গার্দিওলাকে ভার্ডির বড়দিনের উপহার
ম্যানচেস্টারে পা রেখেই বলেছিলেন নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাটা হয়ত তাঁকে ইংল্যান্ডেই দিতে হবে। মুখে বললেও সেই পরীক্ষা যে এতো কঠিন তা হয়ত ভাবেননি গার্দিওলা নিজেও! আগের সপ্তাহে চেলসির কাছে ৩-১ গোলে হারার পর এবার লেস্টার সিটির কাছে ৪-২ গোলে হারের লজ্জায় ডুবতে হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে। প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন জেমি ভার্ডি।
নিজের কোচিং ক্যারিয়ারে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো চার গোল হজম করলেন গার্দিওলা। এর আগে ২০০৯ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আর ২০১৫ সালে উলফসবার্গের বিপক্ষে চার গোল হজম করেছিল তাঁর দল।
এই মৌসুমে ঘরের মাঠে সাফল্য ধরা না দিলেও অন্যের মাঠে ম্যানচেস্টার সিটির সাফল্য ছিল ঈর্ষনীয়ই। গত সাত অ্যাওয়ে ম্যাচের ছয়টিতেই জেতা ম্যানসিটির প্রতিপক্ষের অবস্থা তো আরও সঙ্গীন! গতবারের চ্যাম্পিয়নদের অবস্থান ছিল এই ম্যাচের আগে পয়েন্ট তালিকার ষোল নম্বরে।
তবে এইসব সমীকরণের তোয়াক্কা না করে এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই দেখা গেল অন্যরকম এক লেস্টার সিটিকে। কে বলবে এই দলটিই মঙ্গলবার রাতেও পাঁচ গোলের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবেছিল! শুরুর ২০ মিনিট যেন গার্দিওলার সিটিকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলায় মেতে উঠল ফক্সরা। ঠিক যেন গত মৌসুমের সেই লেস্টার সিটির দেখাই মিলল আজ!
লেস্টার সিটি পুরোনো চেহারায় ফিরবে আর জেমি ভার্ডি স্বরুপে ফিরবেন না তা কেমন করে হয়! সব সমালোচনার জবাব দেবার জন্যে বোধ হয় এমন একটা ম্যাচই জমিয়ে রেখেছিলেন। ৭৪১ মিনিটের গোলখরা কাটালেন স্মরণীয় এক পারফরম্যান্স দিয়েই!
লেস্টার সিটির হয়ে গোলের খাতাও খুললেন ভার্ডিই। তাও মাত্র তিন মিনিটেই! এর দুই মিনিট বাদেই আবারও গোল! এবার অ্যান্ডি কিং। ডি বক্সের বাইরে থেকে করার কিংয়ের শট ব্রাভোর জালে জড়ালে লেস্টার উৎসবে মাতল রাজার মতোই! তবে একটু সাহসী হলে ব্রাভো শটটা ঠেকিয়ে দিতে পারতেন কি না তা নিয়ে হয়ত আলোচনাটা চলবে আগামী বেশ কদিনই!
বিশ মিনিটে এবার মাহরেজ দেখালেন নিজের ঝলক। মাহরেজ-ভার্ডি জুটির কল্যাণে তিন গোলের লিড পেল লেস্টার সিটি। মাহরেজের বাড়ান চমৎকার এক পাসে এগিয়ে আসা ব্রাভোকে বোকা বানিয়ে গোল করেন ভার্ডি।
৩-০ গোলে শেষ হওয়া প্রথমার্ধের পর আক্রমণে ধার বাড়ায় গার্দিওলার দল। ডি ব্রুইন, গুন্ডোয়ানরা চেষ্টা চালালেও সুবিধা করতে পারেননি। ততোক্ষণে তিন গোলে পিছিয়ে থেকে তো অনেক আগেই ম্যাচ হেরে আছে গার্দিওলার দল! ম্যানসিটি একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে গেলেও প্রতি আক্রমণে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল লেস্টার সিটিই বেশি। সেই সুবাদে ৭৯ মিনিটে গোল পেয়ে যান ভার্ডি। আর এই গোলেই পূরণ হয়ে ইংলিশ স্ট্রাইকারের লেস্টার সিটির হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকের মাইলফলক।
এরপর ৮২ ও ৯০ মিনিটে কোলারোভ আর নলিতো গোল করে ব্যবধান কমান ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে। ম্যাচ শেষ হয় ৪-২ গোলে। এই হারের পর পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে আছে ম্যানচেস্টার সিটি।