পিন্ডিতে বাংলাদেশের ইতিহাস
২য় টেস্ট, রাওয়ালপিন্ডি (টস - বাংলাদেশ/ফিল্ডিং)
পাকিস্তান - ২৭৪ ও ১৭২ (সালমান ৪৭, রিজওয়ান ৪৩, শান ২৮, হাসান ৫/৪৩, রানা ৪/৪৪, তাসকিন ১/৪০)
বাংলাদেশ - ২৬২ ও ১৮৫/৪ (জাকির ৪০, শান্ত ৩৮, মুমিনুল ৩৪, সালমান ১/১৭, আবরার ১/৪০)
বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ; পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জিতল তারা। শুধু তাই নয়, সিরিজ জয় এলো পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে ধবলধোলাই করে। প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর তৃতীয় দিনে ব্যাট হাতে যখন ২৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ, তখন জয় তো মনে হচ্ছিল দূর আকাশের তারা; প্রথম টেস্ট জয়ের আনন্দ ভেস্তে লজ্জার আশঙ্কাই তখন বাংলাদেশের শিবিরে চেপে বসেছিল। সেখান থেকে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে জয়টা শান্ত-বাহিনী পেল দাপটের সাথে। জয়টা বাংলাদেশ পেল সম্মিলিত প্রচেষ্টায়; জয়ের উপাখ্যানের পাতায় পাতায় বাংলাদেশ পেল আশাজাগানিয়া এক এক অধ্যায়ের সন্ধান।
এই জয়ের সন্ধানেই গতকাল ছুটতে থাকা জাকির আজও একই মেজাজে খেলার চেষ্টা করছিলেন; অন্যদিকে সাদমান ছিলেন আপন ছন্দে। সকালে সুইং মোকাবেলা করতে জাকির যে আজও একই পথে হাঁটবেন সেটা পাকিস্তানের বোলাররাও আঁচ করতে পেরেছিলেন। থিতু হয়ে থাকা জুটি ভাঙতে পাকিস্তানকে করতে হত বিশেষ কিছু। মীর তাই করলেন, দুর্দান্ত এক লেংথ ডেলিভারিতে জাকিরকে বোকা বানিয়ে উপড়ে ফেললেন স্টাম্প। ৩৯ বলে ৪০ রানে থাকা জাকির ফেরার পর বাংলাদেশের লক্ষ্য তাড়ার গতিও কমে আসে কিছুটা। তবে সেই সাথে লক্ষ্য উৎরিয়ে যাওয়ার প্রেরণাও টের পাওয়া যাচ্ছিল ভালোমতোই। পেসারদের সামলানোর পর আরেক দিকে সালমানকে দিয়ে বল করানো হলে উইকেটে আসা শান্তও ধীরে ধীরে নিজের জায়গা বুঝে নেন।
লাঞ্চর আগ দিক দিয়ে খুররম শাহজাদের হালকা লাফিয়ে ওঠা বলে বিচলিত হয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাদমান যখন ২৪ রানে থামেন তখনও বাংলাদেশের রান ৭০। পাকিস্তান তাই আশা দেখছিল তখনও। তবে তাদের সেই আশা ভেস্তে দিয়ে ১২২ রানে থেকে দলকে নিয়ে লাঞ্চে যান শান্ত-মুমিনুল জুটি। ধীর লয়ে এগুতে থাকা বাংলাদেশের বাঁহাতিদের মোকাবেলায় লাঞ্চের পর তাই স্পিনারদের নিয়ে ছক কষেন অধিনায়ক শান।
তাতে তিনি কিছুটা সফল হন বটে। সালমানের লেগ স্টাম্পে ফেলা বলে ব্যাট লাগাতে গিয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক শান্ত। ৩৮ রান শেষে শান্ত ফিরলে আবারও স্পিনারদের ফাঁদেই এবার ধরা দেন মুমিনুল। আবরারকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ৩৪ রানে থামেন মুমিনুল। এরপর অবশ্য আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিক। উইকেটে এসে সাকিব একটু চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলেও এরপর বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি সামলে ম্যাচ জয়ী শটটা খেলেছেন তিনিই। সাকিবর চারে নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়।