পর্তুগাল-ফ্রান্স: হেভিওয়েট ক্ল্যাশে মুখোমুখি রোনালদো-এমবাপেরা
২০১৬ সালের ইউরো ফাইনালের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ফ্রান্সকে তাদের মাঠে কাঁদিয়ে সেবার ইউরো জিতেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রনালদ। নিজে মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন ইনজুরিতে কাঁদতে কাদতেই। তবে এডারের সেকেন্ডের জাদুতে সেবার বাজিমাত করেছিল পর্তুগাল। দুই দলের প্রতিযোগিতায় অবশ্য ফ্রান্স যোজন যোজন এগিয়ে। ইউরোর বেলায় আবার দুই দল লড়েছে সেয়ানে সেয়ানে। এবারও আশা করা যায় সেরকমটাই হবে। দুই দলের স্কোয়াড দুর্দান্ত, তারকায় ঠাঁসা। তবে সত্যি বলতে এখন পর্যন্ত কোনো দলই নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি এখন পর্যন্ত। হেভিওয়েটদের এই লড়াইয়ের আগে জেনে নেওয়া যাক দুই দলের রেকর্ড কেমন, ম্যাচে কার কেমন সম্ভাবনা।
হেড টু হেড রেকর্ড
পর্তুগাল |
ড্র |
ফ্রান্স |
|
সব প্রতিযোগিতায় |
৬ |
৩ |
১৯ |
ইউরোতে |
১ |
১ |
২ |
শক্তি ও দুর্বলতা
ফ্রান্স: ফ্রান্সের নামের পাশে ৩টি ক্লিন শিট আছে; তাই তাদের সবচেয়ে কম এগেইনস্ট এক্সজি। তবে ওপেন প্লে থেকে তাদের কোনো গোল নেই।
পর্তুগাল: এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি শট তাদের। তবে একটিও গোল পাননি রোনালদো।
পর্তুগাল সম্ভাব্য একাদশ
কস্তা, পেপে, দিয়াজ, ক্যান্সেলো, মেন্ডেস, ভিতিনহা, পালিনহা, ব্রুনো, বের্নার্দো, লিয়াও, রোনালদো
ফ্রান্স সম্ভাব্য একাদশ
ম্যানিয়ান, কুন্ডে, উপামেকানো, সালিবা, থিও, কান্তে, চুয়ামেনি, রাবিও, গ্রিজমান, থুরাম, এমবাপে
সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ফ্রান্স
বেলজিয়াম |
১-০ |
পোল্যান্ড |
১-১ |
নেদারল্যান্ডস |
০-০ |
অস্ট্রিয়া |
১-০ |
কানাডা |
০-০ |
সর্বশেষ ৫ ম্যাচে পর্তুগাল
স্লোভেনিয়া |
০-০ |
জর্জিয়া |
০-২ |
তুরস্ক |
৩-০ |
চেকিয়া |
২-১ |
আয়ারল্যান্ড |
৩-০ |
ফ্রান্সের ফর্ম ও পরিকল্পনা
ওপেন প্লেতে এখন পর্যন্ত কোনো গোল করেনি ফ্রান্স। দলে এতো তারকা থাকা সত্ত্বেও এমন নাজেহাল হওয়ার কথা হয়ত কেউ ভাবেনি। সেটার জন্য অনেকাংশে দায়ী এমবাপের জায়গা। গোলের জন্য তার ওপর নির্ভর করলেও স্ট্রাইকারের জায়গাটাই তিনি খেলেন না। উইং নির্ভর খেলা খেলছেন বিধায় গোলের সুযোগ তৈরির জায়গাতে যেতে পারছেন না। যেটার কারণে মিডফিল্ড ও আক্রমণভাগের মধ্যে যোগসাজশ হয়ে উঠছে না সেভাবে।
গত ম্যাচে ব্যাপারটা অনেকাংশেই সলভ করেছেন দেশম। গ্রিজমান ডানপাশে খেলেছেন। তিনি মেসির মতো ইনভার্টেড হয়ে এসেছেন। ফ্রান্সের জন্য আশার বিষয় - গত ম্যাচে শেষদিকে কোলো মুয়ানি নেমে অনেক ভালো খেলেছেন। মাঠটা নিজের জন্য প্রসারিত করে নিয়েই খেলা বানিয়ে নিচ্ছেন।
ফ্রান্স ওপেন প্লে থেকে কোনো গোল দেয়নি বটে, আবার হজমও করেনি। পুরো আসরেই একটা গোল হজম করেছে, সেটাও ছিল পেনাল্টি থেকে। টুর্নামেন্টের সেরা ডিফেন্স পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাদেরই।
পর্তুগালের ফর্ম ও পরিকল্পনা
পর্তুগিজদের সবচেয়ে চিন্তার জায়গা রোনালদোকে কাজে লাগাতে না পারা; আক্রমণে রোনালদো দলের সাথে এককাট্টা হতে পারছেন না একদম। ২০টা শট নিয়েও গোল না পাওয়াটা ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতার নামের পাশে বেশ বেমানান।
মার্তিনেজের ফর্মেশনটা এমন যেখানে তিনি রোনালদোকে আবার বসাবেন না। তার জায়গা জোটা বা গঞ্জালো রামোস খেলতে পারতেন; কিন্তু তিনি সেটা করবেন না।
মার্তিনেজ ফর্মেশ নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন, ৪-৩৩, ৪-২-৩-১, ৩-৪-৩ এ খেলিয়েছেন দলকে।
ক্রস নির্ভর খেলায় গেলে তুরুপের তাস হবেন মেন্দেস আর ক্যান্সেলো। ওদিকে লিয়াও বা সিলভা বেশ নিষ্প্রভ। তাদের ম্যাচে কাজে লাগানোটা হবে চ্যালেঞ্জ। রোনালদোর কাজ মাঝে থাকা হলেও বাকিরা সেটার সুবিধা নিতে পারছেন না। টুর্নামেন্তে সবচেয়ে বেশি ক্রস পর্তুগালের। তবুও সেখান থেকে গোল বের করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। ফ্রান্সের বিপক্ষে এই জায়গায় উন্নতি না করলে সেরা রক্ষণভাগের বিপক্ষে গোল বের করাটাই কঠিন হয়ে যাবে তাদের জন্য।