কিক অফের আগেঃ ইতালি, স্পেনের একই পরীক্ষা!
ইতালি আর স্পেনের লড়াইটা আজ প্রায় একই রকম! সুইডেনের চেয়ে ইতালির ভয় বেশি ইব্রাকেই। অন্যদিকে তুর্কি সেনাপতি আর্দা তুরানকে আটকে দিতে পারলেই কাজটা সহজ হয়ে যাবে স্পেনের জন্য। সন্ধ্যা ৭টা আর রাত দশটার মাঝের ক্রোয়েশিয়না-চেক প্রজাতন্ত্রের খেলাটাও কম উপভোগ্য নয়।
ইতালি আর ইব্রা দিয়ে শুরু!
শুক্রবারের সন্ধ্যায় আজ ইউরোর প্রথম ম্যাচটার দুই দল আসলে গুণগত দিক থেকে পুরোপুরি একে অন্যের বিপরীত। দল হিসেবে কতোটা শক্তিশালী হতে পারে ইতালি সেটা বোঝা গিয়েছে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কন্তের দলের পারফরম্যান্স দেখেই। অন্যদিকে নিজেদের মহাতারকা ইব্রাহিমোভিচের ওপর যেন একটু বেশিই নির্ভরশীল সুইডেন।
ইতালির সামনে চ্যালেঞ্জ আজ যত না সুইডেন তার চেয়ে বেশি ইব্রাহিমোভিচই। কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এই দু দলের শেষ দেখা হয়েছিল ২০০৪ সালের ইউরোতে। সে সময়ের ইতালি দলের একমাত্র বুফনই টিকে আছেন এখনও। ইব্রাহিমোভিচের বিপক্ষে সেই স্মৃতিটা মোটেও সুখকর নয় ইতালির গোলরক্ষকের। ৮৫ মিনিটে ব্যাক ফ্লিকে করা দারুণ এক গোলে ইতালি-সুইডেন ম্যাচ ১-১ এ সমতায় আনেন ইব্রা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুইডেন পরে রাউন্ডে গেলেও, গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় ইতালিকে।
বেলজিয়ামের বিপক্ষে অমন জয়ের পর অবশ্য পুরনো সেই স্মৃতি তেমন শঙ্কার কারন না হওয়াই স্বাভাবিক ইতালি দলের জন্য। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডে সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় এই ম্যাচেও জয়হীন থাকলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার সমীকরণ অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে সুইডেনের জন্য। তবে ইতালিকে হারান তো আর মুখের কথা নয়! ইতালির তুলনায় সুইডেন তো পুঁচকেই। তবে যে দলে ইব্রার মতো তারকা থাকে, স্বপ্ন তারা দেখতেই পারে!
আজকের লড়াইটা তাই ইব্রা আর ইতালিরই।
সার্নার জন্য ক্রোয়েশিয়া
ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট ব্যাক। শুধু নিজের দেশ নয়, পূর্ব ইউরোপেরই হিরো তিনি। ক্রোয়েশিয়ার এই অধিনায়ক খেলেছেন তুরস্কের বিপক্ষে ম্যাচেও। মদ্রিচের গোলে ১-০ গোলে পাওয়া জয়ের আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেনি সার্নার। ম্যাচের পরদিনই পিতার মৃত্যুৎ সংবাদে ফ্রান্স থেকে উড়ে যান নিজ দেশে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের পরই আবার যোগ দেন দলে। এবারের ইউরোর পরই তুলে রাখবেন বুটজোড়া। নিজের শেষ ইউরো স্মরণীয় করে রাখতে চেষ্টার কমতি নেই সার্নার। সাথে পুরো দলও নিজেদের ‘হিরো’ কে বিদায় দিতে চায় ইউরোর সাফল্য দিয়েই। আজকের চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষের ম্যাচে জয় দিয়েই সার্নার শেষের শুরুটা মধুর করতে চাইবে ক্রোয়েশিয়া।
অন্যদিকে আগের ম্যাচে একটুর জন্য স্পেনকে আটকে দিতে না পারার হতাশাটা এই ম্যাচেই ঘোচাতে চায় রসিস্কির চেক প্রজাতন্ত্র। এই ম্যাচে জয়টা যে তাঁদেরই বেশি জরুরী!
স্প্যানিশদের সামনে তুর্কি সেনাপতি
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষের ম্যাচটা সব দিক দিয়েই হতাশার ছিল তুরস্কের জন্য। গোল পোস্ট বাধা হয়ে না দাড়ালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারটা আসতে পারত আরও বড় ব্যবধানেই। হারের চেয়ে ফাতিহ তেরিমের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারন হল খেলোয়াড়দের মাঝে সমন্বয়হীনতা। দলের অধিনায়ক আর্দা তুরানও সেই ম্যাচে ছিলেন নিষ্প্রভ। গত দুইবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের বিপক্ষে পয়েন্ট আদায় করতে না পারলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হতে পারে ২০০৮ এর সেমিফাইনালিস্টদের।
ডুবতে বসা তুরস্ক দলটার হাল টেনে ধরার জন্য এর চেয়ে বড় সুযোগ হয়ত পাবেন না আর্দা তুরান। দীর্ঘ দিন ধরে খেলছেন লা লিগায়। অ্যাটলেটিকো আর বার্সার খেলোয়াড়দের সাথে বন্ধুত্ব তো আছেই, অভ্যেস আছে রিয়ালের বিপক্ষে খেলারও। স্পেনকে ধরাশায়ী করতে আর্দা তুরানের দিতেই আসলে তাকিয়ে আছে পুরো তুরস্ক।
অন্যদিকে পিকের শেষ মুহুর্তের গোলে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়টা স্বস্তির হলেও, আক্রমণে অভিজ্ঞ একজন স্ট্রাইকারের অভাবটা স্পেন দলে স্পষ্ট। মোরাটা, নলিতোর মতো তরুণ খেলোয়াড়রা তোরেস-ভিয়ার মতো বিধ্বংসী গোল স্কোরারে পরিণত না হলে ইউরোতে দুঃসময় পার করতে পারে স্পেনকে।