চার বছর পর মিলানের জুভেন্টাস-বধ
জুভেন্টাস বনাম এসি মিলান। ইতালির দুই মহীরুহের মধ্যকার লড়াইটা বিগত কয়েক মৌসুম ধরেই কেমন ফিকে হয়ে পড়েছিল। পড়বেই বা না কেন? জুভেন্টাস যেখানে টানা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন, সেখানে এসি মিলান শেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগই খেলেছে বছর চারেক আগে। কিন্তু চলতি মৌসুমে নিজেদের যেন নতুন করে আবিষ্কার করেছে এসি মিলান। কুচকা, সুসো, লোকাতেল্লিদের মত এক ঝাঁক তরুণ নিয়ে সাজানো দলটি আজ জুভেন্টাসকে হারিয়ে যেন নিজেদের আগমনী বার্তাটাই জানিয়ে রাখলো। সান সিরোতে মানুয়েল লোকাতেল্লির অসাধারণ গোলে জুভেন্টাসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে 'লা রসোনেরী'রা।
সান সিরোর ম্যাচটি ছিল একেবারেই ইতালীয় ফুটবল ঘরানার আদর্শ ম্যাচ। আক্রমণের চেয়ে রক্ষণেই মনস্থির করেছিল দু দল। ম্যাচের মূল আকর্ষণটা ছিল ডিবালা, হিগুয়াইন, পিয়ানিচদের দিকে। কিন্তু রোমানিওলি, পালেত্তাদের দক্ষতায় নিজেদের ছায়া হয়েই ছিলেন এই ত্রয়ী। গোলের সুযোগ খুব কমই তৈরি করতে পেরেছে দু দল। প্রথমার্ধে সুসো, সান্দ্রো, ডিবালাদের বিচ্ছিন্ন তিনটি আক্রমণ ছাড়া বলার মত নেই কিছুই। হ্যামস্ট্রিংয়ের ইঞ্জুরির কারণে ৩৩ মিনিটেই মাঠ ছাড়তে হয় ডিবালাকে।আক্রমণভাগের মধ্যমণিকে হারিয়ে একেবারেই খাপছাড়া হয়ে পড়ে জুভেন্টাসের আক্রমণ। ঢিমেতালে চলতে থাকা ম্যাচটিতে সঞ্জীবনী শক্তি হিসেবে আসে পিয়ানিচের গোল বিতর্ক। বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া ফ্রিকিকটি সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় মিলানের জালে। কিন্তু অফসাইডে থেকে পরোক্ষভাবে খেলায় প্রভাব ফেলেছিলেন কিয়েল্লিনি। লাইন্সম্যানের সাথে পরামর্শ করে গোল বাতিল করেন রেফারি। ঘন্টা দুয়েক আগে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে মেসির প্রথম গোলটিতেও ছিল এহেন বিতর্ক। সেই গোলটি অবশ্য বাতিল করা হয়নি!
দ্বিতীয়ার্ধেও পাদপ্রদীপের আলোটা নিজেদের করে নেয় দুই রক্ষণভাগ। কিন্তু ৬৫ মিনিটে কাঁটে গোলের ফাঁড়া। সুসোর পাসে বক্সের বাইরে থেকে আগুনে এক শটে বুফনকে পরাস্ত করেন লোকাতেল্লি। ইতোমধ্যেই পিরলোর সাথে তুলনা পাওয়া এই তরুণ চলতি মৌসুমে গোলে শট নিয়েছেন দুবার, গোলও করেছেন দুবারই। সাসুওলোর সাথে স্মরণীয় এক জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। এবার তার গোলে কপাল পুড়লো তুরিনের বুড়িদের। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল জুভেন্টাস। ডিবালার অভাব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে অ্যালেগ্রির শিষ্যরা। অতিরিক্ত সময়ে খেদিরার শট অমানবিক ভাবে বাঁচিয়ে দেন 'নতুন বুফন' খ্যাত ডনারুমা। এটিই ছিল দ্বিতীয়ার্ধে জুভেন্টাসের একমাত্র উল্লেখযোগ্য আক্রমণ।
এই জয়ে সুদীর্ঘ ৪ বছর পর জুভেন্টাসকে হারালো এসি মিলান। যদিও পয়েন্ট টেবিলে জুভেন্টাস এখনো শীর্ষে, কিন্তু ব্যবধানটা মাত্র ২ পয়েন্টে নামিয়ে এনেছে লোকাতেল্লিরা। টেবিলে মিলানের অবস্থান তৃতীয়।