স্যামির ব্যাটিং জাদুতে চট্টগ্রামের বিদায়
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং ভাইকিংস ২০ ওভারে ১৪২/৮ (তামিম ৫১, গেইল ৪৪; কেসরিক ৪/১১, রেজা ২/২৬)
রাজশাহী কিংস ১৮.৩ ওভারে ১৪৩/৭ (স্যামি ৫৫*, সোহান ৩৪; সজীব ২/২৪, শুভাশিস ২/২৮)
ফলঃ রাজশাহী কিংস ৩ উইকেটে জয়ী
জয় সূচক রান নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গী ফরহাদ রেজাকে ডেকে নিলেন রাজশাহী কিংস অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ততক্ষণে সতীর্থরা ছুটে এসেছেন মাঠে। তাঁদের সামনে দাঁড় করিয়ে নানা ভঙ্গিমায় পোজ দিতে লাগলেন জয়ের দুই নায়ক। সতীর্থরাও মুগ্ধ ফটোগ্রাফারের মতো একে একে দৃশ্যগুলো বন্দী করতে লাগলেন কাল্পনিক ক্যামেরায়। এই উদযাপন তাঁদের মানায়। পরাজয়ের কার্নিশ থেকে দুর্দান্তভাবে ফিরে এসে মহাকাব্যিক এক জয় যে তুলে নিয়েছে রাজশাহী কিংস। ড্যারেন স্যামির অধিনায়কোচিত বীরত্বে চিটাগং ভাইকিংসকে ৯ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী কিংস।
১৪৩ রানের লক্ষ্যটা হয়তো টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় তেমন বড় নয়। কিন্তু রাজশাহী কিংসের টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সেটাই এক সময় পরাজয়ের রূপ ধরে চোখ রাঙাচ্ছিল। ওপেনার নুরুল হাসান সোহান ছাড়া বলার মতো কেউই খেলতে পারেননি। ২৮ বলে ৩৪ রান করার পথে ২টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ৫৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললে মনে হচ্ছিল রাজশাহীর পরাজয় বোধহয় সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সেই ধ্বংসাবশেষ থেকে উত্থান ঘটেছে এক অকুতোভয় বীরের। তিনি অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ২৭ বলে অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই ফিরেছেন তিনি। ৭টি চার ও ২টি ছক্কা মেরে ঘাম ছুটিয়েছেন চট্টগ্রামের বোলারদের। ১১ বলে ১৯ রান করে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ফরহাদ রেজা। ৮ম উইকেটে তাঁদের ২৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটিতেই নিশ্চিত হয়েছে জয়।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪২ রান করে চিটাগং ভাইকিংস। এবারের বিপিএলটা স্বপ্নের মত কাটছে তামিম ইকবালের। তার ছটা আজও দেখা গেল। ৪৬ বলে ৫১ রান করে তুলে নিয়েছেন টুর্ণামেন্টে নিজের ষষ্ঠ ফিফটি। শুধু তাই নয়, মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহর পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে এক হাজার রান পূর্ণ করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ১৩ ম্যাচে ৪৭৬ রান করে রান সংগ্রহের দিক থেকে নিজের শীর্ষ অবস্থানকে নিয়ে গেছেন আরো উঁচুতে।
শুন্য রানে ডোয়াইন স্মিথ ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে আসেন ক্রিস গেইল। তিনি উইকেটে আসার খানিকবাদেই বোলিংয়ে আফিফ হোসেনকে নিয়ে আসেন রাজশাহী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। কিন্তু আজ আর পারেননি ১৭ বছর বয়সী আফিফ। ৩০ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে ২টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরেছেন গেইল। দুই তরুণ অফ স্পিনার আফিফ ও মিরাজকেই মেরেছেন দুটি করে ছক্কা। জেমস ফ্র্যাঙ্কলিনের একটি ফুলটস বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান গেইল। এরপর আর দাঁড়াতে পারেননি চট্টগ্রামের কোনো ব্যাটসম্যানই। মোহাম্মদ সামির বদলে খেলতে নামা কেসরিক উইলিয়ামস দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ১১ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এই জয়ে রাজশাহী জিইয়ে রেখেছে ফাইনালে ওঠার আশা। কাল আজকের অপর ম্যাচে পরাজিত দলটির সঙ্গে ফাইনালের ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে তারা।