• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    রিশাভ পান্ট : জীবনের মতোই অদ্ভুত যার সব শট

    রিশাভ পান্ট : জীবনের মতোই অদ্ভুত যার সব শট    

    কখনো এক হাতে ছক্কা মারছেন, কখনো ওয়াইড ইয়র্কারে শট খেলতে গিয়ে ব্যালেন্স হারাচ্ছেন, পেসারকেও করছেন রিভার্স সুইপ! কখনো বা আবার ফাইন লেগ দিয়ে এমন এক শট খেলছেন, ধারাভাষ্যকাররাও খুঁজে পাচ্ছেন না সেই শটের নাম। পান্ট যেসব অদ্ভুত শট খেলেন, তার জীবনটাও তেমনই অদ্ভুত!

    গতকাল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেই হারিস রউফের ফুল লেন্থ বলে যেভাবে শাফল করে ফাইন লেগে খেলেছেন, দেখার পর রমিজ রাজা প্রশ্নই ছুঁড়েছেন, কী বলবে একে? রিশাভ পান্ট স্পেশাল নাকি আর কিছু? 

    অথচ ২০২২-এর ডিসেম্বরে মারাত্মক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে বসেছিলেন রিশাভ পান্ট। নিজের গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে রোড ডিভাইডারের সাথে সংঘর্ষে আগুন ধরে যায় তার গাড়িতে। গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে বেরিয়েছিলেন ভারতের এই উইকেটকিপার ব্যাটার এরপর স্থানীয় দুজন তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে। ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিড়েছিল। শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও ছিল চোট। দুর্ঘটনার পর হয়েছিল আরও দুটি সার্জারি।

    দীর্ঘ এক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গেছেন, হাঁটতে হচ্ছিল ক্রাচে ভরে করে। এবারের আইপিএল দিয়ে ফিরেছেন ক্রিকেটে। দিল্লী ক্যাপিটালসকে দিয়েছেন নেতৃত্ব। আইপিএলে চারশোর বেশি রান করেছেন, বড় ইনিংস খুব বেশি ছিল না।  তবুও পান্ট জায়গা পেয়েছেন বিশ্বকাপে, ভারতের ফার্স্ট চয়েজ উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে।

    গতকাল পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ষষ্ঠবারের মতো হারিয়েছে ভারত। বল হাতে বুমরাহ ম্যাচের নায়ক হলেও, লড়াইয়ের রসদ এনে দিয়েছিলেন পান্টই। নিউ ইয়র্কের ট্রিকি উইকেটে রোহিত-কোহলি কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ভারতের নতুন নাম্বার থ্রি পান্ট, শুরু করেন কাউন্টার অ্যাটাক। নাসাউ কাউন্টির ড্রপ ইন উইকেটে, আমির-নাসিম-হারিসদের বোলিং অ্যাটাককে দারুণভাবেই হ্যান্ডল করেছেন পান্ট। 

    যখন আউট হন, নামের পাশে দলীয় সর্বোচ্চ ৪২। ম্যাচের টোনটা সেট করে দিয়েছিলেন পান্টের এই ইনিংসই। হারিসকে মারা সেই অদ্ভুত স্কুপ কিংবা নাছোড়বান্দ এপ্রোচে ইমাদ ওয়াসিমকে রিভার্স সুইপ; পান্টের ইনিংসের হাইলাইটস। আর গ্লাভস হাতে? সেখানেও দুর্দান্ত। নিয়েছেন দারুণ তিনটা ক্যাচ। ফখর জামান, শাদাব খান আর শেষে ইমাদ ওয়াসিমের এজ লেগে আসা বলে অনেকখানি ঝাপিয়ে পড়ে ধরেছেন ক্যাচটা। ম্যাচ শেষে ভারত্তের ড্রেসিংরুমে জিতেছেন সেরা ফিল্ডারের পুরষ্কার।

     

    রিশাভ পান্ট তো এমনই! তার ব্যাটিং স্টান্স, ব্যাক লিফট কখনোই বলবে না, তিনি ক্রিকেটের ব্যকরণটা মেনেই ব্যাট করেন, তবে স্টেডি হেড পজিশনে ধরে রেখে যেসব শট খেলেন, মাঠের যে দিকটায় খেলেন; বোলাররা সেটা আশাও করেন না। 

    আর এখানেই রিশাভ অনন্য, এসব অদ্ভুত শটের জন্যই। কোন বলে কী শট খেলবেন, কোন দিকে খেলবেন রিশাভ সেটা নিজেও হয়তো ঠিক করেন না। তবে দুর্ঘটনা থেকে ফিরে আসার পর রিশাভ এটা অন্তত ঠিক করেছিলেন, আগের মতো মাঠে উড়ে বেড়াবেন, বলকে উড়িয়ে পাঠাবেন এদিকওদিক।