আগুনে তানজিম সাকিব, দুর্বোধ্য মোস্তাফিজে সুপার এইটে বাংলাদেশ
গ্রুপ পর্ব, কিংসটাউন (টস - নেপাল/বোলিং)
বাংলাদেশ - ১০৬, ১৯.৩ ওভার (সাকিব ১৭, রিশাদ ১৩, মাহমুদউল্লাহ ১৩, কামি ২/১০, লামিছানে ২/১৭, পৌডেল ২/২০)
নেপাল - ৮৫, ১৯.২ ওভার (মাল্লা ২৭, দিপেন্দ্র ২৫, আসিফ ১৭, তানজিম সাকিব ৪/৭, মোস্তাফিজ ৩/৭, সাকিব ২/৯)
ফলাফল - বাংলাদেশ ২১ রানে জয়ী
ব্যাটিংয়ে দুর্দশার পর বাংলাদেশের শেষ দেখে ফেললেও হয়ত খুব একটা দোষ হত না; তবে শেষ দেখেননি তানজিম হাসান সাকিব, মোস্তাফিজুর রহমানরা। বাংলাদেশের বোলারদের উদ্দীপনায় নেপালের ব্যাটিং লাইনআপ পুরোই দিশেহারা। দাপুটে বোলিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ তাই সুপার এইটে উঠল রেকর্ড গড়ে; টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ডিফেন্ড করে।
১০৭ রানের লক্ষ্যে নেপালের শুরুটা হয়েছিল ভয়াবহ। বলা চলে তানজিম সাকিব একাই তাদের কাবু করে রেখেছিলেন। দুই দিকেই বল ঘুরিয়েছেন, সেই সাথে ছিল গতি। প্রথম বলটাই দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে বোকা বানালেও ব্যাটের কানায় লেগে সেই যাত্রায় চার হয়ে যায়। তবে এরপর আর তাকে রুখে কে! দ্বিতীয় ওভারে এসে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন এক আউটসুইঙ্গিং ফুল টসে স্টাম্প উপড়ে ফেলে; দুই বল পরেই বাউন্সারে বাজিমাত করলেন। সেই ক্যাচটার জন্য অবশ্য অধিনায়ককেও ধন্যবাদ দিবেন তিনি। ডাবল উইকেট মেইডেনের পর আবারও দিলেন মেইডেন।
হাত খোলার বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে যেই একটা আউট সুইঙ্গার একটু বাইরে দিয়েছিলেন সেটাতে ব্যাট চালিয়েও রোহিত পৌডেল ব্যাট চালালেও ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ওঁত পেতে থাকা রিশাদকে সরাসরি ক্যাচ তুলে দেন তিনি। পরের ওভারে মোস্তাফিজকে সপাটে ব্যাট চালালেও এক্সট্রা কাভারে সাকিবকে সরাসরি ক্যাচ তুলে ফেরেন আসিফ। পাওয়ারপ্লের পর টানা চার ওভারের স্পেলের জন্য সাকিবকে ডাকা হলে আবারও সেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ফাঁদে ফেলেন তানজিম সাকিব। অসামান্য এক স্পেলে দুই মেইডেন সহ মাত্র ৭ রান দিয়েই পেয়ে যান ৪ উইকেট। সেখানেই নেপাল ২৬ রানে হারিয়ে বসে ৫ উইকেট; ম্যাচটাও যেন ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল তাদের জন্য।
তবে হারার আগেই হার মানতে নারাজ নেপাল সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। কুশল মাল্লা ও দিপেন্দ্র সিং আইরী জুটি গড়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছিলেন। তবে শেষদিকে এসে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন মোস্তাফিজ, যেটা তিনি প্রতি ম্যাচে করে চলেছেন এই আসরে। ১৭তম ওভারে এসে একের পর এক দুষ্পাঠ্য বলে ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন ওই ওভারে ১ রান দিয়ে তিনি থামান ৪০ বলে ২৭ রান করা কুশলকে কাটারের ফাঁদে ফেলে, সেবারও দারুণ এক ক্যাচ নেন শান্ত। পরের ওভারে এসে দিপেন্দ্রকেও আটকালেন একই ফাঁদে। ৩১ বলে ২৫ রান করা দিপেন্দ্রকে শুধু থামালেন না, দিলেন মেইডেন ওভার!
নেপালের যা একটু আশা ছিল মোস্তাফিজের ওই দুই ওভারেই সেটার সমাধি রচিৎ হয়ে গিয়েছিল। শেষ ওভার করতে এসে টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে সাকিব শুধু এপিটাফটাই লিখে দিয়েছেন। আসরে প্রথমবারের মতো উইকেট পেয়ে সাকিব সেই সাথে দলকেও দেখিয়ে দিয়েছেন সুপার এইটের পথ।