বিসিসিআইকে "শাস্তি" দিল আইসিসি
শশাঙ্ক মনোহর কি তাহলে ভারতের ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়ে গেলেন? আইসিসির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিসিসিআইয়ের সঙ্গে তাঁর চাপান উতোর লেগে আছে। এবার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তাতে সেই সম্পর্ক আরও অবনতির মুখে। গত আগস্টে পাকিস্তানের মেয়েদের সঙ্গে যে সিরিজ খেলার কথা ভারতের, সেটা পরিত্যক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানকে ওই সিরিজের পূর্ণ ছয় পয়েন্ট দিয়েছে আইসিসি।
গত আগস্টে তিন ম্যাচের সিরিজে ভারতের মেয়েদের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু দুই দলের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেটি বাতিল হয়ে যায়। সেই সিরিজের জন্য এবার পাকিস্তানকে সবগুলো ম্যাচে জয়ী ঘোষণা করেছে আইসিসি। শুধু তাই নয়, ওই তিন ম্যাচে ভারতের রান শূন্য হিসেব করে রানরেটও হিসেব করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়েই এবার খেপেছে বিসিসিআই। তাদের যুক্তি, সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ভারত সরকারের কোর্টে, সেজন্য দলকে শাস্তি দেওয়াটা অনুচিত, “আইসিসি খুব ভালোমতোই জানে ভারতের সৈন্যরা শহীদ হচ্ছে, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাটা পুরোপুরিই জনমতের বিপক্ষে যাবে। চেয়ারম্যান খুব ভালোমতোই জানেন সরকারের অনুমতি ছাড়া আমরা কিছু করতে পারব না। এটা পুরোপুরি পাকিস্তানকে সুবিধা দেওয়ার একটা পরিকল্পনা। ওরা বলতে পারে এখন তো পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাই যায়। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। আইসিসি যদি এভাবে বাগড়া দেয়, তাহলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আমাদের মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা সম্ভব নয়।“
তার আগে আইসিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানকে জয়ী ঘোষণা করার কথা নিশ্চিত করেছিল, “টেকনিক্যাল কমিটি ওই তিন ম্যাচের প্রতিটিতে পাকিস্তানকে দুই পয়েন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” আইসিসি এও জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ব্যাপারে তাদের জানা আছে। কিন্তু বিসিসিআই সেটাকে “যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত” কারণ হিসেবে দেখাতে না পারায় বাধ্য হয়েই তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
মনোহর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দুই স্তর বিশিষ্ট টেস্টসহ বিভিন্ন ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিসিআই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “মনে হচ্ছে মনোহরের বিসিসিআই বিরোধী অবস্থান এখন ভারত বিরোধী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যা চলছে, সেটা তাঁর না জানার কথা নয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি জনমানুষের অনুভূতিটা পুরোপুরি উপেক্ষা করেছেন।”
বিসিসিআই সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি।