এক ফুঁয়ে শঙ্কার অবসান অথবা.....
গত একটা বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে এ ম্যাচটাকে ঘিরে। বাংলাদেশ কি জিততে পারবে আফগানিস্তানের সাথে? এশিয়া কাপের মত আবার কোন কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে না তো? চায়ের কাপ, ক্লাসরুম থেকে শুরু করে মোড়ে মোড়ে আস্তানা গেড়ে বসে গেছে ‘আফগান-জুজু’। মূলত গেল বছরের মার্চে এশিয়া কাপের সেই পরাজয়টার পর থেকেই জন্ম হয় শঙ্কামিশ্রিত এ আলোচনাগুলোর। অবশেষে একেবারে দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়ে গেছে ম্যাচটি। ম্যাচ নিয়ে সকল আশঙ্কা-সম্ভাবনার অবসান হবে কাল, মানুকা ওভালে।
এমনিতেই অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় অবস্থিত এ গ্রাউন্ডের রান-প্রসবী হিসেবে সুনাম আছে। তার উপর আসরের শুরু থেকে প্রতিটি ম্যাচে যে পরিমাণ রানের দেখা পাওয়া যাচ্ছে, স্পষ্টই বোঝা যায় বোলারদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়েই অপেক্ষা করছে কালকের ম্যাচটা। খুব স্বাভাবিকভাবেই দু’দলের পার্থক্যটা ব্যাটসম্যানদেরই গড়ে দিতে হবে।
ব্রিসবেন থেকে সিডনি, সিডনি থেকে ক্যানবেরা- একমাত্র মাহমুদুল্লাহ বাদে স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাটিং দেখা যায়নি কারো কাছ থেকেই। চোট থেকে ফিরে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা ভালো ইনিংস অবশ্য খেলেছেন তামিম। তবে সহযোগী দেশের বিরুদ্ধে প্রত্যাশার চাপটা জয় করতে স্বতঃস্ফূর্ত ব্যাটিং করতে হবে অধিকাংশ ব্যাটসম্যানকে। এই প্রত্যাশার চাপই সিডনিতে সেদিন হারিয়ে দিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। প্রস্তুতি ম্যাচ বলে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে ব্যাটিং অর্ডার, বোলিং লাইন নিয়ে- এই যুক্তিতে না হয় পাশ কাটিয়ে যাওয়া হল আইরিশ লজ্জাকে। কিন্তু মূল আসরের প্রথম ম্যাচে শক্তির বিচারে ঢের পিছিয়ে থাকা আফগানিস্তানের কাছে হোঁচট খেয়ে ফেললে কিন্তু কোন ব্যাখ্যাই ধোপে টিকবে না।
আফগান পেসাররা বেশ লম্বা ও গতিময় হওয়ায় পেস আক্রমণে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে আফগানিস্তান। দুই জাদরান ভাই দৌলত ও শাপুরের সঙ্গে হামিদ হাসান সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন ফাস্ট ও বাউন্সি কন্ডিশনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে। অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী অফস্পিনের সাথে সাথে ব্যাটিংয়েও দলের আস্থার প্রতীক। সাথে আরেক জাদরান ভাই নজিবুল্লাহ, আসগর স্ট্যানিকজাই, সামিউল্লাহ শেনওয়ারীরা তো আছেনই।
বাংলাদেশের কালকের একাদশে তামিম ও এনামুলের পর তিন নম্বর জায়গাটায় মমিনুলের চেয়ে সৌম্যকেই নাকি বেশি পছন্দ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের। যদিও দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মমিনুলের জায়গায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেবলই পা রাখা সৌম্যকে নেওয়াটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। অনিশ্চয়তা আছে সাত নম্বর ‘পজিশন’ নিয়েও। নাসির বা সাব্বির- দুজনের একজন খেলবেন ঐ জায়গায়। পেস আক্রমণে মাশরাফির সাথে রুবেল ও তাসকিনের থাকার ব্যাপারটা প্রায় নিশ্চিত। আর একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে এখন পর্যন্ত তাইজুলের নামটাই বেশি শোনা যাচ্ছে।
রসদ ও ক্রীড়াকৌশলের দিক দিয়ে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে টাইগাররা। ঠিক সময়ে ঠিক কাজটা করে দিতে পারলে হয়তো এক ফুঁয়েই হয়তো উড়ে যাবে অনিশ্চয়তা,শঙ্কা, আফগানদের দেওয়া হুমকি- সবকিছু। আর তা না হলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার আশাটা একেবারেই ক্ষীণ হয়ে যাবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের।