• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    কিক অফের আগেঃ সুপার ক্লাসিকোর সুপার লড়াই

    কিক অফের আগেঃ সুপার ক্লাসিকোর সুপার লড়াই    


    দুই কোচের দুই রকম ম্যাচ

    কোপা আমেরিকা সেন্টানারিওর পর নিজ নিজ দলের দায়িত্ব বুঝে নেন তিতে ও বাউজা। এরপর বাছাইপর্বে তিতে টানা চার ম্যাচে জয় পেলেও, আর্জেন্টিনা কোচ এডগার্দো বাউজার জন্য সমীকরণটা এরই মাঝে কঠিন হয়ে পড়েছে।

    ব্রাজিলের বিপক্ষে সুপার ক্লাসিকোর ম্যাচ থেকে খালি হাতে ফিরতে হলে রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার উপস্থিতিই শঙ্কায় পড়ে যাবে। এমন দুশ্চিন্তা কাল মাঠে নামবেন বাউজা। লিওনেল মেসির দলে ফিরে আসা কেবল স্বস্তি দিতে পারছে বাউজাকে।

    মেসি দলে ফিরলেও আক্রমণভাগে অধিনায়কের সাথে কে খেলবেন তা নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। ইনজুরির কারনে দলে নেই দিবালা। আগুয়েরোরের পারফরম্যান্স নিয়ে আর্জেন্টিনায় চলমান সমালোচনার মুখে বাউজা হয়ত হিগুয়েইনকেই বাছাই করবেন প্রথম একাদশের জন্য। 

    আরও একটি  গুরুত্বপুর্ণ ম্যাচে মাঝমাঠের গুরু দায়িত্বটা নিতে হবে মাসচেরানোকেই। নেইমার, কুতিনহোদের সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে এই ম্যাচ মাসচেরানোকে কঠিন এক পরীক্ষার সামনেই ফেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে রক্ষণভাগে ওটামেন্ডি, ফুয়োনেস মরিদের অধারাবাহিকতা মাঝমাঠে মাসচেরানোর কাজের চাপটা বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ।

    অন্যদিকে দুঙ্গার উত্তরসূরি তিতের অবশ্য এতো দুশ্চিন্তা নেই। দলে নেইমার তো আছেনই। সাথে ফর্মে আছেন লিভারপুলের দুই সতীর্থ কুতিনহো আর ফিরমিনো। ক্যাসেমিরোর উপস্থিতিতে আগের দুই ম্যাচে ব্রাজিলের মাঝমাঠটা ভালোই সামাল দিয়েছিলেন ফার্নান্দিনহো। মেসিদের আটকানোর গুরু দায়িত্বটা এই ম্যাচেও তাই পড়তে পারে ম্যানচেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডারের ওপরই।


     

    ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ মেসি

    ক'দিন আগেই হুয়ান রোমান রিকলমে বলেছিলেন "মেসিকে ছাড়া আর্জেন্টিনা দলটা বড্ড সাদামাটা"। সাবেক আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের কথার মিল খুঁজে পাওয়া যায় পরিংখ্যান থেকেও। বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত হয়ে যাওয়া ১০ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে খেলতে পেরেছেন মেসি। আর আর্জেন্টিনা বাছাইপর্বে সবমিলিয়ে জিতেছে চারটি ম্যাচে। শুধুমাত্র প্রথম ম্যাচটাই নিজেদের অধিনায়ককে ছাড়া জিততে পেরেছিল আর্জেন্টিনা।

    শুধু পরিসংখ্যান নয় মাঠের খেলাতেও মেসিবিহীন আর্জেন্টিনার অসহায়ত্ব স্পষ্ট। তাই আর্জেন্টিনা দলে মেসির ফিরে আসাটাই প্রতিপক্ষের মাঠে এমন ম্যাচের আগে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে আলবিসেলেস্তেদের।

    বিশেষ করে গত সপ্তাহে সেভিয়ার বিপক্ষে মেসির পারফরম্যান্স আর্জেন্টাইনদের আশার পালে হাওয়া যোগাচ্ছে আরও। আর তাই ব্রাজিলের জন্যও প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়িয়েছেন মেসি একাই।

    সুপার ক্লাসিকোর দামামা
     

    একের পর এক ফুটবলকে পৃথিবীর সেরা সব খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে এই দুই দলই। ফুটবলের সব শিরোপাই রয়েছে এই দুই দেশের ঝুলিতে। ১৯১৪ সালে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এই দুই দলের লড়াইয়ে ৩৯ বার জিতেছে ব্রাজিল। আর ৩৭ বার ফল গেছে আর্জেন্টিনার পক্ষে। কালের বিবর্তনে পেলে, ম্যারাডোনা, জিকো, সক্রেটিস, বাতিস্তুতা হয়ে সুপারক্লাসিকোর আলো এখন মেসি-নেইমারদের ওপর। দুই দেশের ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বীতা তাই গোটা পৃথিবীর জন্যই বিশেষ কিছু।

    বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো দেখা হতে যাচ্ছে চির-প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের। এর আগে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে আলাদা দুই গ্রুপে রেখে করা হত দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই। ২০ বছর আগে নিয়ম বদলে ফেলায় চার বছরে অন্তত দু'বার সুপারক্লাসিকো দেখার সৌভাগ্য হয় দুনিয়ার ফুটবল ফ্যানদের! 

    বেলো হরিজন্তের হালচাল!

    এই স্টেডিয়ামটার কথা আলাদা করে মনে থাকার কথা সব ব্রাজিল সমর্থকদেরই। দু'বছর আগে জার্মানির কাছে সেমিফাইনালের সেই লজ্জার রাতটা এসেছিল এই মাঠেই। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কখনই নিজেদের মাঠে হারতে হয়নি ব্রাজিলকে। বেলো হরিজন্তেতে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে গেলে মারাকানার 'অপয়া' সিলটা সেঁটে যেতে পারে এই স্টেডিয়ামের গায়েই। দু'মাস আগে মারাকানায় অলিম্পিকের সোনা জিতে প্রায় সত্তর বছর আগের সেই পুরোনো ক্ষত কিছুটা সেরেছে ব্রাজিলিয়ানদের। ধুঁকতে থাকা আর্জেন্টিনার কাছে নিজেদের মাঠে হেরে গেলে 'অপয়া' শব্দটা তো বদলী হতেই পারে!