কেন দুই ঘণ্টা পর বাতিল হলো আর্জেন্টিনার গোল?
অলিম্পিকের এবারের আসর বসেছে প্যারিসে। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে আজ। কিন্তু শুরু হওয়ার আগেই ছেলেদের ফুটবল ইভেন্টে আর্জেন্টিনা-মরক্কো ম্যাচে যে কান্ড হলো, সেটা আলাদা করে মনে রাখতে বাধ্য করবে এবারের অলিম্পিককে। কারণ এমন নজির ফুটবলের ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ!
মরক্কানদের বিপক্ষে ২-২ গোলে সমতায় থেকে মাঠ ছেড়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেঁত এতিয়েনে দুই ঘণ্টা পর জানা গেল, আর্জেন্টিনার সমতাসূচক সেই গোল বাতিল! কেন এমনটা হলো?
নির্দিষ্ট সময়ের খেলার পর মরক্কো তখন ২-১ গোলে এগিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা সময়ে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৫ মিনিট। বেশ ইন্টারেস্টিং, না? গত ফিফা বিশ্বকাপ কথা মনে করতে পারেন। ৯০ মিনিটের মধ্যে যতক্ষণ সময় নষ্ট হবে, ঘড়ি ধরে ঠিক ততক্ষণ সময় যোগ হবে অতিরিক্ত সময়ের খেলায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে আর্জেন্টিনার হয়ে ক্রিস্টিয়ান মেদিনা হেডে সমতাসূচক গোলটা করেছিলেন অতিরিক্ত সময়ের ১৬ মিনিটের মাথায়।
কিন্তু চমকে দেয়া পার্টটা দেখা গেল সেই গোলের পর; গ্যালারী থেকে উড়ে আসে পানির বোতল। রীতিমতো বোতল বৃষ্টি যাকে বলে। নেপথ্যে মরক্কোর সমর্থকরা। প্রতিবাদের কারণ? বরাদ্দকৃত সময় ১৫ মিনিট হলেও গোল হয়েছে ১৬ মিনিটে। সেই গোল কেন এলাও করলেন রেফারি? ক্ষোভের চোটে মরক্কোর কিছু সমর্থক মাঠেও ঢুকে পড়েছিলেন। এই হট্টগোলের জন্য বন্ধ হয় খেলা। এবং সেই ম্যাচ শুরু হয়েছিল দুই ঘণ্টা পর। এমন কিছু যে অভূতপূর্ব, সেটা বলাই যায়।
দর্শকের তোপের মুখে খেলা বন্ধ থাকার পর দুই দল মাঠে নেমেছিল ৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের জন্য। কিন্তু মাঠে নামার আগেই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় আজেন্টিনা। ভিএআর-এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসে; আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি বাতিল অফসাইডের জন্য।
কীভাবে অফসাইড ডাকলেন রেফারি? ভিএআর প্রযুক্তি জানায় বদলি আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ব্রুনো আমিনোর পায়ের পাতার অর্ধেক ছিল অফসাইডে। সেই সিদ্ধান্তেই পিছিয়ে ২-২ থেকে ২-১৪ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। বাকি থাকা সাড়ে তিন মিনিটের খেলায় আর ফিরতে পারেনি আলবিসেলস্তে তরুণরা।
মাঠে দর্শকদের অনুপ্রবেশ, বিশৃঙ্খলা; অলিম্পিকের মতো বড় ইভেন্টের সাথে একেবারেই তো বেমানান। এ নিয়ে বেশ ক্ষেপেছেন আর্জেন্টিনা কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো। রাখঢাক না রেখে সোজাসুজি বলেছেন, যেন সার্কাস দেখেছেন তিনি। মাশ্চেরানো বলেন, ‘আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে বড় সার্কাস এটা। একটা গোলে রিভিউ করতে তারা কেন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় নিল, আমার অজানা। এমন ঘটনা পাড়ার টুর্নামেন্টেও ঘটে না। এটা লজ্জার।’
দুই ঘণ্টা বিরতির পর খেলা আবার চালু করাও পছন্দ হয়নি তার। বলেছেন, ‘মেদিনার গোলে যদি অফসাইড হয়, তবে ম্যাচটি সেভাবেই চালিয়ে যাওয়া যেত। দেড় ঘণ্টা বন্ধ রেখে আবারও তিন মিনিট খেলার প্রয়োজন ছিল না।’