• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
  • " />

     

    গতবারের শোধ নিয়ে ফাইনালে ভারত

    গতবারের শোধ নিয়ে ফাইনালে ভারত    

    ২য় সেমি-ফাইনাল, প্রভিডেন্স (টস - ইংল্যান্ড/ফিল্ডিং)
    ভারত - ১৭১/৭, ২০ ওভার (রোহিত ৫৭, সূর্যকুমার ৪৭, হার্দিক ২৩, জর্ডান ৩/৩৭, রশিদ ১/২৫, টপলি ১/২৫)
    ইংল্যান্ড - ১০৩, ১৬.৪ ওভার (ব্রুক ২৫, বাটলার ২৩, আর্চার ২১, কুলদীপ ৩/১৯, অক্ষর ৩/২৩, বুমরাহ ২/১২)
    ফলাফল - ভারত ৬৮ রানে জয়ী
     


     

    গতবার এই ইংল্যান্ডের কাছেই অ্যাডিলেইডে ১০ উইকেটে হেরে ফাইনালের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়েছিল ভারত। এই ইংল্যান্ডকে নিয়েই রীতিমত ছেলেখলা করে এবার ফাইনালে ভারত। সেই ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বক্যাপে ফাইনালে কপাল পোড়ার পর ১০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ আবার এই ফরম্যাটে ফাইনালে গেলেন রোহিত শর্মারা।

    ১৭২ রানের লক্ষ্যে পাওয়ারপ্লেতেই যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। বাটলার শুরু করলেও পাওয়ারপ্লেতেই ফেরেন; সেটাও অক্ষর পাটেলের প্রথম বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। ১৫ বলে ২৩ রানে তিনি ফিরলে বুমরাহর ভেতরে ঢোকা বল মিস করে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন সল্ট। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে আর্ম ডেলিভারিতে এরপর বেইরস্টোর স্টাম্প উপড়ে ফেলেন অক্ষর।

    ৩৯ রান তুলতেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসা ইংল্যান্ড আর ম্যাচে ফিরতেই পারেনি। নিজের পরের ওভারে আবারও প্রথম বলে উইকেট পান অক্ষর; খেই হারিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মঈন। মাঝে ব্রুক একটু চেষ্টা করলেও এরপর এসে চেপে বসেন কুলদীপ। ২৫ রান করে ব্রুকের স্টাম্প উপড়ে ফেলার আগে পরে ঘূর্ণিতে ব্যতিব্যস্ত করে এক এক অংকের ঘরে ফেরান কারান, জর্ডানকে। এরপর ভুল বুঝাবুঝিতে লিভিংস্টোন ফিরলে ইংল্যান্ডের শেষ আশাটুকুও ওখানেই মিশিয়ে যায়। ১৫ বলে ২১ রান করে বুমরাহর শিকার হওয়ার আগে আর্চার শুধু ব্যবধানটাই কমিয়েছেন এরপর।

    এর আগে বৃষ্টি বাগড়া বাধিয়েছে বেশ কয়েকবার, তবে দেরিতে শুরু হলেও থেমে থাকেনি খেলা। টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ইংল্যান্ডের শুরুটাও তাই মনমতই হয়েছিল। রিস টপলির লেংথ বল মিস করে স্টাম্প খুইয়ে বলপ্রতি ৯ রান করে ভিরাট কোহলি ফিরলে ইংল্যান্ড তাদের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করতে চলেছে বলেই মনে হচ্ছিল। তবে রোহিত শর্মা আরও একবার আইসিসি ইভেন্টে জ্বলে উঠলেন। পাওয়ারপ্লেতে তার সহজাত খেলা খেলে পেসারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে অবশ্য আক্রমণে এসেই ঋষাভ পান্টকে থামিয়ে ম্যাচ সমতায় রাখেন স্যাম কারান।

    পাওয়ারপ্লেতে ভারত ৪৬ রান তোলার পর ৮ ওভারের মাথায় আবারও বৃষ্টির কারণে লম্বা বিরতি হলে ভারতও ম্যাচে ধীরে ধীরে কর্তৃত্ব বিস্তার করতে শুরু করে। রশিদ-লিভিংস্টোনদের সুইপ, র‍্যাম্প শটে দুজনেই কিছুটা নিষ্ক্রিয় করে ফেলেন। ফিফটি তুলে নিয়ে সেই সুবাদে আবারও ভয়ংকর হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিতে থাকেন রোহিত; ভারতের অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমির ইতিহাসে যা প্রথম। তবে পিচে বল কিছুটা ধরে আসতে শুরু করলে রশিদকে আক্রমণে ফেরাতেই ফল এনে দেন তিনি। তার লেগ স্পিন টেনে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে রোহিত থামেন ৩৯ বলে ৫৭ রানে। পরের বলেই উইকেটে আসা হার্দিককেও ফেরাতে পারতেন স্লিপে থাকা মঈনের হাতে ক্যাচটা গেলে। হার্দিক না ফিরলেও ফিফটির কাছাকাছি যেয়ে উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া সূর্যকুমার ঠিকই থামেন। বুদ্ধিদীপ্ত স্লোয়ারে লং অনে জর্ডানের ক্যাচে ৩৬ বলে ৪৭ রানে তাকে থামান আর্চার।

    দুই স্পিনার লাগাম টেনে ধরার পর হার্দিক চেষ্টা করেন জর্ডানের ওপর চড়াও হওয়ার। দারুণ দুটো ছয় মারার পর তৃতীয় বলেও একই কাজ করতে গেলে স্লোয়ারটা ঠিক উঠাতে পারেননি। লং অফে ক্যাচ দিয়ে ১২ বলে ২৩ রানে হার্দিক ফিরলে জর্ডানের পরের বলেই দুবে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ব্যাক টু ব্যাক হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করে না পারলেও দারুণ ওভারে জর্ডান তার দায়িত্ব পালন করেন ভালোভাবেই। ১৯-তম ওভারে দুই চারে জাদেজা রানটা বাড়িয়ে নেওয়ার পর শেষ ওভারে অক্ষর এক হাতে মেরেছিলেন দারুণ এক ছয়; তবে পরের বলেই তাকেও জর্ডান থামালে ভারত থামে ১৭১ রানে। সেই রসদ নিয়েই ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে ভারত।