• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    বার্নাব্যুতে 'ব্যাঙ্গার'-এর পসরায় মাদ্রিদ-সিটির শেয়ানে শেয়ানে লড়াই

    বার্নাব্যুতে 'ব্যাঙ্গার'-এর পসরায় মাদ্রিদ-সিটির শেয়ানে শেয়ানে লড়াই    

    ফুলটাইম স্কোর: রিয়াল মাদ্রিদ ৩-৩ ম্যানচেস্টার সিটি


     বার্নাব্যুতে যেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা এক ম্যাচের দেখা মিলল। আক্রমণ-পালটা আক্রমণ, দুদলের হার না মানা মানসিকতা তো আছেই; সেই সাথে একেকটা গোল যেন ছাপিয়ে গেল আরেকটাকে! অসামান্য সব গোলের পসরায় অবশ্য আলাদা করা গেল না কাউকেই। ইতিহাদে দ্বিতীয় লেগেই তাই ফয়সালা হতে যাচ্ছে এই ড্রয়ের।

    ম্যাচের মাত্র দুই মিনিটেই কাস্তেবাকা এক ফ্রি-কিকে ম্যানচেস্টার সিটিকে এগিয়ে দেন বার্নার্ডো সিলভা। সেখান থেকে ম্যাচে বলের দখল নিয়ে স্বাগতিকদের নাভিশ্বাস ছুটিয়ে ছেড়েছিল পেপের শিষ্যরা। অথচ স্রোতের বিপরীতে ২০ গজ দূর থেকে জোরালো এক শটে জালের দেখা পেয়ে যান কামাভিঙ্গা; অবশ্য দিক পরিবর্তন করায় সেটাকে পরবর্তীতে আত্মঘাতী গোল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। গোলের রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই সিটি শিবিরকে একদম স্তব্ধ করে দেন রদ্রিগো। প্রতি আক্রমণ থেকে বল নিয়ে তেড়েফুঁড়ে উঠে গিয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে জায়গা বানিয়ে ভেতরে ঢুকে বল জালে জড়ান এই ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ড। ধাক্কা সামলে অবশ্য আবারও বলের দখল বুঝে নেয় সিটিজেনরা।

    তবে ততক্ষণে নিজেদের খেলার ধরনটাও ঠাহর করা হয়ে গিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। প্রতি আক্রমণে মনোযোগী হয়ে প্রায়ই সিটি রক্ষণভাগের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল তারা। ৩৪ মিনিটের মাথায় তেমনি এক প্রতি আক্রমণ থেকে ভিনিসিয়াস-রদ্রিগোর দারুণ বোঝাপড়ার পর বক্সের কোণা থেকে চেষ্টা করলেও জাল খুঁজে পাননি রদ্রিগো। সেখান থেকে সিটি বলের দখল ধরে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধের আগে মুহুর্মুহু প্রতি আক্রমণে ত্রাস সঞ্চার করে গিয়েছে মাদ্রিদ।

    দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি প্রবাহ সেই একই। শুরুতেই কর্তৃত্ব বিস্তার করে এবার সুযোগও তৈরি করে ফেলেছিল সিটি। তবে বক্সের কোণায় সুযোগ পেয়েও গ্রিলিশ উড়িয়ে মারেন। এরপরে আবারও সেই একগুঁয়ে মাদ্রিদ রক্ষণভাগের দেখাই মিলে। মাদ্রিদের এই রক্ষণ ভাঙতে সিটিকে করতে হত বিশেষ কিছু। সেটাই করে দেখালেন ফিল ফোডেন। ডান প্রান্ত থেকে পাস পাওয়ার সাথে সাথে শরীর বাকিয়ে দূরপাল্লার শটে খুঁজে নিলেন জালের উপরভাগ! ফোডেনের অসামান্য সেই গোলে মাদ্রিদের খেলায় যে প্রভাব পড়েছিল সেটা বোঝা যাচ্ছিল।

    সেই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই মাদ্রিদ শিবির স্তব্ধ করে সিটিজেনদের হয়ে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যান গভার্দিওল। বাঁ প্রান্ত থেকে পাস পেয়ে রিসিভটা খুব একটা ভালো করতে পারেননি এই ক্রোয়াট; তবে সেটা মোচন করতেই যেন মাদ্রিদের রাখা ফাঁকা জায়গার সুযোগ বুঝে বক্সের বাইরে থেকেই রকেটের বেগে এক শটে খুঁজে পান জাল। মুহূর্তেই সিটিও এগিয়ে যায় ম্যাচে।

    তবে এই রাতটা যেন পণ করে বসেছিল একের পর এক ব্যাঙ্গার উপহার দেওয়ার। সেখানে স্বাগতিক মাদ্রিদ তো এমনিতেই নাছোড়বান্দা। সিটি এগিয়ে যাওয়ার সাত মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে লম্বা এক ক্রস খুঁজে নেয় বক্সের ভেতরে ডান প্রান্তে ওঁত পেতে থাকা ফেদে ভালভের্দেকে। দুর্দান্ত এক সরাসরি ভলিতে সেই ক্রস থেকে বল জালে জড়িয়ে এই উরুগুইয়ান জানান দেন, এই টাই শেষ হয়নি। ম্যাচের শেষদিকে চোট পেয়ে ফোডেন উঠে গেলে সিটি অবশ্য আর জবাব দিতে পারেনি। মনে রাখার মত এক রাতে তাই আলাদা করা যায়নি দু দলকে।