• ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান
  • " />

     

    এমবাপে কি পিএসজির 'গোট'?

    এমবাপে কি পিএসজির 'গোট'?    

     'এটা নিয়ে কোনো কথাই হবে না। বিশ্ব ফুটবলে তার যা প্রভাব, আর সে যা করেছে তাতে আমার কাছে সে পিএসজির ইতিহাসের সেরা ফুটবলার।” ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার থিয়েরে অঁরই এই কথাটি বলেছেন কিলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে। সাত বছরেই তিনি পিএসজির গোট হয়েই এখন ক্লাব ছাড়ছেন।  ইতোমধ্যে এমবাপ্পের নেক্সট ক্লাব যে রিয়াল মাদ্রিদ এটা প্রায় নিশ্চিত, অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার।

    পিএসজিতে এমবাপ্পের ৭ বছরের প্রথম বছর কেটেছিল মোনাকো থেকে লোনে। এরপর তাকে ১৮০ মিলিয়ান ইউরো দিয়ে কিনে নেয় প্যারিস। এই সময়টাতে এমবাপ্পের অর্জন অনেক। 

    ৩০৭ ম্যাচে ২৫৬ গোল ও ১০৮ অ্যাসিস্ট করার পাশাপাশি জিতেছেন ৬টি লিগ শিরোপা, ২টি ফ্রেঞ্চ লিগ কাপ এবং ৩টি ফ্রেঞ্চ কাপ। খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালেও।

    ক্লাব অ্যাচিভমেন্টের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত অ্যাচিভমেন্টও আছে। তার ব্যাগে আছে পরপর ৫টি “লিগ আন গোল্ডেন বুট”, জিততে চলেছেন ছয় নম্বরটিও। 

    পিএসজি ওভার দা ডিকেড অনেক বড় বড় তারকা ফুটবলার দলে ভিড়িয়েছে। নেইমার, মেসি, রোনালদিনহো, বেকহামের  মতো ফুটবলাররাও খেলেছেন পিএসজিতে। তবে ক্লাব গ্রেটনেসের দৌড়ে তাদের ছাড়িয়ে গেছেন এমবাপে, তার সাথে তুলনা হতে পারে শুধু কাভানি-ইব্রাহিমোভিচের। 

     

    পিএসজির হয়ে এদিনসেন কাভানি খেলেছেন সাত মৌসুম খেলে দুইবার হয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা, একবার হয়েছেন বর্ষসেরা ফুটবলার। লিগ জিতেছেন ছয়টি, জিতেছেন, ৫টি ফ্রেঞ্চ কাপ এবং ৬টি ফ্রেঞ্চ লিগ কাপ।

    অন্যদিকে ক্লাবের আর এক লেজেন্ড ইব্রাহিমোভিচ চার মৌসুম খেলে তিন বারই হয়েছেন লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বর্ষসেরা হয়েছেন তিনবার। আর এই সময়ে জিতেছেন ৪টি লিগ, ২টি ফ্রেঞ্চ কাপ ও ৩টি ফ্রেঞ্চ লিগ কাপ। 

    এই দুজন ক্লাব ছাড়ার পর পিএসজিতে ছিল এমবাপের জয়জয়কার। পাঁচবার ফ্রেঞ্চ লিগের বর্ষসেরা ফুটবলার কীর্তি শুধু এমবাপেরই। ফ্রেঞ্চ লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগেও ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল তার, মাত্র সাত মাস খেলেই।

    তবে এমবাপের পিএসজির কীর্তি শুধু সংখ্যা দিয়ে মাপা যাবে না। পিএসজির তো বটেই, ফুটবল ইতিহাসেই আর কোনো ফুটবলারকে ক্লাবে থাকার জন্য সে দেশের প্রেসিডেন্টকে সম্ভবত নাক গলাতে হয়নি। যেটা দুই বছর আগে করতে হয়েছিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোকে। সে সময় অনেক নাটকের পর এমবাপে থেকে গিয়েছিলেন পিএসজিতেই, হয়তো খানিকটা নিজের ইচ্ছের বিপরীতে। তবে সেবার কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজন আর পিএসজির কাতারি মালিকের এমবাপেকে যে কোনো মূল্যে রাখার সমীকরণে কিলিয়ান এমবাপে হয়ে উঠেছিলেন ফ্রান্সের পোস্টার বয়।

    তবে শেষ পর্যন্ত আরও দুই মৌসুম থেকেই এমবাপে ছাড়ছেন পিএসজি। শেষটা অবশ্য সুখকর হয়নি, ক্লাব কিংবদন্তিকে নিজেদের মাঠের শেষ ম্যাচেও ঠিকমতো বিদায় দিতে পারেনি পিএসজি সমর্থকেরা। সেটা নিয়ে এমবাপে ক্ষোভটাও লুকাননি। আরও খবর এসেছে, পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসের এল খেলাইফির সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে তার। পিএসজি ছাড়ার আনুষ্ঠানিক বার্তায় খেলাইফির নাম নেননি এমবাপে, সেজন্যই এই মন কষাকষি। 

    এমবাপে রিয়ালে কেমন করবেন, সেটা বলে দেবে সময়। তবে ২৫ বছর বয়সেই প্যারিসের গোট হয়ে ক্লাব ছাড়াটা বলে দেয়, এমবাপে কতটা স্পেশাল ফুটবলার।