অধিনায়কত্ব, বোলিংয়ের দারুণ প্রদর্শনীতে ফাইনালে কামিন্সের হায়দরাবাদ
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-রাজস্থান রয়্যালস (টস-রাজস্থান/বোলিং)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ - ১৭৫/৯, ২০ ওভার (ক্লাসেন ৫০, ত্রিপাঠি ৩৭, হেড ৩৪, আভেশ ৩/২৭, বোল্ট ৩/৪৫, সন্দ্বীপ ২/২৫)
রাজস্থান রয়্যালস - ১৩৯/৭, ২০ ওভার (জুরেল ৫৬*, জয়সওয়াল ৪২, শাহবাজ ৩/২৩, অভিষেক ২/২৪, নটরাজন ১/১৩)
ফলাফল - হায়দরাবাদ ৩৬ রানে জয়ী
শেষ যেবার শিরোপা জিতেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, সেবারও অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন একজন অস্ট্রেলিয়ান। ডেভিড ওয়ার্নারের পর এবার এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ফাইনালে তোলা প্যাট কামিন্স সেটা পারবে কি না তা সময়ই বলবে; তবে সুযোগটা আরেকবার তৈরি করলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। চিপকে এবার প্রথমে ব্যাট করে যেখানে দলগুলো জিতেছিল দুই বার, সেখানে পরে ব্যাট করে জয় পেয়েছিল পাঁচ বার। সেই সমীকরণ মাথায় রেখেই রাজস্থান পরিকল্পনা সাজালেও সব ভেস্তে দিয়ে কামিন্স হাসলেন শেষ হাসি। দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব করে পথটা তিনি বাতলে দিয়েছিলেন; বোলাররা অধিনায়কের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে তাকে হতাশ করেননি।
১৭৬ রানের লক্ষ্যে রাজস্থান রয়েসয়ে শুরু করলে প্রথম ব্রেকথ্রুটা এনে দেন অধিনায়ক কামিন্স নিজেই। টম কোলার-ক্যাডমোরকে তিনি ফেরালেও যশস্বী জয়সওয়াল আরও একবার জ্বলে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। পাওয়ারপ্লেতে তাই ৫১ রানে উঠে গেলে কামিন্সকে নিতে হয় ভিন্ন পন্থা। সেখান থেকেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে শুরু করে। উইকেটে জয়সওয়াল থাকলেও অষ্টম ওভারে বাঁহাতি অফ স্পিনার শাহবাজকে আক্রমণে আনার ফাটকা খেললেন কামিন্স। তার ওপর যে জয়সওয়াল চড়াও হওয়ার চেষ্টা করবেন সেটা আঁচ করেই ফিল্ডিং সাজালেন। পরিকল্পনামাফিক ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার শাহবাজ কিছুটা খাটো লেংথে বল দিলে জয়সওয়াল বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বল আকাশে ভাসিয়ে থামলেন ২১ বলে ৪২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস শেষে। পরের ওভারে আরেক বাঁহাতি স্পিনার অভিষেককে আক্রমণে আনা হলে তিনি থামান রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসনকে। ম্যাচের বাকি অংশে কী হতে যাচ্ছে সেখান থেকে যেন আঁচ করা যাচ্ছিল।
১২-তম ওভারে তো শাহবাজ জোড়া আঘাতে রাজস্থানকে কাবু করে ফেললেন। রিয়ান পরাগের পাশাপাশি ব্যাটিং অর্ডারে উঠে আসা রবিচন্দ্রন আশ্বিনকেও থামান তিনি। উইকেটে হেটমায়ার এলে মাঝে এক ওভার মার্করামকে দিয়ে করান কামিন্স। সেখান থেকেই হাত খোলার ফন্দি আঁটতে থাকা হেটমায়ারকে পরের ওভারে দারুণ এক বলে ভড়কে দেন অভিষেক। দুই বাঁহাতি স্পিনার দুর্দান্ত দুই স্পেলে মাত্র ৪৭ রান দিয়ে নিয়ে নেন ৫ উইকেট। সেখান থেকে ধ্রুভ জুরেল একাই হাল ধরেছিলেন রাজস্থানের ব্যাটিংয়ের। শেষদিকে যেই রভম্যান পাওয়েলের ঝড়ের অপেক্ষায় ছিল রাজস্থান, তিনি উল্টো কামিন্সের পরিকল্পনায় পুরোপুরি নাস্তানাবুদ। ডেথ ওভারে এবার দারুণ করতে থাকা নটরাজনকে ১৮-তম ওভারে কামিন্স ফেরালে তিনি ১২ বলে ৬ রানে ধুঁকতে থাকা নটরাজনকে থামান। জুরেল শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৫৬* রানে মাঠে থাকলেও নটরাজন নিজের শেষ ওভারে দেন মাত্র ৬ রান! হায়দরবাদও তাই সহজেই পৌঁছে যায় ফাইনালের বন্দরে।