মিরাজকে আরও আগে খেলানো উচিত ছিল
প্রথম দুই ওয়ানডেতে হেরে বাংলাদেশ দল একটু কোণঠাসা। তাহলে কি দলের পরিকল্পনা ঠিকঠাক কাজে আসছে না? তৃতীয় ওয়ানডের দল কেমন হবে? কোচ হাথুরুসিংহের দলের ভূমিকাটা আসলে কেমন হওয়া উচিত? এসব বিশ্লেষণ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল..
শেষ ম্যাচের মানসিকতা কেমন হওয়া উচিত?
এই সিরিজের আগে আমরা কিন্তু মানসিকভাবে বেশ চাঙা অবস্থায় ছিলাম। আফগানিস্তানের সঙ্গে জিতেছি, ইংল্যান্ডের সঙ্গেও কাছাকাছি গিয়েও ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারিনি। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই দুইটি পরাজয় ভুলেই সামনে তাকাতে হবে। আর টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট তো এখনো বাকি। সেদিক দিয়ে হিসেব করলে এই ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই ম্যাচে জয় সিরিজে কোনো প্রভাব ফেলবে না, তারপরও জয় পেলে সামনের ম্যাচগুলোর জন্য আমরা বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব।
কন্ডিশন কি বিরুদ্ধ ছিল?
বাংলাদেশ গত দেড় বছরেরও বেশি সময় উপমহাদেশের বাইরে খেলেনি। তবে এটা মনে রাখতে হবে, এই দলের অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছে। এই নিউজিল্যান্ডেও তাদের বেশ কয়েকজন খেলে গেছে। সুতরাং কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অজুহাতটা না দাঁড় করানোই উচিত। আর আমরা তো অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অনুশীলন ম্যাচও খেলে এসেছি। সেদিক দিয়ে আমি বলব না প্রস্তুতির খুব ঘাটতি হয়েছে। বরং আমাদের গেমপ্ল্যান ঠিকঠাক করা হয়নি বলেই সেটার মূল্য দিতে হয়েছে বলে আমি মনে করি।
শেষ ওয়ানডের দল কেমন হবে?
আমাদের মনে রাখতে হবে, বিকল্প খেলোয়াড়দের কেউই অভিজ্ঞ না। এই সময় যখন মুশফিক নেই, আমি মুমিনুলের মতো একজনের অভাবটা একটু টের পাচ্ছি। অনেক দিন ধরেই সে ওয়ানডে খেলেনি, আমি জানি না তাকে আদৌ বিবেচনা করা উচিত হবে কি না। তবে আমার মনে হয়, এই সময় ওপরের দিকে তার মতো একজন ব্যাটসম্যান দরকার ছিল। আর শেষ ওয়ানডের জন্য আমি নবাগত তানভীর হায়দারকে দলের বাইরেই রাখতে চাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই কন্ডিশনের সঙ্গে সে এখনো ঠিক খাপ খাইয়ে উঠতে পারেনি। এই কন্ডিশনে একজন লেগ স্পিনারকে আমার বিলাসিতাই মনে হয়। বরং আমি একজন বাড়তি পেসার খেলানোর পক্ষে, সেটা হতে পারে রুবেল হোসেন। আর যদি তানভীরের জায়গায় স্পিনার বিবেচনা করা হলে আমি অবশ্যই মেহেদী হাসান মিরাজকে নেওয়া উচিত। নিউজিল্যান্ডে তিনজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আছে, ওদের বিপক্ষে মিরাজ বড় একটা অস্ত্র হতে পারে। আমি তো বলব, ওকে আগের ম্যাচেই নামিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।
টপ অর্ডারের ব্যাটিং কি দুশ্চিন্তা?
আপাতত টপ অর্ডারের ব্যাটিংটা দুশ্চিন্তার কারণ মনে হতে পারে। মাহমুদউল্লাহ রান করতে পারছে না, মুশফিক নেই। আর সবসময় তো সবাই ফর্মে থাকবে না, আমার মনে হয় মাহমুদউল্লাহ খুব দ্রুত নিজেকে ফিরে পাবে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা টি-টোয়েন্টির মানসিকতায় খেলছি। উইকেটে এসে বড় শট খেলার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওয়ানডেতে মানসিকতাটা একটু অন্যরকম হওয়া উচিত। সিঙ্গেল-ডাবলসের ওপর খেললেই এখানে ম্যাচ বের করে ফেলা যায়। আমার মনে হয়, ব্যাটসম্যানদের এই ব্যাপারটা মাথায় রাখা উচিত। আর এখন দলের ব্যাটিং মোটামুটি স্থিতিশীল, এক দুইটা ম্যাচ কেউ খারাপ খেলতেই পারে। আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাটসম্যানরা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নেবে।
দল নির্বাচনে কোচের ভূমিকা কীভাবে দেখছেন?
আমি আগেই বলেছি,কোচের ভূমিকা আমার কাছে বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। একজন কোচের কাজ খেলোয়াড়দের আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করা। দল নির্বাচন করবেন নির্বাচকেরা, সেখান থেকে একাদশে বড় ভূমিকা থাকবে অধিনায়কের। কিন্তু কোচ সেই কাজটাই করছেন। তার ওপর, তিনি নেটে দেখে খেলোয়াড় বেছে নিচ্ছেন, ঘরোয়া লিগের খেলাগুলো হয়তো সেভাবে দেখছেন না। কিন্তু আপনি একজন খেলোয়াড়কে ম্যাচের সময়ই না দেখলে তাকে বিচার করবেন কীভাবে? নেটের সঙ্গে আসল ম্যাচ কন্ডিশন তো পুরোপুরিই আলাদা। আমি বলব, এখানে কোচের ভূমিকাটা একটু অন্যরকম হওয়া উচিত।