স্বস্তির জয়ে কাটল 'আফগান-জুজু'
আফগানদের শেষ উইকেটটি তুলে নিতে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেওয়ার সময় মুশফিকের ভেতর থেকে যে চাপা ক্ষোভটা ঠিকরে বেরুলো, এতেই প্রমাণিত ম্যাচটাকে ঘিরে কি পরিমাণ চাপের ভেতরে এতদিন ছিল টাইগাররা। কথাবার্তা, আচরণে প্রকাশ পায়নি, তবে গত মার্চে এশিয়া কাপের সেই পরাজয়ের পর ভেতরে ভেতরে ‘আফগান-জুজু’ ঠিকই জেঁকে বসেছিল তাদের মধ্যে (দেখুন-ম্যাচ প্রিভিউ)। গত একটা বছর ধরে এ ম্যাচটাকে ঘিরে একটু একটু করে জমা হওয়া শঙ্কা আর অনিশ্চয়তা অবশেষে অতীত।
ম্যাচের পর মাশরাফি নিজেও স্বীকার করলেন চাপে থাকার কথা। তবে খেলোয়াড়েরা চাপের মধ্যেও মানিয়ে নিতে পেরেছে- এই ব্যাপারটাই সবচেয়ে আনন্দ দিচ্ছে তাঁকে। চাপকে জয় করে বিশাল জয়ের পথে সামনে থেকে নেতৃত্বটা অবশ্য তাঁকেই দিতে হয়েছে। রানপ্রসবা মানুকা ওভালে ২৬৭ রানের পুঁজিকে বড় বলা যাবে না মোটেই। প্রয়োজন ছিল আফগানদের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানা। রুবেলকে নিয়ে সেই কাজটা ভালোভাবেই করেছেন বাংলাদেশ কাপ্তান। তৃতীয় ওভারের মধ্যেই ৩ রানে আফগানদের ৩ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান এ দুজন। এরপর আর একবারের জন্যেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি আফগানিস্তান। মাশরাফি ৩টি, সাকিব ২টি এবং রুবেল, তাসকিন ও মাহমুদুল্লাহ নেন একটি করে উইকেট। ম্যাচ শেষে মাশরাফির বোলিং ফিগারটা ছিল দেখার মত (৯-২-২০-৩)।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম-এনামুলের উদ্বোধনী জুটি ৪৭টি রান করেছে বটে, তবে দুজনে মিলে ৯৭টি বল খেলার মাধ্যমে উইকেটে থিতু হওয়ার পর উইকেট বিলিয়ে দিয়ে দলের জয়ে কতটুকু অবদান রেখেছেন, সেটা একটা প্রশ্ন বটে। তার উপর নিশ্চিত এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের একমাত্র সুযোগটি নষ্ট করেছেন এনামুল। পাঁচ রানের ব্যবধানে এ দুজনের বিদায়ের পর সৌম্য-মাহমুদুল্লাহর ৫০ রানের প্রতি-আক্রমণমূলক জুটিটা আলাদাভাবে নজর কেড়েছে। তবে ম্যাচের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ‘পার্টনারশিপ’ বলতে হবে সাকিব ও মুশফিকেরটা। ১১৯ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর এ দুজনের ১১৪ রানের আগ্রাসী জুটিটাই মূলত তৈরি করে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ। সাকিব ৬৩ ও মুশফিক করেন ৭১ রান। ৭১ রানের পাশাপাশি দুটো রান-আউটের অংশ হয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন মুশফিকুর রহিম।
গোটা ম্যাচে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ব্যাপার ছিল বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মমিনুলের নয় নম্বরে নামা। বোলিংয়েও না আনা মমিনুলকে দলে রাখার পেছনে নির্বাচকদের উদ্দেশ্যটা বেশ অস্পষ্ট নয় কি? ছবি-সৌজন্যঃআইসিসি