ইংল্যান্ডের সামনে "মিশন ইম্পসিবল"
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ৪৫৫, ২০৪ (কোহলি ৮১, ব্রড ৩৩/৪)
ইংল্যান্ড ২৫৫, ৮৭/২ ( কুক ৫৪, জাদেজা ২৫/১)
অ্যালিস্টার কুক এবং হাসিব হামিদ যেন ফিরিয়ে আনলেন টেস্ট ইতিহাসের শতবছর আগের সময়টা। বোলাররা বল করেই যাচ্ছেন, ব্যাটসম্যান ঠেকিয়েই যাচ্ছেন। রান নেওয়ার যেন কোন তাড়াই নেই কারো মাঝে! মাঝে সাঝে দুই এক রান নিচ্ছেন। দুই ইংলিশ ওপেনারের ‘শম্বুকগতির’ ব্যাটিং ইংল্যান্ডকে এক অসম্ভব লক্ষ্যপূরণের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। তবে দিনের শেষ বলে কুককে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফিরেছে ভারত। দেশের মাটিতে ভারত ৩০০র বেশি লক্ষ্য দিয়ে একবারই হেরেছিল। ২০০৮ সালে সেবার প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ডই। এবার বিশাখাপত্তনমের কঠিন হয়ে আসা উইকেটে ড্র হলেই সেটা হবে জয়ের সমান।
দিনের শুরু থেকেই ব্রড ও রশিদের বল দুর্বোধ্য ঠেকছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে। এক কোহলি ছাড়া কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন না ক্রিজে। রাহানেকে ফিরিয়ে ব্যাটিং ধ্বসের সূচনা করেন ব্রড। এরপর মাত্র ৪৫ রানের মাঝেই ভারতের পরের ৫ উইকেট তুলে নেয় ইংলিশরা। রশিদের বল কোহলির ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে গেলে ‘সুপারম্যান’ হয়ে ওঠেন বেন স্টোকস। তাঁর চোখ ধাঁধানো ক্যাচেই দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ভারতের অধিনায়ক। মাত্র ১৯ রানের জন্য দারুণ এই কীর্তি হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হয়েই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। শেষ উইকেটে জয়ন্ত যাদবে- মোহাম্মদ শামি দলকে দুইশর ঘরে নিয়ে যায়।
বিশাখাপত্তমের পিচ দেখে কেউ হয়ত চতুর্থ ইনিংসে ৪০৫ রান তাড়া করে জয়ের কথা কল্পনাতেও আনবেন না। কুক-হামিদ জুটিও হয়ত এই ভেবেই শুরু করলেন 'প্রস্তর যুগের' ব্যাটিং। রান তোলার গতি কতোটা স্লথ ছিল সেটা বোঝা যায় একটা রেকর্ড দেখেই। দলের ৫০ রান পূরণ হতে লেগেছে ২২৩ বল, যা কিনা গত ১৮ বছরে সবচেয়ে ধীরগতির ওপেনিং জুটি।
কোনভাবেই আউট করা যাচ্ছিল না দুজনকে। কোহলির কপালে চিন্তার ভাজটা স্পষ্ট হচ্ছিল। এর মাঝে মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় রিভিউ সিস্টেম। নিজেদের দুটি রিভিউই বিফলে গিয়েছে অশ্বিনদের। গতবছর দিল্লীতে একইরকম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ারস। যখন মনে হচ্ছিল আজকের দিনে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে ভারতকে, ঠিক তখনই অশ্বিনের বলে ভাঙ্গে হামিদের প্রতিরোধ। অশ্বিনের বলটি এতই নিচু হয়ে এসেছিল যে হামিদ বসেই পড়েছিলেন। দিনের শেষ বলে কুককে ফিরিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকে আনন্দে ভাসান জাদেজা।