পানিতে মুছে গেল কোচের শোক
ধোপদুরস্ত শার্ট-পরা একজন লোক। কিন্তু তাঁকে পানিতে ফেলে দিয়ে “নির্মমভাবে” চোবানো হলো! ভদ্রলোক তাতে অবশ্য খুব একটা রাগ করেছেন বলে মনে হলো না! এই মেয়েরাই তো তাঁকে গর্ব করার মতো একটা উপলক্ষ এনে দিয়েছে, প্রিয়জন হারানোর বেদনা একটু হলেও ভুলিয়ে দিয়েছে!
কাল ইতালিকে হারিয়ে মেয়েদের ওয়াটার পোলোতে সোনা জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বিপক্ষ দলের কোচ ফ্যাবিও কন্তির সাথে হাত মেলাতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোচ অ্যাডাম ক্রিকোরিয়ান। তখন যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েরা তাঁকে পানিতে ফেলে দেয়, এরপর তাঁকে ঘিরে চলতে থাকে আনন্দ উৎসব।
এই ক্রিকোরিয়ানই দুঃখ নিয়েই এসেছিলেন অলিম্পিকে। আসর শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাবেক ওয়াটার পোলো খেলুড়ে বড়ভাই ব্লেক। দলকে ছেড়ে তাই পরিবারের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন ক্রিকোরিয়ান। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই তাঁর চোখেমুখে ছিল আপনজন হারানোর বেদনার ছাপ। তবে সোনা জিতে তাঁকে আনন্দের অশ্রুতে ভাসাল যুক্তরাষ্ট্র প্রমীলা দল। ফাইনালে ইতালিকে ১২-৫ ব্যবধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সোনা জিতল তাঁরা।
ভাই হারানোর শোকের প্রভাব দলের উপর পড়ুক তা চাননি ক্রিকোরিয়ান, “ এই জয়ের আগ মুহূর্তেও আমার ভাইয়ের কথা মনে পড়ছিল। আমি ইভেন্ট শুরু সময়ে সবাইকে বলছিলাম, এটি আমার ব্যক্তিগত কষ্ট, তোমরা কেউ এটা নিয়ে মাথা ঘামাবেনা। সবাই দারুণ একটা জয় উপহার দিয়েছে আমাকে।” জয়টা ভাইকেই উৎসর্গ করেছেন ক্রিকোরিয়ান, “সে বরাবরই আমাদের খেলা নিয়ে আলোচনা করত। পরিশ্রমই ছিল তাঁর মূলমন্ত্র, হার-জিত কোন বিষয় না তাঁর কাছে। নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করাই সব, আমাদের জয়-পরাজয়ে তিনি পাশে থেকে সমর্থন দিয়ে যেতেন।”
ফর্মের তুঙ্গে থাকা যুক্তরাষ্ট্র দলের কাছে পাত্তাই পায়নি ইতালি। কাইলি নেউসুল করেন তিনটি গোল, ম্যাকেঞ্জি ফিসার এবং র্যাচেল ফ্যাটাল করেছেন ২টি করে গোল। গোলকিপার অ্যাসলি জনসন ৯ টি সেভ করে একাই আগলে রেখেছেন দলের গোলপোস্ট। এই জয়ে টানা ২২ ম্যাচ জেতার রেকর্ড করল তাঁরা।