তানজিম সাকিব, তাসকিনদের দাপটে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ১১৩
গ্রুপ পর্ব, নিউ ইয়র্ক (টস - দক্ষিণ আফ্রিকা/ব্যাটিং)
দক্ষিণ আফ্রিকা - ১১৩/৬, ২০ ওভার (ক্লাসেন ৪৬, মিলার ২৯, ডি কক ১৮, তানজিম সাকিব ৩/১৮, তাসকিন ২/১৯, রিশাদ ১/৩২)
টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তে ভুরু কুঁচকেছিলেন মাঠে থাকা বেশ কিছু সাবেক ক্রিকেটার। তাদের শঙ্কাকে সত্যি করেই দুর্দান্ত ওপেনিং স্পেলে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছিলেন তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ। মাঝে পঞ্চম উইকেটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড গড়েছিলেন ডেভিড মিলার ও হাইনরিখ ক্লাসেন। ৭৯ রানের সেই জুটি ভাঙার পাশাপাশি দারুণ ডেথ বোলিংয়ে ম্যাচে ফিরে প্রোটিয়াদের ১১৩ রানেই আটকে দিয়েছে বাংলাদেশি বোলাররা।
বল হাতে নিয়ে পাওয়ারপ্লেতে ওপেনিং স্পেলে তিন ওভার করেছিলেন তানজিম সাকিব; তিন ওভারেই উইকেট পেয়েছিলেন তিনি! প্রথম ওভারেই ডি কক তার ওপর চড়াও হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও অন্য প্রান্তে থাকা রিজা হেন্ড্রিকসকে তার প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। সাকিবের পরের ওভারেই ডি কক আরও একটি ছয় মেরে তাকে স্বাগত জানালেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে তার স্টাম্প উপড়ে ফেলেন সাকিব। ডি ককের ক্রস ব্যাট শটে উইকেট হারানোর পরেই খেই হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা টপ অর্ডার। তাসকিনের সামান্না ভেতরে ঢোকা বল একেবারেই পড়তে না পেরে এরপর স্টাম্প খুইয়ে বসেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। নিজের পরের ওভারে এসে উইকেটের ভ্যারিয়েবল বাউন্স কাজে লাগান সাকিব; তার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বল নামাতে গিয়েও না পেরে এক্সট্রা কাভারে সাকিব আল হাসানের ঝাঁপিয়ে পড়া ক্যাচের শিকার হয়ে ফেরেন ট্রিস্টান স্টাবস। পাওয়ারপ্লেতে দক্ষিণ আফ্রিকা তাই তুলতে পারে মোটে ২৫ রান।
তবে পাওয়ারপ্লের পর নিজেদের সামলে নেন প্রোটিয়ারা। মিলার-ক্লাসেন জুটি ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলতে থাকেন। স্পিনারদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন দুজনেই। স্পিন সামলানোতে দুজনেই দক্ষ হলেও বাংলাদেশকে সেই পথে হাঁটতে হলে রিশাদকে টানা দুই ছয় মেরে বার্তাটা পরিস্কারভাবেই জানিয়ে দেন ক্লাসেন। তবে দশম ওভারে স্পিনার মাহমুদউল্লাহকে আনা হলে প্রথম বলেই মিলারের ব্যাটের কানা খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি; তবে সেই যাত্রা মিলার বেঁচে যায় লিটনের মিসে।
মাহমুদউল্লাহর কার্যকর স্পেলে এক প্রান্তে মিলার-ক্লাসেন সুবিধা করতে না পেরে শেষদিকে আক্রমণের সুযোগ খুঁজতে থাকেন। তবে নিজের স্পেলের শেষ ওভার করতে এসে আরও একটি সিমিং ডেলিভারিতে এবার আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে যাওয়া ক্লাসেনকে থামান তাসকিন। ৪৪ বলে ৪৬ রানে ক্লাসেন থামার পর ১৯-তম ওভারে রিশাদকে বল দেওয়ার সাহসী সিদ্ধান্ত নেন শান্ত। মিলার যে তাকে ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করবেন বুঝেই টপ স্পিনার দিয়ে তার স্টাম্প উপড়ে ফেলেন রিশাদ। ৩৮ বলে ২৯ রান শেষে মিলার ফিরলে শেষ ওভারটায় দারুণ বল করেন মোস্তাফিজ; প্রথম চার বলেই দেন ডট। ওভারে তিনি কোনো বাউন্ডারি না দিলে প্রথমে ব্যাট করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহে আটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।