সেই চীনের এই দশা কেন?
আট বছর আগেও তাদের নামটা সবার ওপরে জ্বলজ্বল করছিল, রেকর্ড ৫১টি সোনা জিতেছিল বেইজিং অলিম্পিকে। চার বছর আগেও লন্ডন অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই তাদের নাম ছিল। সেবার চীন জিতেছিল ৩৮টি সোনা। কিন্তু এবার এখন (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত চীনের মাত্র ১৭টি সোনা, অলিম্পিকের বাকি আর মাত্র চার দিন। ২৮টি সোনা নিয়ে সবার ওপরে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেনও ১৯টি সোনা নিয়ে এগিয়ে চীনের চেয়ে। কিন্তু এশিয়ার পরাশক্তিরা আকাশ থেকে এমনভাবে মাটিতে নেমে এলো কেন?
চীনের প্রচারমাধ্যমে গত কয়েক দিন থেকেই এ নিয়ে তুমুল শোরগোল। পদক তালিকায় এই দশার কারণ হিসেবে মূলত মনে করা হচ্ছে অলিম্পিকে তিনটি ইভেন্টের ব্যর্থতাকে। ব্যাডমিন্টন, ডাইভিং ও জিমন্যাস্টিকস সবসময়ই চীনের শক্তির একটা বড় জায়গা হয়ে ছিল। কিন্তু এই তিন ইভেন্টে এবার সেভাবে সাফল্য আসেনি।
সবচেয়ে করুণ অবস্থা জিমন্যাস্টিকসে। বেইজিং অলিম্পিকে এই ইভেন্টে ১১টি সোনা ছিল চীনের। গতবার সেই আধিপত্য কিছুটা খর্ব হলেও পাঁচটি সোনা পেয়েছিল চীন। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত সোনা দূরে থাক, এখন পর্যন্ত কোনো রূপাই জোটেনি। ব্রোঞ্জ জুটেছে মাত্র একটি।
ব্যাডমিন্টনেও এখন পর্যন্ত কোনো সোনা আসেনি, ব্রোঞ্জ এসেছে মাত্র একটি। যদিও এই ইভেন্টে আরও কয়েকটি পদকের নিষ্পত্তি বাকি আছে। ডাইভিংয়ে পাঁচটি সোনা এলেও এখান থেকে আশা আরও বেশি ছিল। সব মিলে এবার চীনে আশা করেছিল অন্তত ৩৫টি সোনা, কিন্তু তার কাছাকাছি যাওয়াটাও এখন সম্ভবত দুরাশা।
চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম সিনহুয়ার টুইট থেকেই বোঝা যায় চীন কতটা বিস্মিত, “এটা কি বিশ্বাস করার মতো? গ্রেট ব্রিটেন পর্যন্ত আমাদের ওপরে আছে!” একজন সাংবাদিক মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত চার অলিম্পিকে সবচেয়ে কম পদক পাওয়ার শঙ্কায় আছে চীন। আরেক চীনা রাগে-ক্ষোভে টুইট করেছেন, “পদক জেতার দরকার নেই, এবার তারা ভালোয় ভালোয় দেশে ফিরলে হয়।” আরেকজন আবার অভিযোগ করেছেন, চীনের অ্যাথলেটদের সঙ্গে এবার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করা হচ্ছে।
তবে চীনের আরেকজন মন্তব্য করেছেন, একটা সময় কমিউনিস্ট চীনের লক্ষ্য ছিল খেলাধূলার মাধ্যমে বিশ্বের পরাশক্তিদের তালিকায় নাম লেখানো। সেই উদ্দেশ্য অনেক আগেই বাস্তবায়িত হয়ে গেছে বলে এখন চীনের খেলায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাও কম।
চীনের এই ব্যর্থতার এটাই কি আসল কারণ?