কোন অতীত ফিরছে এবার?
কড়া নাড়ছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। সপ্তাহ দুয়েকও আর বাকি নেই। বিশ্বকাপের মতো আসরে বাংলাদেশ মানে এখনও কেবল ক্রিকেটই! দুনিয়াকে লাল-সবুজের শক্তির জায়গা জানান দেয়ার সুযোগটা যে এখানেই! দেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝেও তাই বিশ্বকাপ জ্বরের উত্তাপটা বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বকাপ শুরুর ১০০ দিন আগে থেকে প্যাভিলিয়নের ক্ষণগণনায় পাঠকদেরকে মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে বিগত সব আসরের রোমন্থনীয় স্মৃতিগুলো। ব্যাটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই মাঠে গড়ানোর প্রাক্কালে অংশগ্রহণকারী দলসমূহ নিয়ে চলছে আমাদের বিশেষ আরেকটি ধারাবাহিক আয়োজন। আজ থাকছে শ্রীলংকার কথা।
২০০৭, ২০১১...পরপর দুটো বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেও শিরোপার দেখা মেলে নি। কোথায় ‘ট্রেবল’ জেতার স্বপ্নে বিভোর থাকার কথা, উল্টো শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে ‘হ্যাট্রিক’ হারের সম্ভাব্যতা সঙ্গী করে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাতে হচ্ছে লঙ্কানদের। তবে তেমন কিছুর জন্যেও তো আগে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠতে হবে! তা কি আদৌ সম্ভব? নিকট অতীতের পারফরম্যান্স কিন্তু কোন ইতিবাচক আশা দেখাচ্ছে না ম্যাথিউসদের।
বছরের প্রথমটা অবশ্য দারুণ কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। বাংলাদেশকে ধবল ধোলাই করে শুরু, অতঃপর এশিয়া কাপ ও টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়...আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড সফরেও জয়যাত্রা অব্যাহত রেখে দেশে ফিরে ইংল্যান্ড আর পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও দুটো সিরিজ জয়; শ্রীলংকার তো রীতিমতো ওড়ার কথা! কিন্তু সাঙ্গাকারাদের পা মাটিছাড়া হচ্ছে না সংগত কারণেই। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে অনির্ধারিত ভারত সফরে গিয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে পরাজয় গুণতে হয় সবক’টিতেই। আর নিউজিল্যান্ডের মাঠে সদ্য সমাপ্ত সিরিজেও হার মানতে হয়েছে ৪-২ এ। আসন্ন বিশ্বকাপের ফেভারিট তালিকায় তাই বর্তমান রানার আপদের উপরের দিকে রাখার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
শ্রীলংকার বর্তমান দলে ভরসার জায়গা বোলিং আক্রমণ। আসছে বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে ওভার প্রতি রান দেয়ার হার লঙ্কান বোলারদেরই সবচেয়ে কম। তবে ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট বিবেচনা করলে আবার সেরা আট দলের মধ্যে সবার নীচেই থাকতে হচ্ছে।
তারপরও সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে, দিলশান, ম্যাথিউসের মতো নামগুলো যে কোন প্রতিপক্ষ শিবিরে আতংক ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। বল হাতে পুনরায় গতির ঝড় তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অস্ত্রোপচার শেষে ফিরে আসা লাসিথ মালিঙ্গা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সচিত্রা সেনানায়েকের বল হাতে প্রত্যাবর্তনও সুখবরই বটে। নুয়ান কুলাসেকারা, থিসারা পেরেরা পেস আক্রমণের গুরুদায়িত্ব নেয়ার পাশাপাশি ভূমিকা রাখবেন ব্যাট হাতেও। টপ কিংবা লওয়ার মিডল, দু’ অর্ডারেই ব্যাট হাতে সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন দীর্ঘদিন পর দলে সুযোগ পাওয়া দিমুথ করুণারত্নে।
সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনেরা ক্রিকেট পুরাণের ঐতিহাসিক অংশ হয়ে গেছেন বহু আগেই। টেস্ট, টিটোয়েন্টি ছেড়েছেন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে...একদিনের ক্রিকেটকে বিদায় বলার দিনটায়ও তাঁরা খুব করেই চাইবেন শিরোপা সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে। ‘৯৬-এর লাহোরে সিংহের গর্জন কি ফিরে আসবে ‘১৫-এর মেলবোর্নে?