তবুও ক্রিকেট এবং....
ছেলেবেলায় বাড়ির পেছনের আঙ্গিনায় যখন খেলতেন ক্রিকেটটা, নিয়ম ছিল সরাসরি বাগানের বাইরে মারলে আউট। উঠিয়ে শট খেলাটা তাই নিষিদ্ধই ছিল ঐসময়। আরেকটা অলিখিত নিয়ম ছিল বাড়িতে ক্রিকেট খেলার এই ব্যাপারটা গোপন রাখতে হবে স্কুলের বন্ধুদের কাছে, কারণ ক্রিকেটকে খুব একটা ভালো চোখে দেখা হত না তখন আয়ারল্যান্ডে। বরং ধনীদের উদ্ভট শখ হিসেবেই গণ্য হত খেলাটা। কে ভাবতে পেরেছিল এরকম একটা পরিবেশে ক্রিকেট খেলে বেড়ে ওঠা ২৭ বছর বয়সী এই আইরিশই ভেঙ্গে দেবেন বিশ্বকাপে দ্রুততম শতকের রেকর্ড?
২রা মার্চ,২০১১। বিশ্বকাপের ‘গ্রুপ বি’-এর একটি ম্যাচে ব্যাঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে শুরুতে ব্যাট করে ৩২৭ রানের পাহাড় গড়ে ইংল্যান্ড। যার মানে দাঁড়াচ্ছে জিততে হলে বিশ্বকাপে রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড গড়তে হবে আয়ারল্যান্ডকে। ম্যাচটা ওখানেই শেষ বলে মত দিয়েছিলেন তখন অনেকে। তার পরও যাঁদের মনে কিঞ্চিত সন্দেহ ছিল, সেটাও দূর হয়ে গেল ১১১ রানে আইরিশরা ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর।
কেভিন ও’ব্রায়ানের প্রদর্শনীটা শুরু হয় এখান থেকেই। ব্যাটিং পাওয়ার-প্লে নিয়ে ৬২ রান তুললেন ঐ পাঁচ ওভার থেকে। সেই যে শট খেলার একটা ধারা তৈরি হয়ে গেল, অব্যাহত ছিল ৪৯তম ওভারে ব্যক্তিগত ১১৩ রানে তিনি আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত। বেধড়ক মার খেয়েছেন গ্রায়েম সোয়ান বাদে প্রত্যেক ইংলিশ বোলার। কেভিনের মারা চারের সংখ্যা ছিল ১৩। আর ছোটবেলায় তুলে মারতে ভয় পাওয়া এই ব্যাটসম্যান সেদিন ৬ বার বাতাসে ভাসিয়ে সীমানাছাড়া করেছেন বলকে।
অর্ধশতক তুলেছিলেন ৩০ বলে। আর ৫০ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে গড়েন বিশ্বকাপে দ্রুততম শতকের রেকর্ড। লক্ষ্য থেকে মাত্র ১১ রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। তবে অবিশ্বাস্য এ ইনিংসকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে দেননি তাঁর সতীর্থরা। বিশ্বকাপে রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়ে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।