আইসল্যান্ডের "একটুর" স্বপ্নভঙ্গ
ঘড়িতে তখন ৮৭ মিনিট। ইউরোতে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই রোনালদোর পর্তুগালকে আটকে দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা আইসল্যান্ডের সামনে তখন বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম জয় হাতছানি দিচ্ছে। হাঙ্গেরি স্ট্রাইকার নিকোলিচের নিচু ক্রস নিরূপায় আইসল্যান্ড ডিফেন্ডার সেভারসনের পায়ে লেগে ঢুকে গেলো আইসল্যান্ডের জালে। উল্লাসে ফেটে পড়লো হাঙ্গেরি সমর্থকেরা। আর ওদিকে আইসল্যান্ড সমর্থকদের হতাশা দেখে কে বলবে, তুলনামূলক ম্যাড়ম্যাড়ে এক প্রথমার্ধের পর এভাবে জমে উঠবে গ্রুপ এফ-এর ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজের’ ম্যাচটি!
শুরু থেকে রক্ষণাত্মক মনোভাবে শুরু করা দুই দলের খেলায় ছিল না কোনো গতি। খেলার প্রথম সুযোগ আসে ৩২ মিনিটে, যখন হাঙ্গেরি ডিফেন্ডার কাদারের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে গুডমুন্ডসনের নেয়া শটটি ফিরিয়ে দেন বর্ষীয়ান হাঙ্গেরিয়ান কিপার গ্যাবর কিরাই। ম্যাচের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত আসে ৩৯ মিনিটে। ডান প্রান্ত থেকে ভেসে আসা কর্ণার হাত থেকে ফসকে গেলে তা দখলে নিতে যেয়ে আইসল্যান্ড কাপ্তান গানারসনকে ফেলে দিয়ে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি উপহার দেন সেই কিরাই। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করে আইসল্যান্ড সমর্থকদের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার পথে এক ধাপ এগিয়ে দেন সোয়ানসি সিটির গিলফি সিগুর্ডসন।
দ্বিতীয়ার্ধে হাঙ্গেরির অগণিত আক্রমণ বারংবার প্রতিহত করতে থাকা আইসল্যান্ড গোল খেয়ে বসে ৮৭ মিনিটে। নিকোলিচের ক্রসটি ক্লিয়ার করতে যেয়ে বল নিজ জালে পাঠিয়ে দেন ডিফেন্ডার সেভারসন। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে, অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে ডিবক্সের ঠিক সামনে ফ্রিকিক পায় আইসল্যান্ড। সেখান থেকে সিগার্ডসনের ফ্রিকিক হাঙ্গেরি ওয়ালে লেগে ফিরে আসে আইসল্যান্ড কিংবদন্তী ও অবসর ভেঙ্গে ফেরা তারকা আইডার গুডিয়নসনের পায়ে। বর্ষীয়ান এই তারকার শটটি এক হাঙ্গেরি ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে অল্পের জন্য কিয়াইয়ের গোলের বাইরে দিয়ে যায়। অতিরিক্ত সময় পার হয়ে যাওয়ায় শেষমেশ কর্ণার নেওয়ার সুযোগও পায়নি আইসল্যান্ড। এই ড্রয়ে দুই ম্যাচ শেষে আইসল্যান্ডের পয়েন্ট দুই, এখনো পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে তারা। আর দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে পুসকাসের উত্তরসূরিদের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া মোটামুটি নিশ্চিতই বলা চলে।