ইনফর্ম ক্লাসেন, ফিনিশার মিলার : দুশ্চিন্তা মার্করাম-নরকিয়াদের ফর্ম?
টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট, পাওয়ার হিটিং ফিনিশার, সিমিং অলরাউন্ডার, দারুণ পেস অ্যাটাক, পর্যাপ্ত স্পিন অপশন। কুইন্টন ডি কক, হাইনরিখ ক্লাসেন, ডেভিউ মিলার, মার্কো ইয়ানসেনদের নিয়ে গড়া বিশ্বকাপ স্কোয়াডকে বলা চলে ওয়েল ব্যালেন্সড। টাইটেল ফাইট দেয়ার মতো সামর্থ্য আছে এই দলটার।
ডি গ্রুপে প্রোটিয়ারা খেলবে শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ ও নেপালের বিপক্ষে। এর মধ্যে ডাচদের বিপক্ষে গত আসরে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তেমন কোনো আপসেট না হলে সুপার এইটে যাওয়ার দৌড়ে মার্করামরাই ফেভারিট।
ভেন্যু
গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের প্রথম তিনটিই দক্ষিণ আফ্রিকা খেলবে নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে। নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের ভেন্যু কিংস টাউনের আর্ন্স ভেইল স্টেডিয়াম।
টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট
রিজা হেনড্রিকস, কুইন্টন ডি কক, হাইনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলার; টি-টোয়েন্টির সব স্পেশালিস্ট আছেন প্রোটিয়াদের ব্যাটিং অর্ডারে। বল ক্যারি করা উইকেটে তাদের হিটিং এবিলিটি যেকোনো বোলিং অ্যটাককে চ্যালেঞ্জ জানাবে। শেষ দুই বছরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাদের স্ট্রাইকরেটও সাক্ষী দিচ্ছে টি-টোয়েন্টির আদর্শ এপ্রোচের। তাদের সবার স্ট্রাইকরেটই দেড়শো ছাড়িয়ে।
জমজমাট মিডল অর্ডার
ক্লাসেন, মিলার, স্টাবসদের মিডল অর্ডার ক্লিক করলে; প্রতিপক্ষের বোলারদের শুভকামনা জানিয়ে অল দ্য বেস্ট বলাই যায়। দারুণ একটা আইপিএল কাটিয়ে এসেছেন ক্লাসেন। ১৫ ইনিংসে ৪৭৯ রান করেছেন ১৭০-এর বেশি স্ট্রাইকরেটে। বিশ্বকাপেও সেই ফর্মটা নিয়ে যেতে চাইবেন ক্লাসেন। মাত্র ৯ ইনিংসে ব্যাট করে মিলার খুব ধারাবাহিক ছিলেন না। তবে ইনিংসের শেষদিকে নেমে খেলেছেন বেশ কিছু ক্যামিও। যদি ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি ট্র্যাক না হয়, তবুও সেটা এডাপ্ট করে নিতে পারেন মিলার-ক্লাসেনরা। দুজনের কেউই ব্লাইন্ড হিটার না, উইকেট-কন্ডিশন অনুযায়ী গিয়ার সুইচ করেন, সেটাই সবচেয়ে বড় স্পেশালিটি।
বোলিং কম্বিনেশন
রাবাদা-নরকিয়ার জুটি পেস বোলিংয়ের মুল অস্ত্র। মিড ওভারে বাঁহাতি মার্কো ইয়ানসেন যোগ করবেন ভেরিয়েশন। স্পিনেও ভেরিয়েশন আছে প্রোটিয়াদের, চায়নাম্যান শামসির সাথে আরেক বাঁহাতি কেশভ মহারাজ।
মার্করামের পড়তি ফর্ম
এসএ টোয়েন্টির দুই আসরের শিরোপাজয়ী অধিনায়ক মার্করাম। বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের নেতা তিনি। তার সাম্প্রতিক ফর্মের জন্য অবশ্য পাওয়ারফুল এই ব্যাটিং অর্ডারের মিসিং লিংকও বলা চলে তাকে আপাতত। ১১ ইনিংসে মাত্র ২২০ রান করেছেন। মাঝে বাদও পড়েছিলে হায়দরাবাদের একাদশ থেকে। তার অফ ফর্মটা হতে পারে চিন্তার কারণ।
সাত নম্বরের ভরসা কে?
প্রোটিয়াদের নাম্বার সেভেন ব্যাটার কে হবেন? ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টিতেও আসছে মার্কো ইয়ানসেনের নাম।ওয়ানডেতে এই পজিশনে পরীক্ষিত হলেও টি-টোয়েন্টিতে তিনি ব্যাট করেছেন মাত্র দুই ইনিংসে। অবশ্য তার ব্যাটিং এবিলিটিটাই এখানে ভরসা যোগাচ্ছে প্রোটিয়াদের। যদি ইয়ানসেন কোনো কারণে খেলতে না পারেন, সেক্ষেত্রে ব্যাটিং অর্ডার আরও একটু ছোট হয়ে যেতে পারে। টেইলএন্ডার হিসেবে রাবাদা-মহারাজরা কতটা কী করতে পারেন, সেই প্রশ্নও উঠছে।
নরকিয়ার সাম্প্রতিক ফর্ম
রানবন্যার আইপিএল থেকে বিশ্বকাপে যাচ্ছেন প্রোটিয়া পেসাররা। বিশেষত আইনরিখ নরকিয়া। ভুলে যাওয়ার মতো আইপিএল কেটেছে তার। অফফর্মের জন্য ইলেভেন থেকে ড্রপও হয়েছিলেন। রান দিয়েছেন প্রায় ১০ ইকোনমিতে। রাবাদারও ইনজুরি ইস্যু আছে। আইপিএল থেকে চোট নিয়ে ফিরেছিলেন এই পেসার। সেই চোট বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাধা হয়ে আসে কিনা, সেই প্রশ্নও আসছে।
টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট, ফিনিশারদের নিয়ে প্রোটিয়াদের বেশ শক্তিশালী স্কোয়াডই যাচ্ছে বিশ্বকাপে। তবে দল হিসেবে কতটা দূর যেতে পারবে তারা, সেটার অনেকটাই নির্ভর করবে তাদের বোলিং ইউনিটের ওপর। এখন পর্যন্ত আইসিসির কোনো মেজর ইভেন্ট জেতা হয়নি তাদের। মার্করাম-ক্লাসেনদের হাত ধরে এবার কি সেই শিরোপাখরা ঘুচবে প্রোটিয়াদের