অপূরণীয় আক্ষেপ
ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আশাবাদী ও আবেগপ্রবণ সমর্থক হিসেবে কোন জাতিটির নাম প্রথমেই ভেসে ওঠে আপনার মনের পর্দায়? একজন বাংলাদেশী হিসেবে নিজ জাতিকেই এগিয়ে রাখার কথা আপনার । তবে নিরপেক্ষ বিবেচনায়ও কিছুটা তর্কসাপেক্ষে বঙ্গবাসী ক্রিকেট সমর্থকরাই হয়তো থাকবেন সর্বাগ্রে। এমন একটা ম্যাচের কথা আসছে একটু পরে, যে ম্যাচে প্রবল আশাবাদী বাংলাদেশীরাও এক-এক করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন স্টেডিয়াম ছেড়ে। এবং শেষমেশ অনেকটা ফাঁকা হয়ে যাওয়া গ্যালারির সামনে ইংলিশদের বিপক্ষে অভাবনীয় এক জয় পায় টাইগাররা।
গেল বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৫৮ রানের লজ্জার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? ঐ ম্যাচের ঠিক পরের ম্যাচটাই ছিল ইংল্যান্ডের সাথে। খেলা শুরু হওয়ার পর স্টেডিয়ামের মুখশ্রী দেখে মনে হওয়ার কোন কারণই ছিল না যে, এর আগের ম্যাচটা শেষেই হতাশা ও ক্রোধে ফেটে পড়েছিলেন সেখানে উপস্থিত অনেকেই। প্রথমে ফিল্ডিং করে মাত্র ২২৫ রানে ইংলিশদের গুটিয়ে দেওয়ার পর তো জয়ের স্বপ্ন দেখাও শুরু হয়ে গেল। সেই স্বপ্ন রীতিমত সুবাস ছড়াতে শুরু করে, যখন ৩১তম ওভারে হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ১৫৫ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
ব্যক্তিগত ৬০ রানে ইমরুলের রান-আউটে ছন্দপতনের শুরু, ১৩ রানের মধ্যে নেই ৫ উইকেট। একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ, যিনিও কিনা মাত্রই এসেছেন উইকেটে। হাতে ২ উইকেট নিয়ে যখন বাকি আরও ৫৭ রানের বন্ধুর পথ, হতাশায় মুষড়ে পড়া সমর্থকদের মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলা যাবে না মোটেই। কমেন্ট্রি বক্সে বসা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেও ম্যাচের শেষ দেখছিলেন ওখানেই।
তবে শফিউল ইসলাম নামক এক তরুণের চিন্তাধারাটা ছিল একটু আলাদা। আজমল শেহজাদের সাথে ধ্বংসযজ্ঞে নেতৃত্ব দেওয়া গ্রায়েম সোয়ানের শেষ ওভার থেকে দুই চার ও এক ছয়ে নিলেন ১৬ রান। অপরপ্রান্তে মাহমুদুল্লাহ দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইনিংসটাকে ধরে রাখার।
এদিকে শফিউল আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন অ্যান্ডারসন-ব্রেসনানদের উপরও। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে মাহমুদুল্লাহর চারে যে মুহূর্তে ম্যাচটা জিতে যায় টাইগাররা, সে দৃশ্যের চাক্ষুষ সাক্ষী না হতে পারার দুঃখটা হয়তো এখনও পোড়ায় স্টেডিয়াম থেকে আগে বের হয়ে যাওয়া দর্শকদের।