জার্মানিকে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে ফ্রান্স
সেই ১৯৮৪ সালে নিজেদের মাঠে ইউরো জিতেছিল ফ্রান্স। এরপর আর কোনো স্বাগতিক দেশের নিজেদের মাঠে ইউরো জেতার কীর্তি নেই। তার ওপর ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ যখন জার্মানি, সেই কীর্তিটা আবার হবে কি না সেটা নিয়ে ছিল সংশয়। গত কয়েকটি বড় টুর্নামেন্টে স্বাগতিকদের বিদায় করে দেওয়াটা যে অভ্যাসই বানিয়ে ফেলেছে জার্মানি। কিন্তু আজ আর সেটি হলো না, জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফ্রান্স উঠে গেল ইউরোর ফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল।
জয়ের জন্য সবার আগে ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম ধন্যবাদ দেবেন আঁতোইন গ্রিজমানকে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে দুর্দান্ত একটা মৌসুম কাটিয়ে এসেছিলেন ইউরোতে। প্রথম ম্যাচে বিবর্ণ থাকার সেই যে গা ঝাড়া দিয়েছেন, এরপর আলো ছড়িয়েই যাচ্ছেন। আজও জোড়া গোল করেছেন, টুর্নামেন্টে ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডের গোল এখন ছয়টি। চারটি গোলও আর কারও নেই, ইউরোর গোল্ডেন বুট এখন গ্রিজমানের, সেটি বলেই দেওয়া যায়। এবারের ব্যালন ডি অরের জন্যও নিজের দাবিটা জোর গলায় জানিয়ে দিয়ে গেলেন।
প্রথম গোলটি অবশ্য এসেছে বাস্তিয়ান শোয়েনস্টাইগারের ভুলে। প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে বক্সের ভেতর হাত লাগিয়ে দিয়েছিলেন জার্মান অধিনায়ক। সেটি রেফারির দৃষ্টি এড়ায়নি। পেনাল্টি। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে পেনাল্টি মিস করেছিলেন গ্রিজমান। এবার আর সেই ভুল করেননি। গোল করেই এগিয়ে দিয়েছেন দলকে।
গ্রিজমানের দ্বিতীয় গোলটা হচ্ছে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় থাকার আদর্শ একটা উদাহরণ। পগবার ক্রসটা পাঞ্চ করতে গিয়ে ঠিকঠাক পারেননি জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার। সেটি গিয়ে পড়ে গ্রিজমানের পায়ে। সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি।
তবে ২-০ গোলের স্কোরলাইন ম্যাচের পুরো চিত্র ঠিক বোঝাতে পারছে না। প্রথমার্ধে বিশেষ করে বল বেশির ভাগ সময় ছিল জার্মানির কাছেই, গোলের পরিষ্কার সুযোগও পেয়েছিল বেশি। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে সমতা ফেরাতেই পারত। সেজন্য ফ্রান্স গোলরক্ষক লরিস যেমন কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন, জার্মানির আক্রমণভাগের ব্যর্থতাও দায়ী। টমাস মুলার ছিলেন বিবর্ণ, মারিও গোমেজের অভাব খুব করেই টের পেয়েছে জার্মানি। পরে বোয়াটেংও চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন। ভাগ্য এদিন আসলেই তাদের পক্ষে ছিল না!