাইল মেয়ার্সরা ইনিংস বড় করতে পারেননি বটে; তবে লক্ষ্য আহামরি না হওয়ায় তেড়েফুঁড়ে খেলার কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না।
দশম ওভারে নবীকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ২২ রানে সৌম্য ফিরলেও তাই বরিশাল শিবিরে দেখা যায়নি কোনও চিন্তার রেখা। দারুণ ফর্মে থাকা মেয়ার্স এসে তিন ছয়ে নিজের স্বভাবজাত ১৫ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে রান তাড়ার কাজটা আরও সহজ করে দিয়ে গিয়েছিলেন। ফারুকী-নবী জুটি চেপে ধরার চেষ্টা করলেও রনিকে বেঁছে নিয়ে মেয়ার্সের ওই ক্ষণিকের আক্রমণটাও পথে রেখেছিল বরিশালকে। বাকি পথটুকু পাড়ি দিতে দুই অভিজ্ঞ মুশফিক, মিলারের তাই একেবারেই কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। ৩৮ বলে ৪৭* রানে থেকে মুশফিক ও ১৮ বলে ২২* রানে থেকে মিলার অনায়াসেই ম্যাচ বের করে এনেছেন।
বরিশালের মত শুরুতেই বিপদে পড়েছিল রংপুরও। টস জিতে তামিম বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে দারুণ এক ওপেনিং স্পেলে সাইফউদ্দিন। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেন করতে নামা মাহেদী হাসানকে ফেরানোর পর সাকিবকেও উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান এই পেসার। পঞ্চম ওভারেই এরপর রনি তালুকদারও ফিরলে মুখ থুবড়ে পড়ে রংপুরের ইনিংস। আগের দিনের মত নিশাম আরেকবার হাল ধরার চেষ্টা করলেও দুই বলের মধ্যেই পুরানের পর তিনি ফিরলে রংপুর পড়ে ঘোর বিপদে। ১৫তম ওভারে গিয়ে ইংলিশ পেসার জেমস ফুলারের জোড়া আঘাতে ৭৭ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে বসে রাইডাররা। ফুলারের দাপটে শতরানও ছুঁতে পারবে কি না রংপুর - সেটা নিয়েই জেগেছিল শঙ্কা। তবে ফুলারদের সামলে আরেক পেসার ওবেড ম্যাকয়কে লক্ষ্য বানিয়ে এরপর শামীম হোসেন পাটওয়ারি খেললেন অসামান্য এক ইনিংস। ম্যাকয়ের করা ১৯তম ওভার থেকে ৩ ছয়, ২ চারে শামীম নেন ২৬ রান! মাত্র ২০ বলে ফিফটি পূর্ণ করে শেষমেশ ২৪ বলে ৫৯* রানে মাঠ ছেড়ে রংপুরকে তিনি এনে দিয়েছিলেন লড়াইয়ের রসদ। তবে তালিকার শীর্ষে থেকে লিগ শেষ করা রংপুরকে শেষমেশ বরণ করতে হয়েছে পরাজয়।