অতঃপর, বাংলাদেশ
কোন কথাটা ব্যবহার করা হয়েছে সবচেয়ে বেশী? এত কাছে তবু এতদূর? হাত বাড়িয়ে ডেকেছে, ধরতে গেলে নাই হয়ে গেছে। অবশেষে ধরা দিল। মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
স্টিভেন ফিন আগ বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে মিস করলেন, মিরাজের বলটা। আবেদনে সাড়া দিলেন কুমার ধর্মসেনা, সিরিজে কততমবারের মতো, তার ইয়ত্তা মেলা ভার! ফিন রিভিউ চাইলেন, কিন্তু ইংল্যান্ডের রিভিউ যে ততক্ষনে শেষ! দুপ্রান্তের স্ট্যাম্প ততক্ষনে উপড়ে ফেলেছেন বাংলাদেশীরা, শুরু হয়ে গেছে উদযাপন! ১০৮ রানে জিতে গেছে বাংলাদেশ।
করমর্দন শেষে আবার মাঠে নেমে এলেন, গোল হয়ে দাঁড়িয়ে চললো আরেকদফা। যে উদযাপনটা শুরু হলো, শেষ কবে হবে কে জানে!
অথচ সকালটাও শুরু হয়েছিল আফসোসে। ইংল্যান্ডের দেয়া সুযোগ হেলায় হারিয়ে বাংলাদেশ লক্ষ্য দিতে পারলো ২৭৩ রান। অ্যালেস্টার কুক আর বেন ডাকেট যেন লিখছিলেন বাংলাদেশের আরেকটা আফসোস-কাব্য। টি-এর পর প্রথম বলেই বোল্ড ডাকেট, শুরু ইংল্যান্ড ইনিংসে ধ্বস। কুককে আম্পায়ার আউট দিয়েছেন, রিভিউ নিয়েছেন। বেঁচেছেন অল্পের জন্য। তবে তাঁকে ফিরিয়েছেন সেই মিরাজই, সিলি পয়েন্টে মুমিনুলের হাতে বা শরীরে কোনোমতে আটকে গেছে ক্যাচ।
ডাকেট ও কুকের মাঝে ফিরেছেন রুট, ব্যালান্স, মঈন। বেইরস্টো পারেননি, পারেননি স্টোকস। শুরুটা করেছিলেন মিরাজ, শেষও তাই। তবে থাকলেন সাকিব।
হঠাৎ ধ্বসে কাবু হওয়া বাংলাদেশ এবার ফিরিয়ে দিল ধ্বসের স্বাদ। শতরানের ওপেনিং জুটি গড়া ইংল্যান্ড শেষ ১৬৪ রানেই। এক পেসারের বাংলাদেশ, চার স্পিনারের বাংলাদেশ, দূর্বল টেইল-এন্ডারদের বাংলাদেশই আনলো নিজেদের ইতিহাসের বোধহয় সবচেয়ে সেরা জয়।
মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচেই তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ম্যাচে দশ উইকেট নিলেন মিরাজ। সাকিবের সংগ্রহে গেল বাকী চারটা।
আর বাংলাদেশের নাগালে এলো সেই অধরা টেস্ট জয়। ‘পূর্ণশক্তির’, র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের সারির দলের সংগে টেস্ট জয়। যে টেস্টের রোমাঞ্চের স্বাদ অনেক অনেকদিন বয়ে নিয়ে বেড়াবেন এর সাক্ষীরা।
মিরপুর যে তখন আলোকিত। কৃত্রিম আলোয়?
নাহ।