সময়সুচি, যাত্রাপথ যেসব কারণে ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়ে বিশ্বকাপে উদ্বেগ
বিশ্বকাপের সময়সুচি নিয়ে শুরুর আগেই কথা কম হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শোচনীয় পারফরম্যান্সের পর শ্রীলঙ্কার মাহিশ থিকশানা তো সেটা নইয়েই সরাসরি কথাই তুললেন। পিচ, উইকেট নিয়ে কথার পাশাপাশি বিশাল দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ম্যাচ খেলা, সেখান থেকে পেয়ে বসা ক্লান্তি নিয়েও উদ্বিগ্ন দলগুলো। তবে এই চিন্তাটা কেন তাদের মাথায় আসছে। বিশ্বকাপে কোন দল কোথায় ম্যাচ খেলছে, কাদের এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুর দূরত্ব কেমন সেদিকে তাকালেই বিষয়টা একটু পরিস্কার হয়।
পূর্ণ প্রস্তুতি, ভ্রমণক্লান্তি এড়ানো, ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রে এই দুটো বিষয়কেই মাথায় রেখেছিল দলগুলো। তাই দলগুলোর ওয়ার্ম আপ ম্যাচ সংখ্যায় দেখা গেছে অসমতা। পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড কোন প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই অংশ নিয়েছে গ্রুপ পর্বে; বিশ্বকাপের আগে অবশ্য সিরিজ খেলেছে দলগুলো। ভারত আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে একটি করে প্রস্তুতি ম্যাচ। নামিবিয়া বাদে বাকি দলগুলো দুটো করে ম্যাচ খেলেছে, আর সর্বোচ্চ তিনটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে নামিবিয়া।
দল |
ওয়ার্ম আপ ম্যাচের সংখ্যা |
পাকিস্তান |
০ |
ভারত |
১ |
নামিবিয়া | ৩ |
বাকি সব দল | ২ |
৪ বার বেস পরিবর্তন
ওয়ার্ম আপ থেকে প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়া পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার বেস পরিবর্তন করবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ড। দূরত্বের হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৯ হাজার ৯২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। এই দূরত্ব পেরোনোর পথে দলটি বেস পরিবর্তন করবে চারবার। ডালাসে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচটা খেলেছে নিউ ইয়র্কে। এরপর প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের জন্য যথাক্রমে ভ্রমণ করবে ডালাস, নিউ ইয়র্ক এবং কিংসটাউনে।
লডারহিলে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরে প্রথম রাউন্ডের চারটি ম্যাচ খেলার জন্য শ্রীলঙ্কাকে ভ্রমণ করতে হবে চারটি ভিন্ন ভেন্যুতে। ৭ হাজার ৩৮০ কিলোমিটার পথ পেরোতে হবে নেপালকে হারিয়ে শুভসূচনা করা নেদারল্যান্ডসকে। প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার আগে চারবার বেস বদলাতে হবে তাদেরও। লডারহিল এবং ডালাসে দুটো ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলেছে নেদারল্যান্ডস। এরপর প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের জন্য দলটিকে ভ্রমণ করতে হবে ডালাস, নিউ ইয়র্ক, কিংসটাউন এবং গ্রস আইলেটে।
দূরত্বের হিসেবে মাত্র ১ হাজার ২৪২ কিলোমিটার পথ পেরোবে স্কটল্যান্ড। তবে প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার আগে চারবার বেস পরিবর্তন করতে হওয়ায় ভ্রমণক্লান্তি জেঁকে ধরার সম্ভাবনা থাকছেই। উগান্ডা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে যথাক্রমে টারোউবা এবং পোর্ট ও স্পেনে মুখোমুখি হয়েছিল স্কটল্যান্ড। প্রথম পর্বের ম্যাচগুলো খেলতে দলটি ভ্রম করবে ব্রিজটাউন, নর্থ সাউন্ড ও গ্রস আইলেটে।
দল | অতিক্রান্ত দূরত্ব (কিলোমিটার) |
বাংলাদেশ | ৯,৯২১ |
শ্রীলঙ্কা | ৮.০৯৭ |
নেদারল্যান্ডস | ৭,৩৮০ |
স্কটল্যান্ড | ১,২৪২ |
৩ বার বেস পরিবর্তন
আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, ওমান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেস পরিবর্তন করবে তিনবার।
দল | অতিক্রান্ত দূরত্ব (কিমি.) |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৭০৯ |
আফগানিস্তান | ১৫২১ |
অস্ট্রেলিয়া | ১১৯৫ |
ওমান | ৮৯১ |
নামিবিয়া | ৯২৪ |
২ বার বেস পরিবর্তন
নেপাল, কানাডা, ইউএসএ, পাপুয়া নিউ গিনি, উগান্ডা, আয়ারল্যান্ড এবং পাকিস্তান বেস পরিবর্তন করবে দুইবার করে।
দল | অতিক্রান্ত দূরত্ব (কিমি.) |
নেপাল | ৪,২১৪ |
কানাডা | ৩,৯২২ |
যুক্তরাষ্ট্র | ৩,৯২২ |
পাকিস্তান | ৩,৯২২ |
আয়ারল্যান্ড | ৩,৪৩৪ |
পাপুয়া নিউ গিনি | ১,২৪৬ |
উগান্ডা | ১,২৪৬ |
১ বার বেস পরিবর্তন
ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদেরকে ভাবতে পারে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান দল হিসেবে। প্রথম রাউন্ড শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত মাত্র একবার বেস পরিবর্তন করতে হবে তাদের। এদের মধ্যে দূরত্বের হিসেবে সবচেয়ে কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে ইংল্যান্ডকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পরে বারবাডোজের ব্রিজটাউন থেকে ৫০৫ কিলোমিটার ভ্রমণ করে অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডে পৌঁছাবে দলটি।
ভ্রমণের দিক থেকে ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকাও সুবিধা পাচ্ছে। ওয়ার্ম আপ ম্যাচের পর প্রথম রাউন্ডের প্রথম তিনটা ম্যাচই নিউ ইয়র্কে খেলবে ভারত। অন্য দিকে, কোনো ওয়ার্ম আপ ম্যাচ না খেলা দক্ষিণ আফ্রিকাও প্রথম তিন ম্যাচ খেলবে ওই নিউ ইয়র্কেই। এরপর উড়াল দেবে সেন্ট ভিনসেন্টের উদ্দেশ্যে।
দল | অতিক্রান্ত দূরত্ব (কিমি.) |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩,৩০৬ |
ভারত | ১,৭১৭ |
নিউজিল্যান্ড | ৬২৩ |
ইংল্যান্ড | ৫০৫ |