• নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ
  • " />

     

    রান তাড়া করার কোনো পরিকল্পনা দেখিনি

    রান তাড়া করার কোনো পরিকল্পনা দেখিনি    

    প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও আশা জাগিয়ে হেরে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে কে কত পাবেন? তিন নবীন- নুরুল, তানভীর বা শুভাশীষই বা কেমন নম্বর পেয়েছেন? মাশরাফিই কি বোলারদের মধ্যে বেশি নম্বর পাবেন? প্যাভিলিয়নে সেই কঠিন কাজটাই করার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল... 


    মাশরাফি বিন মুর্তজা

    ৯/১০

    আমার মনে হয় ও-ই আজকে আমাদের ম্যাচসেরা ছিল। গতির ওঠানামা, লাইন-লেংথ এসব মিলে ও আজকে দুর্দান্ত ছিল। আর অফ দ্য পিচ মুভমেন্টের কথা তো বলতেই হবে। আর নিয়মিত বিরতিতেই সে উইকেট পেয়েছে।

     

    শুভাশীষ রায়

    ৭.৫/১০

    ওর শুরুটাও ছিল খুবই ভালো। শুরুর দিকে ক্যাচ মিস করায় একটা উইকেট পায়নি। পরে অবশ্য সেই অতৃপ্তিটা ঘুঁচেছে। শেষ ওভার বাদ দিলে লাইন ও লেংথও ভালো ছিল। ডেবুট্যান্ট হিসেবে ও মুগ্ধই করেছে।

     

    তাসকিন আহমেদ

    ৭/১০

    গত ম্যাচের চেয়ে সে আজ অনেকটাই নিজেকে ফিরে পেয়েছে। মূল্যবান দুইটি উইকেটও পেয়েছে। তারপরও আমার কাছে মনে হয়েছে রিলিজ এরিয়া নিয়ে সে আরেকটু কাজ করতে পারে।

     

    সাকিব আল হাসান

    বোলিং: ৮/১০

    ব্যাটিং: ২/১০

    বোলার হিসেবে সাকিব আজ লেটার মার্কই পাবে, স্লো বোলারদের মধ্যে ও-ই ছিল বেশি কার্যকর। শুরুতে ল্যাথামের ওই এলবিডব্লুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আরেকটা ব্যাপার, আগে দেখা যেত সে শেষের দিকে বেশি উইকেট নিচ্ছে। এখন প্রথম তিন-চার ওভারের মধ্যেও সে নিয়মিত ব্রেক থ্রু এনে দিচ্ছে। বলের স্পিনটাও সে খুব ভালো নিয়ন্ত্রণ করছে। লাইন ও লেংথে সে অনেক উন্নতি করেছে।

    কিন্তু ব্যাটিংয়ে সে আজ পুরোপুরি হতাশ করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আজ ব্যাটিংয়ের সময় নিজের ভূমিকাটাই সে জানত না। ওই সময় তার উচিত ছিল ক্রিজে থাকা, মুশফিক না থাকায় ওর দায়িত্বও ছিল অনেক বেশি। সেদিক দিয়ে ও পুরোপুরিই হতাশ করেছে।

     

    তানভীর হায়দার

    বোলিং ৫.৫/১০

    ব্যাটিং  ২/১০

    আমার কাছে, বোলার হিসেবে ওকে খুব আহামরি কিছু মনে হয়নি। বিশেষ করে লেগ স্পিনারদের যে অস্ত্র, গুগলি বা ফ্লিপার, সেসবও ওভাবে দেখা যায়নি। তবে বাঁহাতিদের সঙ্গে ওকে লম্বা সময় বল করতে হয়েছে, যেটা সহজ কাজ নয়। আর ব্যাটিংয়ে তো ও তেমন কিছু করতে পারেনি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই দলে এই মুহূর্তে ওর জায়গা নেই।

     

    মোসাদ্দেক হোসেন

    বোলিং ৬.৫/১০

    ব্যাটিং ৩/১০

    আমার কাছে মনে হয়েছে, ওকে দিয়ে আরও বল করানো যেত। দুই ওভারেই সে জিমি নিশমের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা এনে দিয়েছিল। তবে ওর যে মূল কাজ, সেখানে তার কাছ থেকে আশা অনেক বেশি ছিল। সেখানে সে হতাশ করেছে।

     

    তামিম ইকবাল

    ৪/১০

    আমি বলব, আজ বাংলাদেশের সবার মধ্যে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করছিল তামিম। ওকে দেখে মনে হচ্ছিল ব্যাটিং করাটা খুবই সহজ। কিন্তু সে বলতে গেলে একরকম আত্মাহুতি দিয়েছে। ওর আসলে “টু মিটার” ডিফেন্সটা শিখতে হবে। ডিফেন্স করতে হবে দুই মিটারের মধ্যে, তখন আপনি অনেক বেশি সিঙ্গেল নিতে পারবেন। কিন্তু আজকে সেই কাজটা সেভাবে করতে পারেনি।

     

    ইমরুল কায়েস  

    ৫/১০

    ও যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে তার উচিত ছিল পুরো ইনিংসটা শেষ করে আসার চেষ্টা করা। ফিফটি করলেও শেষ পর্যন্ত সে উইকেটটা দিয়েই এসেছে। যেটা নিউজিলান্ডের ব্রুম করেনি। দুই দলের মধ্যে এই ব্যাপারটাই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।

     

    মাহমুদউল্লাহ

    ২/১০

    পুরো ইনিংসে ও-ই শুধু নিজের উইকেটটা দিয়ে আসেনি। তবে পর পর দুই ম্যাচেই শুরুতেই আউট হয়ে গেল, একটা ব্যাড প্যাচের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। এই ব্যাপারটা ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকেও।

     

    সাব্বির রহমান

    ৬.৫/১০

    সাব্বির শুরুতেই কিন্তু একবার রান আউটের হাত থেকে বেঁচে গেছে। এই রান আউটেও আমি ওরই বেশি দায় দেখি। তবে আমার মনে হয়েছে, সে আজ টি-টোয়েন্টির মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছে, শুরু থেকেই সে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু সেটার তো দরকার ছিল না। আজকে মনে হয়েছে সে বেশি তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। সে কিন্তু দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, আমি তাকে তিনেরই মনে করি। কিন্তু ও ঠিক নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করছে না।

     

    নুরুল হাসান

    কিপিং ৮.৫/১০

    ব্যাটিং ৭.৫/১০

    কিপার হিসেবে আমার কাছে ওর শরীরী ভাষা, টিমের সঙ্গে যোগসূত্র সবকিছুই দুর্দান্ত। একদমই মনে হয়নি সে আজকে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছে। কিপিংয়ে কয়েকটা ব্যাপার একটু খেয়াল করতে হয়- গ্লাভওয়ার্ক, ফ্যুটওয়ার্ক, বল কালেকশন। সব মিলিয়ে সে আসলে দারুণ ছিল। আর ব্যাটিংয়ে সে নিজের কাজটা ঠিকঠাকই করেছে। ওই মুহূর্তে তার খুব বেশি কিছু করারও ছিল না।

     

    দল হিসেবে

    আজ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে আমরা জিতলেও ব্যাটিংয়ে আমরা হেরে গেছি। আমার মনে হয়েছে, ২৫০ রান কীভাবে চেজ করতে হয় সেটার পরিকল্পনা আমরা কোথাও দেখিনি। সেই আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে আমরা অনেকবারই পরে ব্যাট করে মার খাচ্ছি। এই ম্যাচটা জিতলে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে উঠে যেত। কিন্তু হেরে যাওয়ায় আমরা দারুণ একটা সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলেছি।

     


    আমিনুল ইসলাম বুলবুলের অন্যান্য লেখাঃ

    আমাদের পাঁচজন বোলার খেলানো উচিত 

    জেতার তীব্র ইচ্ছাটা আমি দলের মধ্যে দেখিনি

    মাশরাফির ভুল যেন মুস্তাফিজে না হয়