• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    রোনালদোকে রিয়ালে যেতে দিতে চাননি ফার্গি

    রোনালদোকে রিয়ালে যেতে দিতে চাননি ফার্গি    


     

    চোখের সামনে দলের সেরা খেলোয়াড়কে কিনে নেয়ার চেষ্টা করছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্লাব। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ইউনাইটেডে রাখার সব চেষ্টাই যখন বিফলে গেল, তখন মাদ্রিদের চিরশত্রু বার্সেলোনার সাথে যোগাযোগ করা শুরু করেছিলেন তখনকার ইউনাইটেড কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। যেভাবেই হোক রোনালদোকে মাদ্রিদে যাওয়া থেকে ঠেকাতে হবে, এটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। তবে শেষ পর্যন্ত মাদ্রিদেই গিয়েছেন সিআর সেভেন।

     

    সময়টা ২০০৭ সালের জানুয়ারি। র‍্যামন কালদেরন মাদ্রিদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রায় ৬ মাস হলো। তখন পর্তুগীজ ফুটবল এজেন্ট জর্জ মেন্ডেস এবং মাদ্রিদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হোসে অ্যাঙ্গেল সানচেজের মাঝে এক বৈঠকের পর জানা গেলো , রোনালদো নাকি ইউনাইটেড ছাড়তে ইচ্ছুক!

     

    গুঞ্জনটা আরো শক্তিশালী হলও যখন রোনালদো প্রকাশ্যেই এই ব্যাপারটা স্বীকার করে নিলেন, “আমি জানি মাদ্রিদ আমার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে, কিন্তু এই ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।” ফার্গুসন কিন্তু রোনালদোর ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারটা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন, “আমি ওইসব ফুটবলারদেরই বিক্রি করি যাদেরকে আমরা বিক্রি করতে চাই। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্লাব ছাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই।”

     

    তবে ওই বছরের মার্চেই রোনালদো স্পেনে খেলার ব্যাপারে নিজের স্বপ্নের কথা জানান, “সবাই জানে আমি স্পেনকে ভালোবাসি। আমি একদিন সেখানে খেলতে চাই।” এর এক মাস পরেই ২০১২ পর্যন্ত ইউনাইটেডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন, কিন্তু সেখানে বলা ছিল রোনালদো চাইলেই অন্য কোথাও চলে যেতে পারবেন।

    ২০০৮ এর শুরুর দিকে রোনালদোর মা নিজের ছেলেকে মাদ্রিদের হয়ে খেলতে দেখতে চান বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমি ইংলিশ ক্লাব পছন্দ করিনা। মৃত্যুর আগে নিজের ছেলেকে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলতে দেখতে চাই।” এদিকে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানায়, রোনালদোকে কিনতে ১২০ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত দিতে রাজি মাদ্রিদ, তবে তারা মনে করেন ৭৫ মিলিয়নই যথেষ্ট হবে।

     

    অবস্থা বেগতিক দেখে রিয়ালের কাছে চিঠি দেয় ইউনাইটেড। রোনালদোকে নিয়ে কথা না বলার জন্য তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়। কিন্তু মাদ্রিদের জন্য সুবিধার ব্যাপার ছিল এটাই, রোনালদো নিজেই ইউনাইটেড ছাড়তে চাইছিলেন! সেই বছরের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের পর ফার্গুসন সরাসরি মাদ্রিদ সভাপতিকেই দোষারোপ করেছিলেন , “কালদেরন, সুসটার কথা বলেন, আর মার্কাকে ব্যাবহার করে খেলোয়াড়দের  মানসিকভাবে নড়বড়ে করে তোলেন।”

     

    কিন্তু কোনো কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছে না, তখন উপায় না দেখে বার্সেলোনার শরণাপন্ন হলেন ফার্গুসন। পর্তুগালে গিয়ে এজেন্টদের সাথে বৈঠক করতে লাগলেন। বার্সেলোনা যেনও রোনালদোকে কেনার জন্য মাদ্রিদের সাথে পাল্লা দিয়ে দরাদরি করে, এটাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। আর যেখানেই হোক, মাদ্রিদে যেনও না যায় রোনালদো! কিন্তু এদিকে রোনালদো মনস্থির করেই ফেলেছিলেন মাদ্রিদে আসার ব্যাপারে।

     

    শেষ পর্যন্ত হয়েছিল তাই। ২০০৯ সালে ইউনাইটেড ছেড়ে মাদ্রিদে পাড়ি জমান এই পর্তুগীজ। ফার্গুসনও তাঁকে আর বাধা দেননি। দুজনের মাঝে সম্পর্কটা এখনো মজবুত আছে। এই বছরের ইউরো জেতার পর গুরু-শিষ্যের আলিঙ্গন এটাই প্রমাণ করেছে।