নতুন সকালের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
জিতে গেলে হবে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে খুলে যাবে এমন দ্বার যা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অন্য এক উচ্চতায়। হেরে গেলে জেঁকে বসবে সেই পুরনো অবসাদ। তীরে এসে তরী ডোবার দলাপাকানো আক্ষেপ। জয় ও পরাজয়ের মাঝখানে বাংলাদেশের হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সাব্বির রহমান। অপরাজিত আছেন ৫৯ রান করে। ১১ রান নিয়ে শেষ বেলায় যোগ্য সঙ্গী হয়ে পাশে আছেন তাইজুল ইসলাম। জয়ের জন্য আগামীকাল বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৩ রান। হাতে আছে দুই উইকেট।
তিন অভিষিক্তের মধ্যে ইতিমধ্যে আলো ছড়িয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার মঞ্চ প্রস্তুত ছিল সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাংলাদেশের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠা সাব্বির রহমানের জন্য। প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের জাত চিনিয়েছেন রাজশাহীর এই ব্যাটসম্যান। ৩ চার ও ২ ছয় মেরে অপরাজিত আছেন ৫৯ রান করে।
চা বিরতির আগে মঈন আলীর বলে সাকিব আল হাসান আউট হয়ে গেলে ১৪০ রানে ৫ উইকেটে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তখন মনে হচ্ছিল পরাজয় বুঝি সময়ের ব্যাপার। সেখান থেকে বাংলাদেশকে দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরিয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমান। ৮৭ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে আস্তে আস্তে দাঁড়ানোর ভিত্তি গড়েছেন।
প্রথম ইনিংসে ৪৮ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট হাতে সফল বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১২৪ বলে ৩৯ রানের ভীষণ ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ইংলিশ বোলারদের বারবার ব্যর্থ করে দিয়েছেন সাব্বির রহমান। কিন্তু দলীয় ২২৭ রানে গ্যারেথ ব্যাটির শিকারে পরিণত হলে হঠাৎ ঘটে ছন্দপতন। নয় রানের ব্যবধানে আউট হয়ে যান দুই অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম। সে সময় মনে হচ্ছিল দিন শেষের আগেই গুটিয়ে যাবে বাংলাদেশের ইনিংস। কিন্তু সেটা হতে দেননি সাব্বির-তাইজুল। ১৫ রানের জুটি গড়ে আশার নিভু নিভু সলতেটা সারারাত জ্বালিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছেন।
কাল কী হবে সেটা বলে দেবে সময়। দেশজুড়ে হয়তো সংক্রমিত হবে কুলীনবধের উল্লাস কিংবা হতাশার কালো জলে আবারও দিতে হবে ডুব। তবে বাংলাদেশ কিংবা ইংল্যান্ডের নয়, এই ম্যাচে বিজয়ী হবে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য।