সুইডেনকে রক্ষা করলেন ইব্রাই
দুদলের কেউই সুযোগ কম পায়নি। সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে এখন পর্যন্ত এই আসরের সবচেয়ে হাইস্কোরিং ম্যাচটা হয়তো দেখা যেত। ইব্রা, লংদের মিসের মহড়ায় তাই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি কারোই। এত সুযোগ হাতছাড়া করে ১-১ গোলের ড্রতেই শেষ হল রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যকার ম্যাচটি।
রেফারির বাঁশির পরপরই দুদলের রক্ষণাত্মক মনোভাব চোখে পড়লেও ঘড়ির কাঁটার সাথে সাথে দুদলই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে। ১৭ মিনিটের সময় রবি ব্রেডির কর্ণারে মাথা ছোঁয়ান কিরেন ক্লার্ক। জন ও’শের পথে আগিয়ে দেওয়া বলটিতে প্রাক্তন ম্যান ইউনাইটেড সেন্টার ব্যাক পা হড়কে শট করতে ব্যর্থ না হলে নিঃসন্দেহে এগিয়ে যেত মার্টিন ও’নিলের শিষ্যরা।
এর কিছু পরেই আইরিশ কিপার র্যান্ডলফের বাজে ক্লিয়ারেন্সে বল সুইডিশ মিডফিল্ড হয়ে ইব্রার পায়ে আসলেও ক্লার্ক এবং ও’শের দক্ষ ডিফেন্সে ইব্রাকে শট করা থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয় তারা। এর ঠিক পরপরই খুব সম্ভবত প্রথমার্ধের সেরা খেলোয়াড় আইরিশ উইঙ্গার রবি ব্রেডির বাঁপ্রান্ত থেকে ভেতরে ঢুকে ডান পায়ের আগুনে শট কয়েক ইঞ্চির জন্য বারের উপর দিয়ে উড়ে নেটের ওপরাংশে গিয়ে পড়ে।
সুইডিশদের দিশেহারা করে দেয়া চাপে রেখে এবং দর্শকসারিতে সবুজ আইরিশ সাগরের হুঙ্কারে বারংবার কেঁপে ওঠা ইব্রাদের ডিফেন্স সবচেয়ে বড় বাঁচা বাঁচে ৩২ মিনিটে, যখন মিডফিল্ডার হেন্ড্রিক ও স্ট্রাইকার লংয়ের অসাধারন বোঝাপড়ার পর ফেরত পাওয়া বলে হেন্ড্রিকের ২৫ গজ দূর থেকে দূরপাল্লার এক দুর্দান্ত শট আইজাকসনকে পরাস্ত করলেও বারে লেগে ফিরে আসে।
আয়ারল্যান্ডের পরবর্তী সুবর্ণ সুযোগ আসে ৪১ মিনিটে, আবারো সেই ব্রেডির ক্রস একটুর জন্য পৌঁছায়নি শেন লংয়ের পায়ে। এজন্য অবশ্য সুইডিশ লেফটব্যাক মার্টিন অলসনের কৃতিত্বটাই বেশি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারো চিরচেনা রূপে ফেরে আইরিশরা। ৪৬ মিনিটে সেই হেন্ড্রিকেরই আরো একটি জোরালো শট বাঁচিয়ে দেন আইজাকঅসন। অবশেষে দেখা মেলে গোলের। চমৎকারভাবে ডানপ্রান্তে এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ডিবক্সে শেমাস কোলম্যানের করা ক্রসটি দৃষ্টিনন্দন হাফভলিতে বল জালে জড়ান নরউইচ সিটি তারকা ওয়েস হুলাহান।
এরপর পরই সুইডিশ ফরওয়ার্ডদের তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছিল, তারা যেন গোল খেয়ে গোল শোধ করার আশায়ই বসে ছিলেন। ৭১ মিনিটের মাথায় চালস্ট্রুম, গ্রাঙ্কভিস্টের পা ঘুরে বাঁপ্রান্ত থেকে ইব্রার করা ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন কিরেন ক্লার্ক। গোলের মিনিটখানেক পরেই ডানপ্রান্তে স্পেস পাওয়া হেন্ড্রিকের শট ফিরিয়ে দলকে সমতায় রাখেন আইজাকসন।
সুইডেনের পরবর্তী সুযোগ আসে তাদের দেবতা ইব্রার পায়ে। পুরো ম্যাচ বাঁ প্রান্ত দাপিয়ে বেড়ানো মার্টিন অলসনের চমৎকার ক্রস মাত্র ছয় গজ থেকে মিস করেন ইব্রা। ‘সলিড টাচ’ হলে সুইডিশরা যে কামব্যাক সম্পন্ন করে ফেলতে পারতো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শেষদিকে দ্রুতগতির দুই উইঙ্গার ম্যাকগিডি ও ম্যাকক্লেইনের গতি, এমনকি রবি কিনের উপস্থিতিও সুইডেন ডিফেন্সকে বিপাকে ফেলতে পারেনি। তাই পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয় দু’দলকে।