আবারও আত্মঘাতী বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা
স্কোর
টস বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ২৩৬ (তামিম ৫৯, কায়েস ৪৪, নুরুল ৪৪, স্যান্টনার ২/৩৮, হেনরি ২/৫৩)
ঠিক যেন আগের ম্যাচের চিত্রনাট্যটাই ঘুরে ঘুরে এলো নেলসনে। দুর্দান্ত একটা শুরুর পর বড় স্কোরের স্বপ্ন, কিন্তু এরপর একের পর এক আত্মাহুতিতে সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া। একটা সময় ১০২ রান তুলে যখন একটা উইকেটও যায়নি বাংলাদেশের, তারাই শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ধুঁকতে ধুঁকতে করল ২৩৬।
অথচ তামিম-ইমরুল শুরুটা করেছিলেন স্বপ্নের মতোই। শুরুর আড়ষ্ট ভাব কাটিয়ে প্রথম উইকেট জুটিতে ১০২ রানও তুলে ফেলেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের মাঠে এটাই বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি জুটি। তার ওপর গত দুই বছরে যে ১৩ বার শতরানের জুটি হয়েছে, তার শুধু একটি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ- এই তথ্যটাও আশার পালে দিচ্ছিল বাড়তি হাওয়া।
কিন্তু হঠাৎ করেই যেন ব্যাটিং ভুলে গেলেন সবাই। শুরুটা ছিল ইমরুল কায়েসের আউট দিয়ে। নিল ব্রুমকে যদি স্যান্টনারের বলে দুর্দান্ত ক্যাচের কৃতিত্ব দিতে হয়, কায়েসকেও দায় নিতে হবে সমান, ডাউন দ্য উইকেটে এসে টাইমিংইয়ে গড়বড় হয়েই তো হয়েছে সর্বনাশটা।
সেটা কেবল শুরু। সাব্বির খেলছিলেন দারুণ, ১৫ বলে চারটি চারও মেরে ফেলছিলেন। কিন্তু ম্যাট হেনরির বলটা লেগে ঠেলে দিতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। মাহমুদউল্লাহর দুঃস্বপ্নের সিরিজটা যেন কাটছেই না। প্রথম দুই ম্যাচে ১ রানের পর আজ আউট হয়ে গেছেন ৩ রান করেই। টিম সাউদির স্লো বলটা একরকম ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়েছেন!
সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করতে পারতেন তামিম-সাকিব। তামিম উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন, রানও হয়ে গিয়েছিলেন ৫৯। কিন্তু এরপরেই যেন হঠাৎ মাথা ভূত চাপল। নইলে নিশমের বলটা অমনভাবে উড়িয়ে মারতে যাওয়ার তো কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে না! সাকিবও শুরু থেকেই খোলসের মধ্যে ঢুকে ছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে বের হতে না হতেই রান আউট হয়ে গেলেন রঙ্কির থ্রোতে। ডাইভ দিলে হয়তো বেঁচে যেতে পারতেন, দায়টা তাই তাঁকেই নিতে হবে। মোসাদ্দেকও খুব বেশিক্ষণ টিকলেন না, তানভীর হায়দার পর পর দুই ম্যাচে নিজেকে দলে নেওয়ার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলেন। বিনা উইকেটে ১০২ থেকে বাংলাদেশ হয়ে ৭ উইকেটে ১৭৯।
তারপরও বাংলাদেশের রানটা যে শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রান পর্যন্ত পৌছেছে, সেটার মূল কৃতিত্ব নুরুল হাসান সোহানের। মুশফিকের জায়গায় সুযোগ পেয়ে আবারও নিজেকে প্রমাণ করলেন। সাত উইকেট পড়ার পর মাশরাফিকে নিয়ে গড়লেন ৩৩ রানের জুটি। শেষ ওভারে আউট না হলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিও পেয়ে যেতেন। তারপরও ৩৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটা বাংলাদেশের সেরাই বলতে হবে।