• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    বাস থামিয়ে ভক্তের সঙ্গে দেখা

    বাস থামিয়ে ভক্তের সঙ্গে দেখা    

    অনুশীলন সেরে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে বেরিয়ে টিম বাসের দিকে এগোচ্ছিলেন ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রা। প্রিয় তারকাদের এক নজর দেখা পেতে সেখানে যথারীতি উৎসুক সমর্থকদের ভিড়। ভিড় ছাড়িয়ে বাইরের লনে হুইল চেয়ারটা নজর এড়ালো না হুয়ান মাতার। দল ছেড়ে এক দৌড়ে চলে এলেন কাছে, জড়িয়ে ধরলেন হুইল চেয়ারটায় ছোট্ট বালকটিকে। ক্যামেরাবন্দী মুহূর্তটুকু ইতোমধ্যেই আলোড়ন তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোয়। সেই কবে দেখা হওয়া ছোট্ট অ্যালেক্সকে নামশুদ্ধ মনে রেখেছেন অমন নামকরা একজন খেলোয়াড়, ব্যাপারটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না অ্যালেক্সের বাবা জন নিল্ডের।

     

    গল্পের শুরুটা মাস পাঁচেক আগের। গত মৌসুমে নরউইচ সিটির মাঠে ইউনাইটেডের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন জন, সঙ্গে ছিল ছেলে অ্যালেক্স। তবে নয় বছর বয়সী অ্যালেক্স আর দশটা স্বাভাবিক ছেলের মতো নয়। সেরেব্রাল পালসিতে আক্রান্ত অ্যালেক্সকে চলাফেরাটা করতে হয় হুইল চেয়ারে বসে। ইউনাইটেডের ‘ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড’ সমর্থক গোষ্ঠীর সহায়তায় ওই হুইল চেয়ারে বসেই দু’শ মাইল পাড়ি দিয়ে নরউইচের মাঠে খেলা দেখতে গিয়েছিল অ্যালেক্স। গণিতে ভীষণ ঝোঁক থাকা ছেলেটার প্রিয় সংখ্যা আট বলে ইউনাইটেডের আট নম্বর জার্সিধারী খেলোয়াড়দের প্রতি তাঁর বরাবরই আলাদা অনুরাগ। হুয়ান মাতার প্রতি তাঁর ভালোলাগাটাও সে জায়গা থেকেই। নরউইচের মাঠে সেদিন ম্যাচ শেষে মাতার নাম ধরে চিৎকার করছিল অ্যালেক্স। সতীর্থ এক খেলোয়াড় সেটা দেখিয়ে দিলে মাতা এসে কথা বলেন অ্যালেক্সের সাথে, ছবিও তোলেন।

     

     

    ঘটনা এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকলে অবশ্য আলাদা করে খবর করার প্রয়োজন হতো না। কিন্তু মাতা আর অ্যালেক্স নতুন করে শিরোনাম হয়ে গেলো ইউনাইটেড মিডফিল্ডারের উদারতায়। পাঁচ মাস আগে কয়েক সেকেন্ডের ওই সাক্ষাৎ মনে রেখেছিলেন মাতা, ভোলেন নি নামটাও। গত সপ্তাহে তাই অনুশীলন সেরে বেরিয়ে বাইরে হুইল চেয়ারে বসা অ্যালেক্সকে দেখতে পেয়ে চিনতে ভুল হয় নি তাঁর। বাকিটুকু যোগান দিল ‘ভাইরাল’ আলোচনার। টিম বাস দাঁড় করিয়ে রেখে মাতা এসে জড়িয়ে ধরলেন ছোট্ট ভক্তকে, কুশল বিনিময় করলেন তার বাবার সাথে। এরপর আরেকদফা ছবি তোলার পর্ব। আর সময়টুকু ক্যামেরাবন্দী হল অ্যালেক্সদের এক আত্মীয়র মোবাইলে।

     

     

     

    পুরো ব্যাপারটায় দারুণ অভিভূত অ্যালেক্সের বাবা, “যেভাবে সে (মাতা) এগিয়ে এলো, অ্যালেক্সকে জড়িয়ে ধরলো, এমনকি ওর নামটাও মনে রাখলো...অসাধারণ এক ব্যাপার। এমন একজন নামী খেলোয়াড় যাকে কিনা সবাই চেনে, সে আমার ছেলের জন্য এতোটুকু সময় দিলো, পুরো ব্যাপারটাই আসলে অসম্ভব ভালোলাগার।”

     

    মাতা অবশ্য এটুকু করেই ক্ষান্ত হন নি, ইউনাইটেডের পরবর্তী ম্যাচের টিকিট জোগাড় করা হয়ে ওঠে নি অ্যালেক্সদের, এমনটা জেনে ব্যবস্থা করে দিলেন টিকিটেরও। প্রিয় তারকার এমন উদারতায় বিমোহিত ছোট্ট অ্যালেক্সও। যেমনটা বলছিলেন তার বাবা, “ছেলেটা কী পরিমাণ খুশী হয়েছে বলে বোঝানো যাবে না। আনন্দটা যেন ওর চোখেমুখে ঠিকরে বেরোচ্ছিল।”