বিশ্বকাপের ৯ ভেন্যু: কোথায় ব্যাটিং উইকেট, কোথায় বোলিং?
ডালাস থেকে কিংসটাউন, নিউ ইয়র্ক থেকে গায়ানা; যুক্তরাষ্ট্র আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ মিলিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কোনো মাঠ ব্যাটিং-বান্ধব, কোনো মাঠ বোলিং। কোথাও বাউন্স বেশি, কোথাওবা স্পিন। এক নজরে দেখে নিন বিশ্বকাপের কোন স্টেডিয়াম কেমন? দুই দেশের ৯ ভেন্যু মিলিয়ে হবে মোট ৫৫টি ম্যাচ। ৯ ভেন্যুর তিনটি যুক্তরাষ্ট্রে, বাকি ছয়টি ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়াম, ডালাস
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ-সহ মোট চারটি ম্যাচের ভেন্যু ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়াম। বেশ স্পোর্টি উইকেট এই মাঠের। পেসাররা শুরুর দিকে মুভমেন্ট পান, উইকেটে বল ক্যারি করাতে, ব্যাটাররাও সেটা কাজে লাগাতে পারেন। আউটফিল্ড বেশ ফাস্ট। গড় বাউন্ডারি সাইজ ৬৬ থেকে ৭২ মিটার। উদ্বোধনী ম্যাচে প্রায় ৪০০ ছুঁইছুঁই রান হয়েছে ড্যালাসের এই মাঠে।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৪
ধারণক্ষমতা : ১৫০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১৯৪
গড় রান রেট : ১০.৩৮
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৯৭/৩
(যুক্তরাষ্ট্র- কানাডা,, ২০২৪)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ০:১ প্রথমে বোলিং
নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়াম, নিউ ইয়র্ক
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ-সহ মোট আটটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে। নাসাউ কাউন্টির আন্তর্জাতিক অভিষেক হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলংকা ম্যাচ দিয়ে। ড্রপ ইন উইকেটে খেলা হবে বিশ্বকাপে। এখানে বাংলাদেশ-ভারত প্রস্তুতি ম্যাচের উইকেট ছিল একদম ফ্রেশ, কোনো ক্র্যাক দেখা যায়নি।বলা চলে বাকি ম্যাচগুলোতেও এমন হার্ড-পেইসি উইকেটের দেখাই মিলবে।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৮
ধারণক্ষমতা : ৩৪০০০
সেন্ট্রাল ব্রোয়ার্ড পার্ক স্টেডিয়াম, ফ্লোরিডা
সাধারণত স্পোর্টি উইকেটই দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হোস্ট করা এই মাঠে। বিশ্বকাপে আয়োজন করবে চার ম্যাচ। টসটা এক্স ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে, কারণ চেজিংয়ের চেয়ে ডিফেন্ড করে ম্যাচ জেতার রেটই বেশি লডারহিলে। এখন পর্যন্ত ওভারপ্রতি রান রেট ৮.০১। বাউন্ডারি সাইজও গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ মিটার।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৪
ধারণক্ষমতা : ২৫০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১৫৭
গড় রান রেট : ৮.০১
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৭৯/১
(ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০২৩)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ১১: ৪ প্রথমে বোলিং
প্রভিডেন্স স্টেডিয়াম, গায়ানা
মাঠের একপাশের ঘাসের গ্যালারি যেন গায়ানার প্রভিডেস স্টেডিয়ামের সিম্বল। একটা সেমিফাইনাল ও গ্রুপ পর্ব মিলিয়ে গায়ানাতে অনুষ্ঠিত হবে মোট ৬ ম্যাচ। বোলিং সহায়ক এই মাঠে উইকেটও স্লো। বল পিচ করার পর বেশ গ্রিপ করে উইকেটে। ১ম ইনিংসের গড় টোটাল ১২৪। চেজ করে জেতা ম্যাচের সংখ্যাই বেশি।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৬
ধারণক্ষমতা : ২০০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১২৪
গড় রান রেট : ৭.৫০
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৬৯/৫
(ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ, ২০২২)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ৩: ৭ প্রথমে বোলিং
কেনসিংটন ওভাল, বার্বাডোজ
ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বড় ভেন্যু। দেড়শো বছরের পুরনো এই মাঠে ফাইনাল, সুপার এইট-সহ ৯ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। টিপিক্যাল বাউন্সি ক্যারিবিয়ান উইকেটই দেখা যায় এখানে। যদিও ওভারপ্রতি গড়ে প্রায় আট ছুঁইছুঁই রান রেট জানাচ্ছে, বার্বাডোজে ব্যাটাররাও কম যান না। এখানে ম্যাচ জেতার অন্যতম টনিক টসে জিতে ব্যাটিং নেয়া।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৯
ধারণক্ষমতা : ২৮০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১৩৮
গড় রান রেট : ৭.৮৭
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৭২/৬
(ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত, ২০২৩)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ১৬: ৭ প্রথমে বোলিং
স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়াম, অ্যান্টিগা
ট্রু বাউন্স আর পেস সহায়ক উইকেটই দেখা যায় অ্যান্টিগাতে। সুপার এইটের চারটি ও গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচ হবে ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। ওভারপ্রতি ৬.৪৬ রান রেটও বলছে এই মাঠে বোলাররাই দাপট দেখান। গড় ৬৩ মিটারের বাউন্ডারি সাইজের এই মাঠে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হয়েছে ২০২১ সালে। সেই হিসেবে তিন বছরের ব্যবধানে উইকেটের গতি প্রকৃতি বদলানোর সম্ভাবনাই বেশি।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৮
ধারণক্ষমতা : ১০০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১২৩
গড় রান রেট : ৬.৪৬
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৪৯/৮
(বারমুডা-যুক্তরাষ্ট্র, ২০২১)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ৯: ৪ প্রথমে বোলিং
ব্রায়ান লারা স্টেডিয়াম, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
বিশ্বকাপের অন্যতম ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি ট্র্যাক হতে পারে ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়াম। যদিও মাত্র চারটি ম্যাচ হয়েছে এখন পর্যন্ত। বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালের আগে গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচ হবে। এই মাঠেই ইংল্যান্ড তুলেছিল তাঁদের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৬৭। ওভারপ্রতি রান রেট সাড়ে আটের বেশি।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৮
ধারণক্ষমতা : ১৫০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ২০৭
গড় রান রেট : ৮.৬১
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৪৯/৮
(বারমুডা-যুক্তরাষ্ট্র, ২০২৩)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ৩: ১ প্রথমে বোলিং
আর্ন্স ভেইল ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সেন্ট ভিনসেন্ট
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ খেলবে এই মাঠে। সুপার এইটের দুইটি ম্যাচও হবে আর্ন্স ভেইল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। পেইসি উইকেট হওয়াতে বলের ক্যারিও বেশি থাকে উইকেটে। মিড রেঞ্জ স্কোরের ভেন্যু এটি। তবে নিয়মিত শর্টার ফরম্যাটের ম্যাচ না হওয়াতে এই মাঠ নিয়ে খানিকটা ধোয়াশাতেই থাকবে দলগুলো।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৫
ধারণক্ষমতা : ১৫০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ২০৭
গড় রান রেট : ৭.১১
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৫৮/৮
(ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান, ২০১৩)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ১: ১ প্রথমে বোলিং
ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সেন্ট লুসিয়া
ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জের আরেক ব্যাটিং স্বর্গ সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়াম। গড় রান রেট ওভারপ্রতি ৮.০৯। যদিও ২০২১ সালের পর আর কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হয়নি এই মাঠে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ভেন্যুতে ডিফেন্ড আর চেজ করে জেতা ম্যাচের সংখ্যা সমান। বাউন্ডারি সাইজ গড়ে ৬৫ মিটার করে।
বিশ্বকাপ ম্যাচ : ৬
ধারণক্ষমতা : ১৫০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ১৩৯
গড় রান রেট : ৮.০৯
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ১৯৭/৭
(অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান, ২০১০)
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ৯: ৯ প্রথমে বোলিং
যুক্তরাষ্ট্রে স্পোর্টি উইকেটের দেখা মিললেও ক্যারিবিয়ান কন্ডিশনে পেস-ফ্রেন্ডলি, বাউন্সি, স্পিন এমনকি ট্রু ব্যাটিং উইকেটের দেখাও পাওয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচগুলোতে ব্যাট-বলের সমতা থাকবে ধরে নেয়া যায়। তবে সেই হিসেবে ক্যারিবিয়ান উইকেটগুলোতে থাকবে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ