হাত না মেলানোয় দেশে ফেরত
শুক্রবার অলিম্পিকের জুডো ইভেন্টে খেলা শেষে হাত মেলাতে গিয়েছিলেন ইসরাইলের খেলোয়াড় অর স্যাশন। কিন্তু প্রতিপক্ষের সাথে হাত মেলান নি মিশরীয় অ্যাথলেট এল শিহাবি। জুডোর নিয়মানুযায়ী দুই খেলোয়াড় দু’জনের প্রতি মাথা নত করে শ্রদ্ধা জানান। তবে অর স্যাশন হ্যান্ডশেক করতে হাত এগিয়ে দিলে পিছনে সরে যান শিহাবি। এমনকি রেফারী ডাকা সত্ত্বেও মাথা নাড়িয়ে চলে যান তিনি। প্রতিপক্ষের প্রতি এমন আচরণের জন্য ইতিমধ্যেই তাঁকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মিশর অলিম্পিক দল। তাছাড়া অলিম্পিক কমিটির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে তীব্র নিন্দা।
শিহাবি এবং স্যাশনের মধ্যকার ম্যাচে জয় পেয়েছেন ইসরাইলের জুডোকা। এরপরই ঘটে এই ঘটনাটি। নিজের এমন আচরণের পক্ষে শিহাবির যুক্তি, “জুডোর নিয়মানুসারে প্রতিপক্ষের সাথে হাত মেলানোর কোন বাধ্যবাধকতা নেই। হাত মেলাতে হয় বন্ধুদের সাথে, সে আমার বন্ধু নয়।” হাত মেলানোর বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে নিন্দা জানায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি , “তাঁর আচরণ অলিম্পিকের নিয়ম ও মূলনীতিকে ভঙ্গ করেছে। এমন অনুপযুক্ত আচরণের জন্য তাঁর প্রতি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতে অলিম্পিকে আসার আগে সঠিক আচরণ শিখে আসবে মিশরের খেলোয়াড়রা।”
ইতিমধ্যে নিজের আচরণের জন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ২০১০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পদকজয়ী এল শিহাবি। এছাড়া মিশরীয় কট্টরপন্থী ইসলামিক গ্রুপগুলোও তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্দোলন করে। তাঁদের মতে, শিহাবিকে খেলতে দেয়া হলে এর দায় বর্তাবে ইসলামের উপর। অবশ্য ওই মিশরীয়র এমন আচরণে ঠিক অবাক হন নি অর স্যাশন, “কোচ আমাকে আগেই বলেছিল, সে হয়ত হাত মেলাতে চাইবে না। এটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”
অলিম্পিক কিংবা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ইসরাইলিদের সাথে আরব দেশের খেলোয়ারদের হাত না মেলানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকে ইরানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জুডোকা আরাশ মিরাজমাইলি ইসরাইলের জুডোকা ইহুদ ভাকসের সাথে খেলতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। মজার ব্যাপার, আরব দেশগুলোর মধ্যে ইসরাইলের সাথে প্রথম শান্তি চুক্তি করেছিল মিশর, ১৯৭৯ সালে। তবে সেই চুক্তি যে মিশরীয়রা এখনও মন থেকে মানতে নারাজ, এল শিহাবির আচরন হয়তো তা-ই জানিয়ে দিল।