সৌম্য কেন দলে?
সৌম্য সরকার বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সেট-আপের ইম্পর্ট্যান্ট মেম্বার। ইনজুরির কারণটা এই বছর বাংলাদেশের খেলা সবগুলো টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করেছেন, ইনজুরি সারলে একাদশে জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আপনাআপনি - সৌম্যকে ইম্পর্ট্যান্ট না মেনে উপায়ও নেই। তো এমন একজন ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স অবশ্যই স্ক্যানারের নিচে আসা উচিত। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সৌম্যের পারফরম্যান্স কী?
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাদ পড়েছিলেন দল থেকে, অবশ্য সেটা তিনি ইদানীং প্রতি বিশ্বকাপের পরই পড়ছেন। ফিরলেন ২০২৩ সালের শেষদিকের নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে। ফেরার সাইকেলটা বেশ মজার!জাতীয় লিগে, মানে চার দিনের ক্রিকেটে ৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট পেলেন, রান করলেন ৪৩৬ - ঢুকে গেলেন ওয়ানডে দলে। সেখানে এক ইনিংসে ১৬৯ ঢুকিয়ে দিলো টি-টোয়েন্টি একাদশেও। যেই লিস্ট থেকে আর কাটা পড়েনি তার নাম, অন্তত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ পর্যন্ত।
কিন্তু এই যে মাঝে ১২ ম্যাচ খেললেন, এই ম্যাচগুলোতে সৌম্যর পারফরম্যান্স কী? দুই ইনিংস বাদে প্রতিটা ম্যাচেই ওপেন করেছেন, রান করার সুযোগ তাই পর্যাপ্তই পেয়েছেন। কিন্তু সৌম্য সুযোগটা নিতে পারেননি। ১১ ইনিংসে রান করেছেন ১৮৬। স্ট্রাইক রেটটাও অ্যাভারেজ। ১২৬-এর মতো।
সৌম্য যাকে রিপ্লেস করলেন ওপেনার হিসেবে, সেই রনি তালুকদারের স্ট্যাটও কিন্তু এর চাইতে বেটার ছিল। রনিকে দিয়ে বাংলাদেশ চাইছিল পাওয়ারপ্লে ইউটিলাইজ করতে, রনি সেটা করছিলেনও।অন্যদিকে সৌম্যের পাওয়ারপ্লে স্ট্যাটটাও খুব মলিন। এই দফায় পাওয়ারপ্লেতে ৯৫ বল খেলে ব্যাট করেছেন ১০৯.৫ স্ট্রাইক রেটে। এক প্রান্ত আগলেও রাখতে পারছেন না, তার প্রমাণ, প্রথম ৬ ওভারেই আউট হয়ে গেছেন ৭ বার।
এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে যে কেবল ব্যাটার হিসেবে সৌম্যের দলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই, সেটা নিশ্চিত। তবুও রনিকে রিপ্লেস তিনি করলেন, কারণ, সৌম্য বোলিংয়েও একটা সার্ভিস অফার করছেন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার প্যাকেজটা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটেই বেশ লোভনীয়। সৌম্যকে স্কোয়াডে নেওয়ার সময়ও সিলেক্টররা তার বোলিংয়ের কথাটা আলাদা করে মেনশন করেন।
কিন্তু, তার বোলিংটা কি বাংলাদেশের দরকার পড়ছে?
ন্যাশনাল টিমে সৌম্যের বোলিংটা বরাবরই অপশনাল। হয়তো কারও একজনের অফ ডে যাচ্ছে, সৌম্যর ওভারগুলো তখন কাজ করে ফিলার ওভার হিসেবে। এবার কামব্যাকের পর যেমন সৌম্যকে ডাকা হয়েছে মাত্র ৪ ওভারের জন্য।যদিও আর্লি ডেইজ, তবে এখন পর্যন্ত নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাপ্টেনসি দেখে মনে হচ্ছে, তিনি খুব একটা পার্টটাইম বোলারদের ফ্যান নন। মাত্র ১১ ওভারেই সিক্সথ বোলিং অপশন ইউজ করেছেন তিনি।
আর আমেরিকা যাওয়ার পর থেকে শান্ত সিক্সথ বোলিং অপশনের জন্য যেতে চাইলে মাহমুদউল্লাহর অফ স্পিনেই ভরসা খুঁজছেন। এখন পর্যন্ত সৌম্য হাত না ঘুরালেও আমেরিকায় মাহমুদউল্লাহ করে ফেলেছেন সাড়ে ৫ ওভার। ট্রেন্ডটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ গেলেও বদলানোর কথা না। ওখানকার স্লো-লো পিচ তো আর হুট করেই সিমার-ফ্রেন্ডলি হয়ে যাবে না।ব্যাট হাতে ভালো করছেন না, বল হাতে দরকার পড়ছে না, তবুও ইলেভেনের একটা জায়গা সৌম্যের জন্য রাখা মানে, সৌম্যকে বাংলাদেশ খেলাচ্ছে ফিল্ডার হিসেবেই।
হ্যাঁ, এটা না মেনে উপায় নেই, তিনি ফিল্ডিংটা বেশ ভালো করেন!