সেই হিগুয়েইনই এখন 'খলনায়ক'
ক’দিন আগে নাপোলি প্রেসিডেন্ট সরাসরিই বলছিলেন, ‘শত্রু’ শিবিরে যোগ দিলে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন হিগুয়েইন। সপ্তাহ না ঘুরতে ‘বিশ্বাসঘাতক’ই হলেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার, যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে। যাকে ম্যারাডোনার জায়গা দিয়েছিল নাপোলি সমর্থকরা, তাঁর এমন ‘বেঈমানি’ নীরবে সহ্য করা হবে কেন? রীতিমতো রাজপথে নেমেই ক্ষোভ ঝাড়ছেন তাঁরা।
এই দু’ মাস আগেই সিরি আ’তে নাপোলির হয়ে করেছেন এক মৌসুমে ৩৬ গোল, ভেঙে দিয়েছেন ৬০ বছরের পুরনো রেকর্ড। সান পাওলোর গ্যালারি তাঁর সাথে একাত্ম হয়ে করেছে উদযাপন। সেই হিগুয়েইনকেই দেখতে হবে ‘শত্রু’র জার্সিতে! ‘খলনায়ক হিগুয়েইন’, নাপোলি সমর্থকদের বিক্ষোভের প্রতিপাদ্যই হয়ে গেছে শব্দযুগল। শহরের সিটি সেন্টারে জড়ো হয়ে তাঁরা দ্বিখণ্ডিত করছেন হিগুয়েনের ছবি সম্বলিত পোস্টার, স্কার্ফ, টি-শার্ট। টুইটারে কেউ পোস্ট করেছেন কোমোডে রাখা হিগুয়েইনের জার্সি।
“দু’ মাসে আগেও যে আমাদের সাথে সান পাওলোর স্ট্যান্ডে গলা মিলিয়েছে, সে-ই আজ আমাদের সাথে এটা করতে পারলো!”, ব্যাপারটা যেন এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না এক সমর্থকের। নাপোলি-ভক্তরা সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না কিছুতেই, “বিদেশের অন্য কোন দলে গেলেও এক কথা ছিল, কাভানি বা লাভেজ্জির মতো। জুভেন্টাস কেন? ম্যারাডোনা তো কখনও আমাদের সাথে এমনটা করতে পারতো না!”
বিক্ষোভকারীদের কারও কারও ব্যানারে লেখা ইতালীয় শব্দযুগলের বাংলা হতে পারে, ‘অকৃতজ্ঞ চিত্ত’। ১৯৭৫ সালে একই ‘অন্যায়’ করে নামখানা পেয়েছিলেন হোসে আলতাফিনি। ওই বছর জুভেন্টাসের হয়ে ৮৮ মিনিটের গোলে নাপোলির শিরোপা-স্বপ্নও ভেঙে দিয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান।
কিছুদিন আগে ম্যারাডোনা নিজেই অবশ্য নাপোলিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন হিগুয়েইনকে বেচে দেয়ার জন্য। তাই বলে তাঁর একেবারে সরাসরি শত্রু শিবিরে যোগ দেয়াটা মানতে পারছেন না ম্যারাডোনাও, “কষ্ট পেলাম। তবে তাঁকে দোষ দিচ্ছি না। এই ব্যবসাটা যারা করতে পেরেছে তাঁরাই সবচেয়ে খুশী হবে।...সমর্থকদের কথা কেউ ভাবে না।”
এপ্রিল ২, ২০১৭। নাপোলি সমর্থকরা দিনটির অপেক্ষায় ক্ষণ গণনা হয়তো শুরু করে দিয়েছেন। নাপোলির মাঠে সেদিনই যে জুভেন্টাসের হয়ে নামবেন ‘খলনায়ক’ হিগুয়েইন!