• ভারত-ইংল্যান্ড
  • " />

     

    মঈনের "বৃত্তপূরণ" এবং ক্রিকেটের সব্যসাচীদের গল্প

    মঈনের "বৃত্তপূরণ" এবং ক্রিকেটের সব্যসাচীদের গল্প    

    দুই বছর আগে অভিষেক হয়েছিল লর্ডসে। এর মধ্যে খেলেছেন ৩৪টি টেস্ট, মঈন আলী এখন ইংল্যান্ড দলে অপরিহার্যই। তবে এই দুই বছরের মধ্যেই একটা বিরল তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। ক্যারিয়ারে এক থেকে নয় নম্বর পর্যন্ত সব পজিশনেই ব্যাট করার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে মঈনের। ইংল্যান্ডের চেয়ে এর চেয়ে বেশি পজিশনে ব্যাট করেছেন শুধু উইলফ্রেড রোডস।

    দুই বছর আগে অভিষেকের সময় নেমেছিলেন ছয় নম্বরে। এর পরের কয়েকটা টেস্ট ওখানেই ব্যাট করছিলেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল ছয় সাতেই থিতু হয়ে যাবেন। তবে গত বছরে পাকিস্তানের বিপক্ষে শারজায় চলে আসেন ওপেনিংয়ে। এরপর আবার দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চলে যেতে হয়েছে পুরনো পজিশনে। তার আগে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যাট করেছেন নয়েও।

      

                                                                উইলফ্রেড রোডস

     

    বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজেই আবার ওপরে নিয়ে আসা হয় মঈন আলীকে, এবার নামেন পাঁচে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্টেও সেখানেই ব্যাট করছিলেন। তবে মোহালির প্রথম ইনিংসে উঠে আসেন চারে। দ্বিতীয় ইনিংসে হাসিব হামিদের চোটের জন্য নামতে হয় ওয়ান ডাউনেই। এক থেকে নয়- সবখানেই ব্যাট করার বৃত্তপূরণও হয়ে গেল মঈনের। রোডসের পাশে বসতে এখনও দশ ও এগার নম্বরে ব্যাট করতে হবে।  ইংল্যান্ডের হয়ে মঈনের মতো নয়টি আলাদা পজিশনে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা আছে ট্রেভর বেইলিরও।

    তবে রোডসের মতো “এক থেকে এগারোতে” ব্যাট করেছেন আরও দুইজন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সিড গ্রিগরি সবচেয়ে প্রবীণ, টেস্ট অভিষেক হয়েছিল সেই ১৮৯০ সালে। গ্রিগরি মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন, ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ব্যাট করতে হয়েছে চার-পাঁচেই। তবে দলের প্রয়োজনে যেমন ওপেনিংয়ে নামতে হয়েছে, তেমনি ব্যাট করতে হয়েছে আরও পরেও। এমনকি একবার করে দশ ও এগার নম্বরে ব্যাট করতে হয়েছে গ্রিগরিকে।

    রোডসের অভিষেক তাঁর নয় বছর পর, ১৮৯৯ সালে। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন ছিলেন। ক্যারিয়ারে ৪৩ বার যেমন ওপেনিংয়ে নেমেছেন, ২৩ বার ব্যাট করেছেন নয় ও দশেও। এর মধ্যে ব্যাট করা হয়ে গেছে অন্যান্য সব পজিশনেও।

    ভারতের ভিনু মানকডও ছিলেন তাঁর সময়ের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। মূলত ছিলেন ওপেনারই, তবে দলের প্রয়োজনে ব্যাট করতে হয়েছে অন্যান্য পজিশনই। ক্যারিয়ার শেষে তাই এক থেকে এগার-সবখানেই খেলে ফেলেছিলেন ভারতের এই সাবেক অলরাউন্ডার।

    পাকিস্তানের নাসিমুল গনিও এই তালিকায় চলে আসতে পারেন। বাকি তিনজনের সঙ্গে তাঁর একটাই পার্থক্য, ইনিংসের প্রথম বলটাই শুধু তাঁর খেলা হয়নি। এ ছাড়া ওপেনিংয়ে যেমন নেমেছেন, তিন থেকে এগার নম্বর পর্যন্ত বাকি সব জায়গাতেই ব্যাট করা হয়ে গেছে। দশটি পজিশনে ব্যাট করেছেন ভারতের রবি শাস্ত্রী, ফারুক ইঞ্জিনিয়ার, অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং, জ্যাক ব্ল্যাকহাম, ইয়ান জনসন, স্যামি জোনস ও হিউ ট্রাম্বলের। আর পাকিস্তানের নাসিম উল গনি ছাড়াও দশটি আলাদা পজিশনে ব্যাট করেছেন সুজাউদ্দিনেরও।

     

    প্রশ্ন উঠতেই পারে, ওয়ানডেতে সেই কীর্তি আছে কার? ওয়ানডে পর্যন্ত ১ থেকে ১১ পর্যন্ত সব পজিশনে ব্যাট করার কীর্তি আর কারও নেই। তবে দশটি পজিশনে ব্যাট করেছেন ছয়জন। এর মধ্যে পাকিস্তানের আছে তিনজন- শোয়েব মালিক , আবদুল রাজ্জাক ও শহীদ আফ্রিদির। দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুসনার ও শ্রীলঙ্কার হাশান তিলকরত্নেরও আছে এই কীর্তি। আর আছেন বাংলাদেশের একজনও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে শুধুই চারেই নামা হয়নি মোহাম্মদ রফিকের। এক থেকে এগারোর মধ্যে বাকি সব পজিশনেই ব্যাট করেছিলেন সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার। তবে রাজ্জাক একটা জায়গায় বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। নাসিম উল গনির মতো তাঁরও ইনিংসের প্রথম বলটাই খেলা হয়নি। দুই থেকে বাকি সব পজিশনেই নেমেছেন। এখানে তাই মুকুটটা তিনি দাবি করতেই পারেন!