২২ গজের সেলুলয়েড: বাই, স্যালুট এবং ডাক
বাই-বাই
বল হঠাৎ লাফিয়ে ওঠে। বল হঠাৎ নীচু হয়ে যায়। ব্যাটসম্যানকে ফাঁকি দেয়, ফাঁকি দেয় কিপারকেও! হয়ে যায় চার। বাই। জনি বেইরস্টো এই ‘বাই’ এর শিকার হলেন চারবার। তিনবার জাফর আনসারির বলে, একবার মঈন আলির বলে। বাংলাদেশ ইনিংসেও হলো এমন বাই-চার, শুভাগতর বলে, ব্যাট করছিলেন অ্যালেস্টার কুক।
হ্যালো!
শুভাগত আগের ওভারটা দিলেন মেডেন। শেষ বলে সিংগেল নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। স্ট্রাইকে কামরুল ইসলাম। চারটা বল খেললেন, পঞ্চম বলটা গেল মিডউইকেটে। রান নিতে গিয়ে দুই ব্যাটসম্যান থমকে দাঁড়ালেন ক্রিজের মাঝামাঝি এসে! কামরুল আবার ওইদিকে ফেরার চেষ্টা করলেন, দাঁড়িয়ে থেকে দুজন কথাও বললেন। শেষ পর্যন্ত সিংগেলটা হলো।
ডাক, ডাক, ডাক। ছয়!
চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক। দুই ইনিংসেই ‘ডাক’। ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসেও কামরুলের নামের পাশে থাকলো শূন্য। টানা চতুর্থ শূন্যের সামনে দাঁড়িয়ে বেন স্টোকসের তিনটা বল খেললেন। এরপর মঈন আলী। কামরুলের কি মনে পড়ে গেল সেই তিন ‘ডাক’! হতে পারে। মঈনকে মারলেন লং-অন দিয়ে ছয়! শফিউল ইসলাম ও জহুরুল ইসলামের পর কামরুলের টেস্টে প্রথম স্কোরিং শট হলো ছয়!
স্যালুট!
আনন্দে ভাসিয়েছেন। নিজেও ভেসেছেন। বোলিং প্রান্ত থেকে পাখির ডানা মেলার মতো ভংগী করে এসে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত ছুড়েছেন সামনে। যেন স্প্রিন্ট প্রতিযোগীতা! মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর যেন এদিন ভর করেছিলেন ইমরান তাহির! তবে সে উদযাপনকে হয়তো ছাড়িয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। বেন স্টোকসকে বোল্ড করে ‘স্যালুট’ দিলেন, স্টোকসের সংগে এই স্যালুট যে জড়িয়ে আছে নানাভাবে!
কুক-প্রাণ!
মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউয়ের আবেদনের সাড়া দিলেন কুমার ধর্মসেনা। সিরিজে প্রথম ঘটনা নয় এমন। কুক রিভিউ নিলেন। হক-আই দেখালো, অল্পের জন্য মিস করে গেছে লেগ-স্ট্যাম্প! ধর্মসেনা সিদ্ধান্ত বদলে নিলেন। সিরিজে তো এটাও প্রথম নয়! এরপরের রিভিউটা অবশ্য বাংলাদেশ নিল। এবারও ওই লেগস্ট্যাম্পই মিস করে গেল! সেই কুক আউট হলেন, ক্যাচটা মুমিনুল ধরলেন, শরীরের কোন অংশের এতে বেশী অবদান, সেটা তিনিই বলতে পারবেন ভাল!
এবং ধর্মসেনা!
সামনে এসে খেলতে গিয়েছিলেন স্টিভেন ফিন। ধর্মসেনা আউট দিলেন, এলবিডাব্লিউ! বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়। ফিন ওদিকে রিভিউ চাইছেন! তবে কি আবার নতুন কিছু? না, ইংল্যান্ডের রিভিউ যে শেষ হয়ে গেছে! সিরিজে অনেক ‘আলোচিত’ কুমার ধর্মসেনার সিদ্ধান্তেই শেষ হলো ম্যাচ, রিভিউ ছাড়াই! ওই যে সবশেষে বলতে হয়, ‘আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত’!