ফ্রান্সকে পথ দেখালেন গ্রিজমান
প্রথম ম্যাচে তেমন কিছু করতে পারেননি। পরের ম্যাচে আঁতোইন গ্রিজমানকে বসিয়ে রেখেছিলেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। কিন্তু ওই ম্যাচেই গোল করে ফ্রান্সকে রক্ষা করেছেন। তবে আসল গ্রিজমানকে দেখা গেল আজ, আয়ারল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফ্রান্স চলে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে।
এবার ইউরো শেষ মুহূর্তের গোলের জন্য এর মাঝেই খ্যাতি পেয়ে গেলেও ফ্রান্স-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ শুরু হতে না হতেই গোলের দেখা পেয়ে গেল। ডি বক্সের ভেতর আইরিশ অ্যাটাকার শেন লংকে চার্জ করার কারণে রেফারি মাজিক বাজান পেনাল্টির বাঁশি, রবার্ট ব্রেডি বারের সাহায্য নিয়ে পরাস্ত করলেন হুগো লরিসকে। এই ব্রেডির শেষ মুহূর্তের গোল দিয়েই ইতালিকে পরাজিত করে প্রথম বারের মত ইউরোর প্রথম রাউন্ড পার করে আয়ারল্যান্ড। ব্রেডির গোল হজম করার পর থেকেই ফ্রান্স বেশ জোরেশোরে ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যায়। ফ্রান্সের আক্রমণের জবাবে আয়ারল্যান্ড রক্ষণ এবং মধ্যমাঠের পার্থক্য কমিয়ে মাঝমাঠে জটলা তৈরী করে আক্রমণের সুযোগ কমিয়ে দেয়। তবুও ওয়াইড এরিয়া এবং সেট পিস থেকে ফ্রান্স বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরী করে প্রথমার্ধে। পায়েত, গ্রিজমান, জিরু বেশ কিছু সুযোগ পেলেও গোলরক্ষক র্যান্ডলফকে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডিফেন্সিভ মিড কান্টের পরিবর্তে উইঙ্গার কিংসলে কোমানকে মাঠে নামান কোচ দেশম। তবে আইরিশ কোচ মার্টিন ও’নিলের শিষ্যরা বেশ দৃঢ়ভাবেই তাঁদের ডি-বক্সের সামনে অবিচল থাকেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই পায়েত মাঝমাঠ থেকে ওয়াইড এরিয়ায় পগবা, কোমান, সানিয়াদেরকে ক্রমাগত বলের যোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন। ৫৮ মিনিটের মাথায় এমনই একটা বল ধরে সানিয়া ডি বক্সে ক্রস করেন, চমৎকার হেডে বল জালে জড়ান গ্রিজমান। গোল দেওয়ার পরই ফ্রান্স স্বরূপে ফিরে আসে। আক্রমণের ধারা অবিরত রাখে দেশমের শিষ্যরা, ফরোয়ার্ড লাইনে কোমান, পগবা, গ্রিজমানের ক্ষীপ্রতার প্রয়োগ করে।
প্রথম গোলের তিন মিনিটের মাথায়ই রক্ষণ থেকে কসিয়েলনির বাড়ানো লম্বা বল পৌঁছে যায় অলিভিয়ের জিরুর কাছে। জিরু মাথা দিয়ে বল গ্রিজমানের জন্য নামিয়ে দিতেই চকিতে আয়ারল্যান্ডের রক্ষণ ফাঁকা হয়ে যায় এবং গ্রিজমান ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়ান। দুই গোল খাওয়ার পরও আয়ারল্যান্ডের কৌশল বা চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আসে নি বলাই যায়। কারণ দ্বিতীয় গোল খাওয়ার কিছুক্ষণের মাঝেই আবারো ফ্রান্সের রক্ষণ থেকে জিরু হয়ে বল চলে যায় গ্রিজমানের কাছে। গ্রিজমানকে ঠেকাতে গিয়ে পেছন থেকে ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখেন শেইন ডাফি। দশজনের দলে পরিণত হয়ে আরো গুটিয়ে যায় আইরিশরা। ওদিকে ফ্রান্স কোন ছাড় দেবে না বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তৃতীয় গোলের সন্ধানে আক্রমণ চালিয়ে যায়। আইরিশ ডিফেন্ডাররা সেন্ট্রাল এরিয়াতে জটলা সৃষ্টি করলেও উইংএ নজর রাখার মতো কোন ডিফেন্ডার ছিলেন না। কাজেই কোমান, গ্রিজমান এবং পরে জিরুর বদলি হিসেবে নামা জিনিয়াক ওয়াইড চ্যানেল থেকে আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকেন। ফ্রান্স আরো গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও খেলা শেষ হয় ২-১এ।
কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড-আইসল্যান্ড ম্যাচের বিজয়ীর সাথে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সহজ জয়ের তৃপ্তিকে ঢেকে দেবে আদিল রামি এবং কান্টের সাসপেনশন। পরপর দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে কোয়ার্টার ফাইনাল মিস করবেন এই দুইজন। দেশম কীভাবে দল সাজান পরের ম্যাচে এটাই এখন দেখার বিষয়।