আইপিএলের প্লে-অফের দৌড়ে কার সামনে কেমন সমীকরণ
আইপিএলের প্লে-অফের দৌড় জমে উঠেছে অনেক আগে থেকেই। তবে গত রাতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে পড়েছে গুজরাট টাইটানস। দৌড় থেকে আরও একটি দল ছিটকে পড়লেও কিছু কিছু ম্যাচ যেন অলিখিত প্লে-অফের বাছাই পর্বের মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন দলের সামনে তাই কেমন সমীকরণ সেটাতেই চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
রাজস্থান রয়্যালস
পয়েন্ট: ১৬, নেট রান রেট: ০.৩৪৯
যেভাবে রাজস্থান শুরু করেছিল, তাতে মনে হচ্ছিল তারাই হয়ত প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফে জায়গা করে নিবে। অথচ টানা তিন পরাজয়ে এখন তাদেরও প্লে-অফের জায়গা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। কেননা ১৬ পয়েন্ট নিয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও এখনও সেই পয়েন্টে এসে দাঁড়াতে পারে আরও তিন দল; নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে হেরে বসলে তাই বিদায়ের রাস্তাটাও তৈরি হয়ে যেতে পারে রাজস্থানের জন্য। তবে আশার বিষয় - পরের দুটো ম্যাচই তাদের ঘরের মাঠে। চিন্তার বিষয় - ম্যাচ দুটোর একটি হচ্ছে ইতিমধ্যে প্লে-অফে জায়গা করে নেওয়া কলকাতা নাইট রাইডার্স। আরেকটি ম্যাচ প্লে-অফের দৌড় থেকে বাদ পড়ে যাওয়া পাঞ্জাব কিংসের সাথে। একটা ম্যাচে জিতলেই তাই রাজস্থানের খুব একটা চিন্তা হবে না।
চেন্নাই সুপার কিংস
পয়েন্ট: ১৪, নেট রান রেট: ০.৫২৮
চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচ বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে। তিনে থাকা চেন্নাইয়ের জন্য এই ম্যাচটা অলিখিত প্লে-অফ কোয়ালিফায়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পয়েন্টে চেন্নাই এগিয়ে থাকায় হেরে গেলেও তাদের সুযোগ থাকবে প্লে-অফে যাওয়ার। তবে সেক্ষেত্রে হায়দরাবাদ বা লক্ষৌ যাতে পয়েন্টে তাদের টপকে না যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। লক্ষ্ণৌয়ের রান রেট ঋণাত্মক হওয়ায় তাদের নিয়ে হয়ত চেন্নাইয়ের চিন্তা কিছুটা কম। তবে হায়দরাবাদ যে কায়দায় ব্যাটিং করে তাতে করে তাদের নিয়ে চেন্নাইকে আলাদা করে ভাবতে হবে। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে হারলেও ব্যবধান খুবই কম হলে চেন্নাই বাদ পড়ার সম্ভাবনা কম বলা চলে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
পয়েন্ট: ১৪, নেট রান রেট: ০.৪০৬
হায়দরাবাদের বাকি দুটো ম্যাচ, দুটোই ঘরের মাঠে - গুজরাট ও পাঞ্জাবের বিপক্ষে। দুটো দলই প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে পড়েছে। যেকোনো একটা ম্যাচে জিতলেই হায়দরবাদ হয়ত জায়গা করে নিতে পারবে প্লে-অফে। দুটোতেই জিতলে বরং প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলারও সুযোগ হয়ে যেতে পারে। ঘরের মাঠে হায়দরাবাদের ব্যাটিং তাণ্ডব নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। এই দুই দলের বিপক্ষে হায়দরাবাদের ব্যাটিং লাইনআপ জ্বলে উঠলে তাই হায়দরাবাদকে হয়ত দেখা যাবে প্লে-অফে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
পয়েন্ট: ১২, নেট রান রেট: ০.৩৮৭
বেঙ্গালুরুর বাকি একটাই ম্যাচ - চেন্নাইয়ের বিপক্ষে। টানা পাঁচ জয়ে হুট করেই আবার প্লে-অফের সমীকরণে বেঙ্গালুরু। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে তাদের জয়ের কোনো বিকল্পই নেই। হায়দরাবাদ ও লক্ষ্ণৌ যদি ১৬ পয়েন্টে পৌঁছে যায় তাহলে জিতেও লাভ নেই। তবে সব দলই ১৪ পয়েন্টে আটকে গেলে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর বড় জয়টা জরুরি। প্রথমে ব্যাট করে ২০০ রান করে যদি তারা ১৮ রানের জয় পায় তাতেই চেন্নাইয়ের ওপরে চলে যাবে তাদের রান রেট। সেক্ষেত্রে প্লে-অফে তাদের জায়গা হয়ে যেতে পারে।
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস
পয়েন্ট: ১২, নেট রান রেট: -০.৭৬৯
লক্ষ্ণৌয়ের দুটো ম্যাচ বাকি, দুটোই ঘরের বাইরে। তার মধ্যে একটি ম্যাচ প্লে-অফের দৌড়ে থাকা দিল্লির বিপক্ষে। রান রেটে অন্য সব দলের চেয়ে অনেক বেশি পিছিয়ে থাকায় লক্ষ্ণৌকে প্রকৃতপক্ষে দুটো ম্যাচেই জিততে হবে। ওয়াঙ্খেড়েতে গিয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষেও তাই তাদের জয়ের আশা করতে হবে। ১৬ পয়েন্ট পর্যন্ত যেতে না পারলে তাদের প্লে-অফের আশা নেই বললেই চলে।
দিল্লি ক্যাপিটালস
পয়েন্ট: ১২, নেট রান রেট: -০.৪৮২
শেষ ম্যাচে বড় পরাজয়ের কারণে দিল্লির পরিস্থিতিও অনেকটা লক্ষ্ণৌয়ের মতই। ১৪ পয়েন্টের বেশি তাদের পাওয়া হবে না। শেষ ম্যাচটাও তাদের লক্ষ্ণৌয়ের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে তাদের জিততে হবেই। লক্ষ্ণৌয়ের পথ আটকালেও তাদের সুযোগ খুবই ক্ষীণ, বলা যায় তাদের সম্ভাবনাটাও শুধুই কাগজে-কলমে। হায়দরাবাদ যদি দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১৫০ রানের ব্যবধানেও হেরে বসে তাও লক্ষ্ণৌয়ের বিপক্ষে দিল্লিকে জিততে হবে ৬৪ রানে!