• নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ
  • " />

     

    সাকিবের আউটটাই সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে

    সাকিবের আউটটাই সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে    

    ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে হেরে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ। কিন্তু এই তিন ম্যাচে কী ভুল করেছিল বাংলাদেশ? দশের মধ্যে আজ সাকিব-মাশরাফিরা কত পাবেন? ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল নুরুল বা মুস্তাফিজই বা কত পাবেন? সেসবই ব্যবচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল


     

    তামিম ইকবাল

    ৬.৫/১০

    ও ফিফটি করেছে, কিন্তু সেটা অবশ্যই তার আরও বড় ইনিংসে পরিণত করা উচিত ছিল। উইকেটে যখন তার থাকাটা খুবই দরকার ছিল, তখন সে সেটা ছুঁড়ে দিয়ে এসেছে। সেদিক দিয়ে আমি বলব ও হতাশই করেছে।

     

    ইমরুল কায়েস

    ৬.৫/১০

    তার ক্ষেত্রেও তামিমের মতো একই কথা প্রযোজ্য। শুরুটা সে খুবই ভালো করেছিল, কিন্তু উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এসেছে।

     

    সাব্বির রহমান

    ৬/১০

    ও তো শুরুটা খুবই ভালো করেছিল। কিন্তু সবসময় মনে হয় সে খুবই তাড়াহুড়া করছে। অথচ ও আর কিছুক্ষণ থাকলেই খেলার রংটা বদলে যেতে পারত।

     

    মাহমুদউল্লাহ

    ৩/১০

    এই সিরিজে আরও একবার ও নিষ্প্রভ। তবে এবারের আউটের দায়টা তার বেশি, আগের দুই ম্যাচের মতো ভালো বলে উইকেট দিয়ে আসেনি। আমার মনে হয়, ওর আরেকটু সময় নেওয়া উচিত। সে পরীক্ষিত পারফর্মার, নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে সে খুব তাড়াতাড়িই রানে ফিরবে বলে আমার বিশ্বাস। আর এই পর্যায়ে আসলে টেকনিক বা অন্য কোনো কিছু নয়, ওর সমস্যাটা মনসংযোগের বলেই মনে হয়। ও নিজেই জানে, তার সমস্যাটা কী।  আশা করি, সে খুব দ্রুত সেটি কাটিয়ে উঠতে পারবে।

     

    সাকিব আল হাসান

    ব্যাটিং ৪/১০

    বোলিং ৪.৫/১০

    এই উইকেটটাই বাংলাদেশের জন্য আজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশের খেলাটা আসলে ওখানেই হাত থেকে ফসকে গেছে। পর পর দুই ম্যাচে ওর আউটটাই আসলে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। আর ওই পরিস্থিতিতে এমন রান আউটকেও আমি পুরোপুরিই সাকিবের দোষ বলব।

    সাকিব কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের উইকেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ভালো লেংথে বল করছিল। কিন্তু আজকের স্লো উইকেটে সে ঠিক স্বচ্ছন্দে ছিল না। প্রথমে যেমন দুইটি চার খেল, সে ওখানে লেংথ বুঝতে পারেনি।

     

    মোসাদ্দেক হোসেন

    ৪/১০

    আজও সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে গেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, ছয় নম্বরে নিজের ভূমিকাটাই ও ঠিকমতো বুঝতে পারেনি। এজন্য হয়তো একটু দোটানায়ও ছিল।

     

    নুরুল হাসান

    ৮.৫/১০

    এই সিরিজে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আজ ব্যাট হাতে যেভাবে হাল ধরল, সেটা আমি দুর্দান্তই বলব। ওর ব্যাটে আজ খুবই সপ্রতিভ ভাব ছিল, মোটামুটি যা করতে চেয়েছে পেরেছে। আর কিপিংয়েও সে আজও দারুণ ছিল। বিশেষ করে ওর শরীরী ভাষা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

     

    তানভীর হায়দার

     ৩/১০

    আমার কাছে মনে হয়েছে, ওকে এখানে গিনিপিগ বানানো হয়েছে। আমি ওর দোষ দেব না, সে হয়তো তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। আর ব্যাটিংয়ে আমার মনে হয়েছে এই পর্যায়ের জন্য ও এখনো তৈরি নয়।

     

    মাশরাফি বিন মুর্তজা

    ৬/১০

    আমার কাছে মনে হয়েছে, ও আজকে একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। বেশ কিছু বল সে লেগ স্টাম্পে করেছে, অফ দ্য পিচ মুভমেন্টও ভালো ছিল না।

     

    মুস্তাফিজুর রহমান

    ৮/১০

    আজকে সে দুই উইকেট নিয়েছে, নিঃসন্দেহে আমাদের সেরা বোলারও ছিল। কিন্তু তারপরও আমি বলব, ও এখনো পুরোপুরি ফিট নয়। আজ কিন্তু তার বল ঘন্টায় ১৩৩ কিলোমিটারেরও বেশি ওঠেনি। বোঝাই যাচ্ছে, সে এখনো ঠিক পুরো ছন্দ ফিরে পায়নি, চোটও পুরোপুরি সারেনি। তার অস্ত্রগুলোও ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছে না। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ, ওকে টেস্ট দলের জন্য ভাবা হলে অবশ্যই টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া উচিত।

     

    তাসকিন আহমেদ

    ৭/১০

    শুরুর স্পেলটা বেশ ভালো ছিল। প্রথম ম্যাচের পর সে উন্নতি করেছে। কিন্তু ওর সমস্যা, প্রতি বলে মনযোগটা ঠিক থাকে না। এখানে ওর আরও কাজ করতে হবে। 

     

    দল হিসেবে:

    আমরা হয়তো তিন ম্যাচ খারাপ খেলেছি, তবে এর মানে কিন্তু আমাদের ক্রিকেট শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের ছেলেরা কিছুদিন আগেও খুব ভালো খেলেছে। তবে খারাপ খেলার ব্যাপারে আমি কয়েকটা কথা বলব। দল নির্বাচনে গলদ ছিল। আমাদের বিকল্প পরিকল্পনাও সেভাবে ছিল না। টিমের প্রটোকলও ঠিকভাবে মানা হয়নি। কোচ, নির্বাচক বা অধিনায়কের ভূমিকাটাও স্পষ্ট ছিল। এবং এই ব্যাপারগুলো অনেক দিন ধরে চলে আসছে বলেই এসব এখন বেরিয়ে এসেছে।

    তবে এই বছর শেষ। সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে। সেখানে আশা করি দল ঘুরে দাঁড়াবে, নতুন বছরে নতুন বাংলাদেশকে দেখা যাবে।