কিক-অফের আগেঃ জার্মানদের দুশ্চিন্তা রক্ষণ
ক্রোয়েটদের অনুপ্রেরণা ফ্রান্সের স্মৃতি
১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে গোটা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। তৃতীয় হয়ে ফিরেছিল তারা।
তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ওই ম্যাচে প্রাক ডি ফ্রান্সে হল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ক্রোয়েটরা। সেই মাঠেই আজ আবার খেলতে নামছে তারা।
একই মাঠে খেলার সুখস্মৃতিই শুধু নয় তুরষ্কের বিপক্ষে অতীত ইতিহাসটাও ক্রোয়েশিয়ার পক্ষেই কথা বলছে। তাছাড়া অনেকের মতেই নিজেদের ইতিহাসের সেরা দল নিয়ে এবার ইউরো খেলতে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। মাঝমাঠে রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদ্রিচ, কোভাচিচের সাথে আছেন বার্সেলোনার ইভান রাকিটিচ। আর আক্রমণভাগে জুভেন্টাসের মারিও মাঞ্জুকিচদের নিয়ে অনেক দূর যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে ক্রোয়েটরা।
তবে তুরস্কের বিপক্ষে মদ্রিচ, রাকিটিচদের অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়। ২০০৮ সালের ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে তুরষ্কের কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার।
সেই তুরস্ক দলের কোচও ছিলেন এই ফাতিহ তেরিমই। তখনকার তরুন মিডফিল্ডার আর্দা তুরান এখন সেই দলের অধিনায়ক। ৩ বার ইউরো খেলা তুরষ্ক প্রতিবারই ভালো করেছে আগেরবারের তুলনায়। ‘৯৬ তে গ্রুপ পর্ব, ২০০০ এ কোয়ার্টার আর সবশেষ ২০০৮ এ সেমিফাইনালে উঠেছিল তুরস্ক। সমান্তর ধারা বজায় রাখতে এবার যেতে হবে ফাইনাল! অমন অসম্ভব স্বপ্ন এখনই না দেখলেও অন্তত কখনই ইউরোর প্রথম ম্যাচ না জিততে পারার গেরোটা খুলতে চাইবেন তার্কিশ সমর্থকেরা।
লন্ডভন্ড হবার ভয় নর্দানারদের!
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের পর বড় কোনো আসরে খেলার সুযোগ হয়নি নর্দান আয়ারল্যান্ডের। ৩ বার বিশ্বকাপে খেললেও এটিই প্রথম ইউরো। বাছাইপর্বের চমকই বলতে হবে নর্দান আয়ারল্যান্ডকে। ৩০ বছর পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে জায়গা পাওয়ায় উৎসব লেগেছে ওই দেশে। সেই আঁচ লেগেছে ফ্রান্সেও! প্রায় চল্লিশ হাজার সমর্থক এরই মাঝে পৌঁছে গেছে সেখানে।
গ্রুপ ‘সি’ এর ম্যাচে আজ রাত দশটায় নর্দান আয়ারল্যান্ডের প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড। তবে নর্দান আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়রা মূলত প্রতিপক্ষ মানছেন এই মৌসুমে দেশ ও ক্লাবের হয়ে ৪২ গোল করা পোলিশ স্ট্রাইকার লেভানডফস্কিকে।
এমনিতেই লেভানডফস্কি যে কোনো প্রতিপক্ষ দলের জন্যই ত্রাসের নাম। সেখানে নর্দান আয়ারল্যান্ড তাঁকে নিয়ে আলাদা করে ভাববে- এটাই স্বাভাবিক। ডিফেন্ডার গ্যারেথ ম্যাকঅলি নিঃসংকোচেই স্বীকার করে নিলেন সে কথা। সোয়ানসি সিটির এই মিডফিল্ডার অবশ্য শেষে খানিকটা সতর্ক বার্তাও দিলেন পোলিশদেরকে, “লেভান্ডনফস্কি একাই আসলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখে। তবে আমরা তাঁকে ঠেকাতে চাই। আর সাথে পোলিশ ডিফেন্সেরও পরীক্ষা নিতে চাই। শুধুমাত্র জায়গা পূরণ করতে তো আর ইউরো খেলতে আসিনি আমরা!”
জার্মানির সমস্যার নাম ডিফেন্স
মার্কো রয়েসের খেলতে না পারার কথা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সপ্তাহে আন্টনিও রুডিগারও ইনজুরিতে পড়ায় জার্মান দলের রক্ষণের সঙ্কটটা আরেকটু গভীর হয়েছে। আনফিট থাকা সত্ত্বেও তাই মাঠে নেমে পড়তে হতে পারে ম্যাটস হামেলসকে। শেষ মুহুর্তের ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে তার জায়গায় দেখা যেতে মুস্তাফি অথবা বাডস্টুবারকে।
রক্ষণের মতো আক্রমণভাগে ইঞ্জুরি সমস্যা না থাকলেও, রয়েছে একজন পোক্ত স্ট্রাইকারের অভাব। জোয়াকিম লো এর হাতে এখনেও তাই বাছাই করার সুযোগ কমই। শেষ পর্যন্ত ফলস নাইন হিসেবে খেলতে পারেন গোটশে।
জার্মানি দলের সমস্যার সুযোগে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের আটকে দেয়ার ফাঁদ আটছে ইউক্রেন। এবারের ইউক্রেন দলের ভারসাম্যও বেশ ভালো, সাথে দলে রয়েছে মেধাবী কিছু তরুন খেলোয়াড়ও।
বরবরই যে কোনো টুর্নামেন্টের ফেভারিট জার্মানি এবারের ইউরো খেলতে এসেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে। এমন প্রতাপশালী দলের বিপক্ষে বড় একটা অঘটন ঘটিয়ে নিজেদের আগমনী বার্তা জানান দিতেই পারে ইউক্রেনের তারুন্য!