আইপিএল ২০২৪: নতুনদের মধ্যে নজর কাড়ছে যারা
আইপিএলের এবারের আসরে রান সংগ্রহ ও উইকেট শিকারিদের তালিকায় ঘুরেফিরে এসেছে বেশ কিছু পুরনো নাম। তবে নতুনদের যে এবার খুব একটা সাড়া নেই সেরকমটা ভাবলে বড্ড ভুল হবে। বরং বেশ কিছু ম্যাচের ভাগ্য এই নতুনদের হাতেই লেখা হয়েছে। ভারতও এবারের আসর থেকে পেয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু দেখার মত খেলোয়াড়। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে অবশ্য নতুনরা এখন পর্যন্ত সেই অর্থে ম্যাচের মোড় বদলানো কিছু করতে না পারলেও সম্ভাবনার ঝলক দেখিয়েছে। সেরকম কিছু খেলোয়াড়ের ওপরেই আজ আলকপাত করা যাক।
অংক্রিশ রাঘুবংশি
ভারতের এই ব্যাটার যে খুব আহামরি কিছু করে ফেলেছেন তেমন না। ৫ ম্যাচ খেলে রান করেছেন ১১৫। তবে তার ১৬৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটটাই বলে দিচ্ছে তার সম্ভাবনার কথা। হাতে রয়েছে শট, পরিস্থিতি যাই হোক - আক্রমণই থাকে তার মূল পন্থা। কলকাতা যেই ম্যাচে হায়দরাবাদের রেকর্ড হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল সেই ম্যাচে তার ফিফটিটাও গড়ে দিয়েছিল আক্রমণের ভিত। ব্যাটে নিয়মিত রান না এলেও তার বিস্ফোরক ব্যাটিং তাই ইতিমধ্যেই বোলারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মায়াঙ্ক যাদব
আইপিএলের ইতিহাসেরই সবচেয়ে গতিময় বোলারদের তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন অভিষেক ম্যাচেই; পরের ম্যাচে নিজেকে নিজেই ছাপিয়ে গড়েছেন রেকর্ড। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে সেই ম্যাচ রান গুনেছেন মোটে ১৪, সেই সাথে ছিল গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট। সম্ভাবনাময় এই গতি তারকাকে সামলে রাখতেই সব ম্যাচে তাকে খেলাচ্ছে না লক্ষ্ণৌ। তবে যেদিন তিনি মাঠে নামবেন সেদিন যে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের গলদঘর্ম অবস্থা অবস্থা হবে সেটা বলাই বাহুল্য! ১৫৬ কিমি./ঘণ্টার বল খেলা তো আর চাট্টিখানি কথা না!
শশাঙ্ক সিং
নিলামে নাকি তাকে কিনতেই চায়নি পাঞ্জাব। অন্য একজন শশাঙ্ককে কিনতে গিয়ে ভুলে শশাঙ্ক সিংকে কেনা হয়েছিল বলেই খবর চাউর হয়ে গিয়েছিল; যদিও পাঞ্জাব পরে দাবি করেছে এমন কিছু হয়নি। তো সে যাই হোক, শশাঙ্ক সেসব বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে ২৯ বলে ৬১* রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে ম্যাচ জিতিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন কেন তাকে কিনে কোনোভাবেই পস্তায়নি পাঞ্জাব। পরের ম্যাচেও আশুতোষ শর্মাকে নিয়ে হায়দরাবাদের বিপক্ষে আরেকটি অভাবনীয় রান তাড়ার পথে দলকে নিয়ে যেয়েও দুই রান দূরে থেকে ফিরতে হয়েছিল পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে। তবে এটুকু বলাই যায়, শশাঙ্ককে এরকম রূপে এবারের আসরে হয়ত দেখা যাবে আরও কয়েকবার।
জেক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক
অস্ট্রেলিয়ার এই তরুণ ওপেনারকে নিয়ে তাদের মধ্যে কম মাতামাতি হচ্ছে না। আইপিএলে এবার দিল্লির হয়ে দল পেলেও নামা হচ্ছিল না। তবে সুযোগ পেয়েই দেখিয়ে দিয়েছেন কেন তাকে নিয়ে এতো কথা হচ্ছে! অভিষেকেই ফিফটি করেছেন, দলের জয়ে রেখেছেন ভূমিকা। তবে অবাক করেছেন তার পাওয়ার-হিটিংয়ের ক্ষমতা দিয়ে। পিক আপ শটে যেরকম দূরত্ব পার করেন সাবলীলভাবে তাতে করে তার বিপক্ষে বোলারদের লাইন-লেংথ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যেতে পারে। খেলেছেন মোটে দুটো ম্যাচ, তবে সম্ভাবনাটা দেখিয়ে দিয়েছেন সেখানেই।
জেরাল্ড কোটজিয়া
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রেকর্ড বই এলোমেলো করে দিয়ে এসেছেন; তাকে ভাবা হচ্ছে স্টেইনের যোগ্য উত্তরসূরি। বোলারদের বেধড়ক পিটুনির আসরে যে ব্যতিক্রম হয়ে ছিলেন এমনটা নয়; তবে তাকে মানুষ যে কারণে চিনেছে সেটা দেখিয়ে চলেছেন। মুম্বাইয়ের হয়ে রান গুনলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঠিকই উইকেট বের করে আনেন; চোখেমুখে উইকেট পাওয়ার সেই খুনে আগ্রাসনটাও প্রচ্ছন্ন। ৬ ম্যাচে ১৫ স্ট্রাইক রেটে ৯ উইকেট পাওয়াটা তাই তার নিয়মিত উইকেট তুলে নেওয়ার ক্ষমতার পক্ষেই কথা বলছে।