• ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ
  • " />

     

    বাংলাদেশের পাশেই আছেন কুক

    বাংলাদেশের পাশেই আছেন কুক    

    মাঠের লড়াইয়ে ইংল্যান্ড কঠিন প্রতিপক্ষ। ২২ গজের খেলায় একচুল ছাড় দেয়ার নাম নেই। উল্টো আছে বেন স্টোকসদের মতো আক্রমণাত্মক শরীরী ভাষা দিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা। ওয়ানডে সিরিজের পর টেস্টেও ইংল্যান্ডকে এমন রূপে দেখা গেলেও অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক মাঠের বাইরে সত্যিকারের ভদ্রলোক। বাংলাদেশের পরম সুহৃদ। নিরাপত্তার নামে যেখানে অন্য দলগুলো বাংলাদেশকে ফেলে দিচ্ছিল বাতিলের লাল খাতায়, সেখানে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাংলাদেশ সফর করেই ক্ষান্ত হননি, অন্যদেরও এই ক্রিকেট পাগল দেশ সফরে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন।

    ভাবুন তো অস্ট্রেলিয়ার পর ইংল্যান্ডও বাংলাদেশ সফরে না হলে কী হতো? ঠিক ধরেছেন অনিশ্চয়তার একটা কালো পর্দা নেমে আসতো বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর। ১৬ কোটি মানুষের আশা ভরসার ক্রিকেট মুহূর্তে পরিবর্তিত হত শ্মশানে। বিপিএলে খেলতে আসতেন না বিদেশি খেলোয়াড়রা। জেলা স্টেডিয়ামগুলোর শ্যাওলা সংক্রমিত হতো চট্টগ্রাম/ঢাকার নামজাদা স্টেডিয়ামগুলোতে। বেশি দূরে যেতে হবে না। এই ইংল্যান্ডেরই তো ওয়ানডে অধিনায়ক এউইন মরগান ও ওপেনার অ্যালেক্স হেলস বাংলাদেশ সফরে এলেন না। এখানেই ভীষণ ব্যতিক্রম অ্যালিস্টার কুক। নবাজতক সন্তানকে একনজর দেখেই উড়ে এসেছেন বাংলাদেশে। ওপেনার হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী কুক আগ্রহভরে দেখেছেন বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেট উন্মাদনা। গ্যালারিতে ভীড় করে থাকা মানুষদের মুখে, প্রেস কনফারেন্সের উন্মুখ সংবাদকর্মীদের চাহনীতে, হোটেল ও নিরাপত্তা কর্মীদের অব্যক্ত প্রতিক্রিয়ায় শুনেছেন একটাই আকুতি। সেটা হলো ‘ধন্যবাদ ইংল্যান্ড’। সিরিজ শেষে তাই বললেন, “এখানে অনেক মানুষ আমাদের সমর্থন করতে এসেছে। অন্যদের উচিত এদেশে সফর করা ও ক্রিকেট খেলা।”

    বাংলাদেশের প্রশংসায়ও হলেন পঞ্চমুখ, “তাদের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। ঘরের মাটিতে তারা খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের অনেকগুলো ভালো স্পিনার আছে।” আলাদা করে কারো নাম বলেননি। কিন্তু ইংল্যান্ডের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে চলছে ১৯ বছর বয়সী মিরাজের বন্দনা। আঙুলের কারসাজিতে যিনি সৃষ্টি করেছেন এমন মায়ামন্ত্রজাল যাতে কুপোকাৎ হয়েছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। সঙ্গে বিশ্ব ক্রিকেটের সুপরিচিত মুখ সাকিব আল হাসান তো আছেনই। তাঁদের খেলাটাও আসন্ন ভারত সফরের জন্য একটা অভিজ্ঞতা হলো কুকদের জন্য, “আমাদের দ্রুত শিখতে হবে। আমাদের দলে অনেক প্রতিভা আছে। যদি অভিজ্ঞতা কাজে লাগাই তবে এখান থেকেই অনেক কিছু শেখার আছে।”

    চট্টগ্রাম ও ঢাকার স্পিন সহায়ক পিচে খেলার অভিজ্ঞতা যে ইংলিশদের ভারত সফরে কাজে লাগবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু বাংলাদেশের ১০৮ রানের জয়কে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন কুক? উত্তরে ইংলিশ অধিনায়ক বলেছেন, “যদিও আমার জন্য বলা সহজ নয়, কিন্তু এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বড় একটা জয়। সম্ভবত এটা কেবলই একটা ম্যাচের চেয়েও বড় কিছু।”