শত্রু কে? প্রতিপক্ষ, নাকি...
রসদ ও ক্রীড়াকৌশলে ঘাটতির নামমাত্র না থাকা সত্ত্বেও নিজেদেরকে শুধুমাত্র ভারত ও শ্রীলঙ্কার উপরে কেন রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো, সেটা একটা রহস্যই। উল্লেখ্য, সম্প্রতি খুবই খারাপ সময় পার করছে এ দল দুটো।
আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজের দলের অবস্থা সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যটা আসলেই ভ্রুকুটি জাগানোর মত। “আমরা ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকব। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যে ৪-১-এ পিছিয়ে আছে, আর আমার মনে হয়না ভারত গত তিন মাসে একটা ম্যাচও জিতেছে অস্ট্রেলিয়ায়। আমাদের আত্মবিশ্বাসের মাত্রাটা হয়তো তাদের তুলনায় একটু বেশি থাকবে।”
গত ১৫ মাসে আটটি ওয়ানডে সিরিজের মধ্যে মাত্র দুটিতে হেরেছে যার দল, তাঁর মুখে এমন কথা শুনে নিশ্চয়ই আর সবার মত অবাক হয়েছেন আপনিও। শুধু জয়ের পাল্লা দিয়ে মেপেই নয়, যেকোনো ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত ১৫ মাসে ২৩টি শতক এসেছে তাদের ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে। বোলিং লাইন-আপটা প্রোটিয়াদের বরাবরই বিশ্বমানের। বেশ কয়েকটি পজিশনেই আছে সুযোগ্য বিকল্প।
‘মিডল অর্ডার’ নিয়ে পুরনো দুশ্চিন্তাটা আপাতত নেই। গেল পনেরো মাস ও ৩০ ম্যাচের সময়সীমার মাঝে মিডল অর্ডারে এবি ডি ভিলিয়ার্সের চারটি ও ফ্যাফ ডু প্লেসিসের ব্যাট থেকে এসেছে তিনটি শতক। গত রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডেভিড মিলারের ১৩০ রানের হার না মানা ইনিংসটি এসেছিল পাঁচ নম্বরে নেমে। আর ‘ওপেনিং’-এ হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি ককের জুটিটাকে তো অনেকে বলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সফলতম উদ্বোধনী জুটি। উল্লেখ্য সময়টুকুর মধ্যে আমলা আটটি ও ডি কক করেছেন পাঁচটি ‘সেঞ্চুরি’।
‘পেস ডিপার্টমেন্ট’-এ স্টেইন, মরকেল, ফিলান্দার ত্রয়ী বিশ্বের যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। এমনকি কাইল অ্যাবট, ওয়েইন পারনেলদের মত ‘রিজার্ভ’ পেসাররাও ক্ষমতা রাখেন একটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার। স্পিন আক্রমণে ইমরান তাহির ও অ্যারন ফাঙ্গিসোরা যুক্ত হওয়ায় এ দপ্তরেও আর আগের দুর্বলতা নেই প্রোটিয়াদের।
স্বভাবতই পুরনো প্রশ্নটা চলে আসছে নতুন করে। তবে কি দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ স্নায়ুচাপে ভুগছেন? বিশ্বকাপ এগিয়ে আসার সাথে সাথে কি চোকপ্রবণতাটাও জেঁকে বসছে একটু একটু করে?
বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের উপর ভর করা বাড়তি চাপের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বেশ কৌশলী উত্তরই অবশ্য এলো ডোমিঙ্গোর কাছ থেকে। “প্রচার বা চাপের কথা মাথায় রাখলে গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বিশ্বকাপের ব্যাপারটা হবে পুরোপুরিই আলাদা। একটা দল হিসেবে এটাকে (চাপ) যতটা সম্ভব ছোট করে দেখার চেষ্টা করব আমরা। ব্যাপারটা বেশ কঠিন, তবে আমরা এটাকে (বিশ্বকাপ) শুধুই আরেকটা সিরিজ এবং ভালো ক্রিকেট খেলার চমৎকার একটা সুযোগ হিসেবেই দেখব।”